হ্যালো লিডার হ্যালো মিনিস্টার

শহীদদের আত্মত্যাগের দায় শোধ হবে কবে?

শহীদরা যে বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সম্পদের সুষম বণ্টন করতে হবে। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সৎ মানুষকে পুরস্কৃত করতে হবে। রাজনীতিকে করতে হবে পূর্ণ কলুষমুক্ত। সেই কলুষমুক্তির প্রথম ধাপ হিসেবে দেশের সব দলকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে দিতে হবে তার প্রাপ্য মর্যাদা। এ ক্ষেত্রে যারা কুণ্ঠাবোধ করবেন ইতিহাসের কাছে তারাই দায়বদ্ধ থাকবেন। একই সঙ্গে রাজনীতিতে পূর্ণ সততা, স্বচ্ছতা এবং সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। মীমাংসিত সত্যকে রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সন্দেহ বা বিভ্রান্তির নিক্তিতে না ফেলে সততার সঙ্গে সত্য স্বীকার ও মেনে নেয়ার সাহস ও সক্ষমতা আজ বড় বেশি প্রয়োজন।

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সোহেল হায়দার চৌধুরী
মাত্র কদিন পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৪ ডিসেম্বর বা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এক কালো দিন। আর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস অনিন্দ্য আনন্দের দিন। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে দিন দুটির মাহাত্ম্য দুই রকম। একটি বেদনার চাদরে মোড়ানো, অন্যটি আনন্দের ফল্গুধারায় একাত্ম হওয়ার দিন। ১৯৭১ সালে বিজয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরিকল্পনায় তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস সদস্যরা বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে। সংগ্রামী বাঙালি যখন বিজয় আনন্দের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন এ ধরনের আকস্মিক ও পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা জাতিকে স্তব্ধ করে দেয়। পরাজিত বাহিনীর নীলনকশা অনুযায়ী সেদিন শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মেধাবী পেশাজীবীদের বাড়ি বা অফিস থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। পরে দেশের বিভিন্নস্থানে তাদের বীভৎস লাশ পাওয়া যায়। কারও লাশ আবার খুঁজেও পাওয়া যায়নি। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর এলে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে যথেষ্ট সোচ্চার হয়ে উঠি। পুরো জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করি। বধ্যভূমি বা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি। কালো ব্যাজ ধারণ করে সভা-সমিতি, সেমিনার বা আলোচনা সভায় অংশ নিই। টেলিভিশন ক্যামেরা দেখলে একে-অন্যকে ধাক্কা দিয়ে নিজের চেহারা দেখানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করি। স্থিরচিত্রগ্রাহক দেখলেও অনুরূপ করি, পত্রিকায় নিজের ছবিটা প্রকাশের আশায়। প্রচার মাধ্যমগুলোতে দিবসটির নানা সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার বা প্রকাশ হয়। তারপর আমরা ভুলে যাই সব। বছরব্যাপী আমাদের হৃদয়ে পূর্বসূরিদের এই ত্যাগের কথা ভাস্বর থাকে না। আমরা এতটাই বিস্মৃতিপ্রবণ যে, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি বা যাদের অবদানে আমরা আজ নিশ্চিন্ত জীবনের অধিকারী তাদের সহজেই ভুলে যাই। আর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠি। বাড়ি-গাড়িতে, মাথায়, বুকে-পিঠে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে বা হাতে-মুখে পতাকাসদৃশ্য উল্কি এঁকে আমরা বিজয়ানন্দে একাট্টা হয়ে যাই। এ বিজয়ের পেছনে কত ত্যাগ, কত বেদনা বা কত রক্ত গেছে তার হিসাব আমরা মুখে মুখে করলেও অনুভূতিতে তার বিস্তার ঘটাতে পারি না। সভা-সেমিনারে যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাধীনতা বা বিজয়ের গৌরবগাথাকে অমর্যাদা করার অপচেষ্টা বিস্তার লাভ করেছিল একসময়। রাজনীতি বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলেও ভিন্নমতের কারণে আমাদের কেউ কেউ অরাজনৈতিক শক্তিকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করেছে। যার সূত্র ধরে বিভেদ-বিভ্রান্তির পরিমাণ বেড়েছে। আমাদের মধ্যে একটি অংশ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চা করতে গিয়ে ইতিহাসকে বিতর্কিত ও মিথ্যাচারে পরিণত করার লজ্জাজনক কাজটি করেছে। এর ধারাবাহিকতায় আমাদের অনুভবে ইতিহাসের গৌরবগাথা সংকুচিত হয়েছে। আমরা ক্রমাগত জনগণকে বিস্মৃতির পাঠ দেয়ার চেষ্টা করেছি মিথ্যাচারে ভরা উস্কানি দিয়ে। এর পেছনে রাজনৈতিক বিভেদ-বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক অপশক্তির নীলনকশা কাজ করেছে '৭১ সালের মতো। কে না জানে, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে জাতিকে উল্টোপথে যাওয়ার সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়েছিল খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান। সে সময় ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে, চিহ্নিত রাজাকার তথা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে, ধর্মীয় উগ্রবাদকে সহায়তা করে এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তিকে কোণঠাসা করে জাতির মননে ইতিহাস বিকৃতির যে বীজ বুনে দেয়া হয়েছিল তা বাঙালিকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এ দেশটিকে বিপরীত বা পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যাওয়ার প্রথম কাজটি শুরু করেছিলেন মোশতাক-জিয়া গং। তাদের জন্য মাঠ তৈরি করে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র ও সঙ্গে থাকা দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা শক্তি। এর ধারাবাহিকতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চরম বিস্তারে সহায়তা করে, জঙ্গিগোষ্ঠীকে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিয়ে, জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দিয়ে এবং শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শেষ পেরেকটি ঠুকলেন। এরপরের ইতিহাস অন্যরকম। ইতিহাস সময়মতো কথা বলে এমনটিই দেখতে পেল বাংলাদেশের মানুষ। বঙ্গবন্ধুর খুনি, যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রায় সবাই যার যার অপকর্মের শাস্তি পেল। রাজনৈতিকভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল চেতনা প্রাণ ফিরে পেল অদম্য সাহসী নেতা শেখ হাসিনার হাত ধরে। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা সব ভয়ভীতি তুচ্ছ করে উল্টোপথে চলা বাংলাদেশকে সঠিক পথে নিয়ে আসার সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিয়ে আজ সফল হয়েছেন। তার হাত ধরে আসা এই সাফল্যের অংশীদার বাংলাদেশের ১৭ কোটি জনগণ। বাংলাদেশের মূল চেতনায় দেশকে ফিরিয়ে এনে জনগণকে তার সঙ্গে একাত্ম করার কঠিন কাজটি করে শেখ হাসিনা যেমন দায়মুক্ত করেছেন জাতিকে, তেমনি মানুষকে সত্যাসত্য জানার সুযোগ করে দিয়েছেন। ফল অনেকটা ইতিবাচক হলেও সংকটমুক্তি হয়েছে সেটা বলা যাবে না। এর জন্য দায়ী জনমানসে বিকশিত মিথ্যাচারপূর্ণ তথ্য, রাজনৈতিক বিভ্রান্তি, একশ্রেণির রাজনীতিবিদদের স্বার্থান্বেষী অপচিন্তা ও ইতিহাস বিকৃতির ধারা জিইয়ে রাখার অপচেষ্টা। এই অপচিন্তা ও অপচেষ্টা এতটাই বিস্তৃত যে, সংকট শুধু বেড়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আজ ক্ষমতায় থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে এমনটি বলা যাবে না। সরকারের ক্রমাগত পদক্ষেপে আচার বা জানার ক্ষেত্রে মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতির ধারা ক্ষীণ হয়েছে। কিন্তু মানা বা ধারণ করে পালনের ক্ষেত্রে বা জীবনাচরণে আমরা এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সর্বাগ্রে ঠাঁই দিতে পেরেছি এটা হলফ করে বলতে পারব না। এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। অমুক্তিযোদ্ধা অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা সেজে রাষ্ট্রের সব সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। এখনো রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা। এই পরিস্থিতিতে সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশুদ্ধকরণের কাজটি করতে হবে। যারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তাদের যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করার কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। দেশের বিভিন্নস্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজটি আরও দ্রম্নততার সঙ্গে করা দরকার। বধ্যভূমিগুলোর সংরক্ষণ যথাযথভাবে হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে আমাদের এই গৌরবের ইতিহাস যাতে কোনোভাবেই বিতর্কিত বা বৃন্তচু্যত না হয়। এই ইতিহাসই বাঙালি জাতিকে বিশ্বদরবারে চিরস্মরণীয় ও গৌরবময় করে রাখবে। সেই সঙ্গে এও মনে রাখতে হবে পরাজিত শক্তি চুপসে আছে ঘাপটি মেরে। প্রকাশ্যে তাদের কর্মকান্ড সরকারের কঠোরতার কারণে দেখা না গেলেও সুযোগ পেলেই তারা তাদের পূর্বসুরিদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মেতে উঠবে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রংবদলকারী পরাজিত শক্তি এখনো কমবেশি সক্রিয় রয়েছে। তারা আবার প্রভাবশালী কারও কারও সহায়তা পাচ্ছেন বা স্নেহধন্য হয়ে তাদের কাজটি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখাও একটি বড় কাজ। সময়ের নিজস্ব গতিতে প্রতিবছর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস আমাদের কাছে ফিরে ফিরে আসে এবং আসবে। কিন্তু এ দিবস দুটিকে শুধু প্রচারণার জন্য বা লোক দেখানোর দিবস হিসেবে ব্যবহার না করে বছরব্যাপী এর মাহাত্ম্য নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের শহীদরা আমাদের ওপর যে মহান দায়িত্ব রেখে গেছে সেটি পালন করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রকৃত অর্থে ধারণ করে প্রতি মুহূর্তের পথ চলতে হবে। আমাদের দিন শুরু হতে হবে শহীদদের কথা ভেবে, দিনান্তেও আত্মত্যাগকারী এই বীরদের স্মরণ করা নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের চলনে-বলনে, চেতনা-বিশ্বাসে শহীদদের আত্মত্যাগের কীর্তিগাথার বিচ্ছুরণ থাকতে হবে। তবেই শহীদদের আত্মত্যাগের ঋণ শোধের পথে আমরা যেতে পারব। শহীদরা যে বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সম্পদের সুষম বণ্টন করতে হবে। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সৎ মানুষকে পুরস্কৃত করতে হবে। রাজনীতিকে করতে হবে পূর্ণ কলুষমুক্ত। সেই কলুষমুক্তির প্রথম ধাপ হিসেবে দেশের সব দলকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে দিতে হবে তার প্রাপ্য মর্যাদা। এ ক্ষেত্রে যারা কুণ্ঠাবোধ করবেন ইতিহাসের কাছে তারাই দায়বদ্ধ থাকবেন। একই সঙ্গে রাজনীতিতে পূর্ণ সততা, স্বচ্ছতা এবং সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। মীমাংসিত সত্যকে রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সন্দেহ বা বিভ্রান্তির নিক্তিতে না ফেলে সততার সঙ্গে সত্য স্বীকার ও মেনে নেয়ার সাহস ও সক্ষমতা আজ বড় বেশি প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মকে আজ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে হবে। আসুন না আজ আমরা নিজের মুখোমুখি হয়ে জানতে চাই, শহীদ বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ বা সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের প্রতি কি জাতি হিসেবে পূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। এই প্রশ্ন আজ নিজের বিবেকের কাছে করা খুব দরকার। \হ সোহেল হায়দার চৌধুরী: বিশেষ সংবাদদাতা, দৈনিক যায়যায়দিন, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)