চালের বাজার চড়া

যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে মিলার পর্যায়ে চালের দাম বাড়ানো বহুল আলোচিত বিষয়। অথচ বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এমন ঘটনা ঘটলে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষের ওপর। এর আগেও সামনে এসেছে বিভিন্ন সময়ে দাম বৃদ্ধির পেছনে মিলারদের কারসাজির অভিযোগ। অথচ এই ধরনের পরিস্থিতিতে মিলার পর্যায়ে দাম বাড়ানোর ফলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়ে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল যে, বেশ কদিন ধরেই ধানের দাম কমলেও চালের বাজার আগের মতোই চড়া রয়েছে। বিশেষ করে চিকন চালের দর কেজিপ্রতি ৬-১০ টাকা বেড়েছে। আর স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। জানা গেছে, ধানের জোগান স্বাভাবিক থাকলেও চালের বাজার চড়া হওয়ার নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে বাজার সংশ্লিষ্ট ও গোয়েন্দারা বিশেষ সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছেন। উলেস্নখ্য যে, গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, চক্রটি হচ্ছে তিন মিল মালিকের সিন্ডিকেট। তথ্য মতে, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ধানের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরে ধানের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে তারাই চালের দাম বাড়িয়েছে। কেবল ব্যাপক চাহিদা থাকা মিনিকেট (চিকন চাল) চালের ক্ষেত্রে তারা এ কৌশল অবলম্বন করেছে। আর এ সুযোগে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়ে দিয়ে বাজার অস্থিতিশীল করেছেন। আমরা বলতে চাই- এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই বিষয়টি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। কেননা, চালের বাজার চড়া থাকলে সাধারণ মানুষের জীবন কতটা বিপর্যস্ত হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মিল মালিকের কারসাজিতে সাধারণ মানুষ দিশাহারা হবে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা বলতে চাই, যখন এই বিষয়টি সামনে আসছে যে, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে চালের দাম বৃদ্ধির জন্য তিন মিল মালিকের সিন্ডিকেটকে দায়ী করে বলা হয়েছে, বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বল মনিটরিংয়ের সুযোগ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তারা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। ফলে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বল মনিটরিং কেন- এই বিষয়টি সামনে রেখে সংকট চিহ্নিত করে তা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলে তা কতটা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা চাই, মনিটরিং নিশ্চিত করাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশে উঠে এসেছে- চালের দাম মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার জন্য সরকার গৃহীত বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলোকে গতিশীল করতে হবে। দাম নিয়ন্ত্রণে মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনোভাবেই যেন সিন্ডিকেট গঠন না করতে পারেন, সেদিকে নিরীক্ষণ ও নজরদারি বাড়াতে হবে। এ ছাড়া চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন কমিটির কার্যক্রম ও মনিটরিং গতিশীল করার সুপারিশ করা হয়েছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিন। চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে সীমিত ও দরিদ্র আয়ের মানুষের কী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা সহজেই অনুমান করা যায়। এ ছাড়া কোনো সিন্ডিকেট বা অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বাজার অস্থিতিশীল হবে এটাও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।