পাঠক মত

কে বলেছে সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সেই ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক, শিক্ষিকা, মুরব্বিদের কাছে ছাড়াও বিভিন্ন বই-পুস্তকে পড়ে আসছি যে সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। বিখ্যাত উক্তিটির জনক ইংরেজি কবি ও কবিতার জনক জিওফ্রে চসার। উক্তিটির যথার্থতা বহির্বিশ্বের যে কোনো দেশে থাকলেও বাংলাদেশে যে এর বিপরীত অবস্থান বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করব, সময় ও স্রোত কারও কারও জন্য অপেক্ষা করে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনার্স কোর্সের জন্য নির্ধারিত সময় চার বছর। মাস্টার্সের জন্য এক বছর, কোনো কোনো জায়গায় দেড় বছর। কিন্তু এই চার বছরের অনার্স কোর্সের জন্য সময় লাগছে পাঁচ, ছয় এমনকি সাত বছরও। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কতক ডিপার্টমেন্টে ৬ মাস থেকে ৩ বছর (১১ নভেম্বর, ২০১৯ আমাদের প্রতিদিন) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ মাস থেকে ২ বছর (২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, প্রথম আলো) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ মাস থেকে ২ বছর (১৯ নভেম্বর ২০১৯, ঢাকা ট্রিবিউন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬ মাস থেকে ১ বছর। এ ছাড়া কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্বিবদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত সেশন জট। যা শিক্ষার্থীদের অতিষ্ঠ করছে। কথা হলো ৪ বছরের অনার্স কোর্স ৪ বছরে শেষ হলেও যেমন সার্টিফিকেট, একই কোর্স শেষ করতে যদি ৬ বা ৭ বছরও লাগে তবুও সার্টিফিকেটের মান একই। মাঝ থেকে মেধাবীদের লম্বা সময় হারিয়ে যাচ্ছে হাওয়ায় উড়ে। এখন ৪ বছরে যারা অনার্স শেষ করতে পারল তাদের জন্য হয়তো জিওফ্রে চসারের উক্তি সঠিক, কিন্তু যাদের ৪ বছরের জায়গায় ৬ বা ৭ বছর লাগছে তাদের তো সবকিছু প্রায় থমকে গেছে। চাকরির আবেদন করতে না পারা, কাজে যোগ না দিয়ে সংসারের হাল ধরতে না পারা, মায়ের কানের দুল, গলার হার বিক্রি করে বিসর্জন দেয়া, বাবার কোমর ও ঘাড়ে ব্যথা বাড়ানো, ছোট ভাই ও বোনের শখ পূরণে ব্যর্থতা সবই যখন থেমে যায় তখন তো বলতেই পারি যে, 'সময় ও স্রোত কারও কারও জন্য অপেক্ষা করে'। যদি কেউ উক্ত প্রমাণে অযৌক্তিক কিছু পেয়ে থাকেন তবে তাদের প্রশ্ন করি, শিক্ষার্থীদের মাঝের ৬ মাস থেকে ৩ বছর সময় গেল কোথায়? কে বা কারা এই সময় কেড়ে নিল? জবাব সবাই জানে শুধু মুখ খুলে বলাটাই কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের যদি সময়জ্ঞান বা সময়ানুবর্তিতা না থাকে তবে তাদের থেকে জ্ঞানাগ্রহীরা কি শিখবে? মূলত জাতির উন্নতি নির্ভর করে তাদের সময়কে কাজে লাগানোর ওপর, যারা যত সময়কে কাজে লাগাবে, উৎপাদন তত বাড়বে। উন্নত দেশ, জাতি তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সময়, জ্ঞান আহরণ করে আমাদের অমূল্য সম্পদ সময়গুলোকে কাজে লাগাতে হবে। আব্দুস সালাম শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর