খাদ্যে ভেজাল

সারা বছর অভিযান পরিচালনা করুন

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খাদ্যে ভেজাল এখন নৈমিত্ত্যিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেজাল খাদ্য খেয়ে মানবদেহে বাসা বাঁধছে যত সব অনিরাময়যোগ্য ব্যাধির, মানুষ অকালে মারা যাচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় খাদ্যে ভেজাল মেশানোর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতু্যদন্ড করার আহ্বান জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম সমাজকল্যাণ সংস্থা। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে 'খাদ্যে ভেজালকারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা' শিরোনামে এ মানববন্ধন হয়। এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশের হাজারও সমস্যার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো খাদ্যে ভেজাল। খাদ্যে ভেজাল আজ আমাদের জাতীয় জীবনে এক মহাদুর্যোগের নাম, আতঙ্কের নাম। অথচ মানুষের সুস্বাস্থ্য ও বেঁচে থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার অতি জরুরি। ফলে বাংলার মাটি থেকে খাদ্যে জীবনসংহারী ভেজাল মেশায় যারা, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। এটা সত্য, বর্তমানে খাদ্যে ভেজাল অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। ফলে বাংলাদেশের মানুষকে কিডনি রোগ, ক্যান্সারসহ নানাবিধ মরণব্যাধি থেকে রক্ষা করতে হলে খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। দেশে 'খাদ্য নিরাপত্তা' একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উৎপাদন করেই হোক কিংবা আমদানি করেই হোক, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে দিনে দিনে জনসাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হবে। মনে রাখতে হবে, 'খাদ্য নিরাপত্তা' এ দেশের জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। সেই সাংবিধানিক অধিকার সামনে রেখেই 'খাদ্য নিরাপত্তা' নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি, উন্নত বিশ্বের 'খাদ্য নিরাপত্তা' এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তাও খতিয়ে দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। দেশের জনগণকে নিরাপদ খাদ্য-দ্রব্য প্রদান নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। খাদ্য নিরাপত্তা আইনের মূল ভিত্তিগুলো হলো- খাদ্যে ভেজাল না মিশিয়ে খাদ্য সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে, খাদ্য ভেজাল মেশানোর কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শান্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আশার কথা ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালাচ্ছে জরিমানা করছে অসাধু প্রতিষ্ঠানগুলোকে, জেলও হচ্ছে কারও কারও। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। ভেজাল খাদ্যপণ্য জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে জাতীয় সক্ষমতার ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়বে। এটা কোনোক্রমেই হতে দেয়া যায় না। ভেজালপণ্য যেমন ভোক্তাদের মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেয় তেমনি সুষ্ঠু জাতি গঠনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আমরা মনে করি, বছরব্যাপী নিয়মিতভাবে এই অভিযান পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করে অসাধু ব্যবসায়ী ও ভেজাল ভোগ্যপণ্য প্রস্তুত ও বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। দেশের প্রত্যেক অঞ্চলে যেন খাদ্য ভেজাল ছাড়া পৌঁছে সেটা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। রাষ্ট্রের জনগণের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি হলো খাদ্য, সুতরাং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন ও তৎপর হতে হবে।