ভুয়া চিকিৎসক

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা খাতে রীতিমতো নৈরাজ্য বিরাজ করছে। একদিকে মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসা ও ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়েছে। দেশের হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে দালালদের দৌরাত্ম্যও। এর ফলে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে, রোগীর মৃতু্য হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গাওখালী বাজারে অভিযান চালিয়ে চার ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সুব্রত মজুমদার, আবু হাসান, মোস্তাকিন বিলস্নাহ ও মো. নিয়াজ মাহবুব। পরে তাদের তিনজনকে ছয় মাসের কারাদন্ড এবং অন্য একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া একটি ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আরও দুঃখজনক সংবাদ হচ্ছে- ঢাকা শহরের প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। যা রোগীর জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি বাজারে আরও বেড়েছে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম। এই নিয়ে কয়েকদফা ওষুধের দাম বাড়ল, হলো সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। এ ছাড়া ফার্মেসিভেদেও দামের মূল্য পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণও রাখা হয়- যা রীতিমতো অন্যায়। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প প্রসার লাভ ঘটছে, এই শিল্পের বিকাশ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভুল চিকিৎসা ও ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য এবং যথাসময়ে চিকিৎসাসেবা না পাওয়া দুঃখজনক। আশার কথা, পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে দেশ। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৫১টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। দেশের ৯৮ শতাংশ ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে এসব দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ওষুধশিল্পের স্থানীয় বাজারের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার। দেশে এখন ২৫৭টি নিবন্ধিত ওষুধ কোম্পানি আছে। এর মধ্যে ১৫০টি সক্রিয়ভাবে তাদের কাজ করে যাচ্ছে। এটা দেশের জন্য ইতিবাচক দিক। এই ইতিবাচক সংবাদের মধ্যে যেমন ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার হচ্ছে তেমনি বাজারে ২৩ ধরনের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। এভাবে লাগামহীনভাবে যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে তা হলে সাধারণ রোগী, যারা স্বল্প আয়ের এবং প্রবীণ অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা মনে করি সারা দেশেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভুয়া চিকিৎসক। এর আগেও বেশ কয়েকজন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। এরপরও ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যায়নি। এরা দেশের চিকিৎসা খাতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের কারণে অনেক রোগীর অকাল মৃতু্য হচ্ছে। এদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে সারা দেশের অভিযান পরিচালনা করতে হবে। এরা বড় বড় সাইনবোর্ড লাগিয়ে অবাধে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ হাসপাতাল ক্লিনিকেও চাকরি করছে। সরকারের সফল ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে এদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে। এ ব্যাপারে আমরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এদের হাত থেকে সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে এর কোনো বিকল্প নেই।