কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে

আবারও সড়ক দুঘর্টনায় মৃত্যু

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সড়ক মহাসড়কে দুঘর্টনা থেমে নেই। প্রাণ ঝরছে, বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, নরসিংদী, নওগঁা, কুমিল্লা, গাজীপুর, সাতক্ষীরা, মুন্সীগঞ্জ, শেরপুর, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জে সড়ক দুঘর্টনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। আর এসব ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩৪ জন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে এসব দুঘর্টনা ঘটে। আমরা বলতে চাই, যখন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে সড়ক দুঘর্টনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হওয়ার মতো ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে, তখন তা কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করেÑ আমলে নেয়া অপরিহাযর্। প্রতিনিয়তই সড়কে দুঘর্টনা ঘটছে এবং একের পর এক ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণÑফলে এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কতবর্্য হওয়া দরকার, যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। প্রসঙ্গত বলা দরকার, ৯ জেলায় সড়ক দুঘর্টনায় ১৫ জন চলে গেল না ফেরার দেশেÑআর এসব দুঘর্টনা ঘটেছে বাস-মাইক্রোবাসের সংঘষর্, মোটরসাইকেলে ট্রাকের ধাক্কা, দুই ট্রাকের সংঘষর্, ট্রাকচাপা, ট্রাক খাদে পড়া, কাভাডর্ভ্যান ও লং ভেহিক্যালের (লম্বা লরি) মুখোমুখি সংঘষর্, কাভাডর্ভ্যান উল্টে, বাসের চাপায়। তাই আমরা মনে করি, সড়ক দুঘর্টনা কেন রোধ হচ্ছে না, কেন বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাÑএসব বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি। বলাই বাহুল্য যে, বিভিন্ন সময়েই দেশের নানা স্থানে ঘটে যাওয়া সড়ক দুঘর্টনাগুলো আমলে নিলে, ঘাতক চাকার গতির কাছে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে এমন বিষয়ই স্পষ্ট হয়। অথচ সড়ক দুঘর্টনা রোধে নানা সময়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগের কথা শোনা গেছে। কিছুদিন আগে শিক্ষাথীর্রা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনও করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সড়ক দুঘর্টনা থেমে নেই। যা সন্দেহাতীতভাবেই অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। আমরা বলতে চাই, সড়ক পথের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে এবং দুঘর্টনা রোধে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ঘটাতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। মনে রাখতে হবে যে, আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হয় নাÑএমন অভিযোগ আছে নানা ক্ষেত্রেই। ফলে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অধিকাংশ দুঘর্টনার ক্ষেত্রে কোনো মামলা হয় না। আবার মামলা হলেও নিষ্পত্তি হতে দীঘর্ সময় লাগে। ফলে ভুক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েন। অন্যদিকে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না থাকায় অপরাধীরা অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে কোনো শঙ্কাবোধও করেন না, এমন বিষয়ও সামনে এসেছে। সঙ্গত কারণেই সাবির্ক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই মনে হয়। আমরা মনে করি, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বাথের্ সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের আরও উদ্যোগী হতে হবে। যে কোনো ধরনের দুঘর্টনা এড়াতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ, চালকদের দক্ষতা বাড়াতে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণসহ দুঘর্র্টনা রোধে করণীয় নিধার্রণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। কেননা এইভাবে একের পর এক সড়ক দুঘর্র্টনাকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে থাকবে এমনটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, সড়ক দুঘর্র্টনার পরিপ্রেক্ষিতে যেমন দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। তেমনি এসব দুঘর্টনার জন্য অবৈধ চালক ও চালকের অসতকর্তা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও সড়ক-মহাসড়কের ভঙ্গুর অবস্থাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো পযের্বক্ষণ করে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে জনগণকেও যাতায়াত পথে এবং রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। এটাও মনে রাখা দরকার, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি কোনো কাজে আসবে না। ফলে পরিকল্পিত ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দুঘর্টনা রোধ হোক এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।