সব বন্দরে স্ক্যানার

রাজস্ব ফাঁকি রোধ হোক

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ঘটলে তা নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই এমন পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, আমদানি-রফতানির মাধ্যমে সংঘটিত রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদারে দেশের সব নৌবন্দর, বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দরে স্ক্যানার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে ২০২০ সালের মধ্যে এনবিআর ১০০ স্ক্যানার কিনবে, যা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বন্দরে বসানো হবে এমনটিও জানা গেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে সুষ্ঠু তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে যেন রাজস্ব ফাঁকি রোধ হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। উলেস্নখ্য, রাজস্ব প্রশাসন মনে করছে, সব বন্দরে স্ক্যানার বসানো হলে রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধের পাশাপাশি কন্টেইনারে কোনো বিস্ফোরক, অস্ত্র বা নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টিকারী কোনো পণ্য আছে কিনা, তা যেমন পুরোটা যাচাই করা সম্ভব হবে। তেমনি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ কোনো পণ্য দেশে প্রবেশ করতে পারবে না। পাশাপাশি চোরাচালানও নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে যদি কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা যায় তবে সুফল আসবে বলেই প্রতীয়মান হয়। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই- রাজস্ব ঝুঁকি ও নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনবিআরের কাস্টমস মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম সচিব মো. গিয়াস কামাল বলেছেন, রাজস্ব ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধে দেশের সব নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরে স্ক্যানার নেওয়া হয়েছে এবং এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। যে প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ১০০ স্ক্যানার কেনা হবে, যা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বন্দরে বসানো হবে। আমরা বলতে চাই, প্রকল্প অনুযায়ী সঠিকভাবে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পণ্য চালানবাহী কন্টেইনার পরীক্ষার জন্য ৭টি স্ক্যানার কেনা হবে। বন্দরের যেসব গেটে এখন স্ক্যানার নেই, সেসব গেটে এগুলো বসানো হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ১২টি গেটের মধ্যে বর্তমানে ৫টিতে এখন স্ক্যানার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, স্ক্যানার হলো এমন একটি যন্ত্র, যার ভেতর দিয়ে কোনো কন্টেইনার বা পণ্যের ব্যাগ প্রবেশ করালে তার ভেতরে কোন ধরনের পণ্য রয়েছে তা কম্পিউটারে দেখা যায়। বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্য স্ক্যানিং করে খালাস করা হলে কোনো আমদানিকারক এক পণ্য এনে অন্য পণ্য ঘোষণা দিয়ে বিদেশে অর্থপাচার করতে পারবেন না। আবার বেশি দামের পণ্য এনে কম দামি পণ্য হিসেবে বা উচ্চ শুল্ককরের পণ্য আমদানি করে বিনা শুল্ক বা কম শুল্কের পণ্য হিসেবে ছাড় করাতে পারবেন না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, স্ক্যানার স্থাপন এবং এর সুফল পেতে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া জরুরি, বিভিন্ন সময়েই রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। ফলে রাজস্ব ফাঁকি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিকল্প থাকতে পারে না। এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে, স্ক্যানার বসালে নানারকম অপরাধ কমবে। যার ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে। এ ছাড়া জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন পণ্য বা বিস্ফোরকজাতীয় দ্রব্য আমদানি করতে পারবে না। পাশাপাশি যাত্রী কিংবা যাত্রীর লাগেজ শতভাগ স্ক্যানিং হলে চোরাচালানও নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়ে আসবে। সঙ্গত কারণেই প্রকল্পর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সর্বাত্মক পদক্ষেপ জারি থাকুক এমনটি কাম্য।