নিয়ম ভেঙে কোরবানির পশুর হাট

দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাট বসার রেওয়াজ দীঘির্দনের। সারাদেশেই কোরবানির পশুর হাট বসে। এতে ক্রেতারা নিদির্ষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে কোরবানির পশু ক্রয় করতে পারেন। কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট বসে রাজধানীতেও। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট বসাতে নিয়ম-কানুনের ধার ধারেন না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, রাজধানীতে নিয়ম ভেঙে নিধাির্রত সময়ের আগেই নগরীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ হাটে এরই মধ্যে বঁাশের খুঁটি, গেট ও তোরণ নিমাের্ণর কাজ শেষ হয়েছে। কোনো কোনো হাটে ইতিমধ্যে বেশকিছু গরু এনে জড়ো করেছেন বেপারীরা। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ঈদের ৬ দিন আগে প্রস্তুতি শুরু করার কথা। ঈদের দিনসহ মোট ৪ দিনের জন্য ১৫টি হাটের ইজারা দিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বাকি ৮টি হাটের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া না হলেও সেখানে গরু বেচাকেনার প্রস্তুতির পবর্ শেষ পযাের্য়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দাবি, হাটে কাজ করার জন্য এখনো ইজারাদার অনুমোদন দেয়া হয়নি। তথ্য অনুযায়ী, ১৯ আগস্ট থেকে ঈদের দিন পযর্ন্ত অস্থায়ী হাটগুলো বসবে। আর এর দুই দিন আগে অথার্ৎ ১৭ আগস্ট থেকে প্রস্তুতি শুরু করবে। এমন শতের্ই অস্থায়ী পশুর হাটগুলো বসানোর অনুমতি দিয়ে বলা হয়েছে, শতর্ না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা প্রতিবছরই কোরবানির পশুর হাটের তদারকি করেন। এরা কোনো নিয়মের ধার ধারেন না। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি, গণমাধ্যমের খবরগুলো এরই সাক্ষ্যবহ। অথচ নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে এমন দৃষ্টান্ত নেই। তা ছাড়া প্রতি বছর আইন ভঙ্গের কথা জানা গেলেও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা জানা যায় না। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের অপরাগতাই যে কোরবানির পশুর হাটসংক্রান্ত অনিয়মের অবসান ঘটাতে ব্যথর্ হচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দু’দিনে পশুর হাট প্রস্তুত সম্ভব হয় না বলেই নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়। কিন্তু নিয়ম না মেনে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকে হাট বসানোর প্রস্তুতি কেন নেয়া হবেÑ এমন প্রশ্নের উত্তর মেলে না। শুধু সময়ের আগে হাট স্থাপনই নয়, কোনো কোনো স্থানে হাটের প্রস্তুতি নিধাির্রত সীমানা ছাড়িয়ে গেছে বলে অভিযোগ আছে। অনেক জায়গায় সড়ক-মহাসড়কের পাশে খুঁটি লাগানো হচ্ছে। কাউন্টার স্থাপন, প্রচারণা, বিদ্যুৎ সংযোগসহ অন্যান্য কাজও শেষ পযাের্য়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারিরা কোরবানির পশু নিয়ে আসা শুরু করেছেন। সিটি করপোরেশনের অনুমোদন না থাকা সত্তে¡ও নিধাির্রত সময়ের আগেই হাটের প্রস্তুতি নেয়া হবে কেন? প্রশ্ন হলো, এসব দেখার কাজে নিয়োজিত সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা তাহলে কি করেন? আগামী ২২ আগস্ট বুধবার অনুষ্ঠিত মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধমীর্য় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন ধমর্প্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু জবাই করবেন। নগরবাসীর কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রতি বছরই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী হাট বসানো হয়। এসব হাট বসানোর ক্ষেত্রে নিয়মনীতি মানা হয় না বলেই ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই নগরীতে সীমাহীন যানজট তৈরি হয়। জনসাধারণকে পড়তে হয় সীমাহীন দুভোের্গ। আমরা মনে করি, জনসাধারণের দুভোর্গ কমাতে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার ইজারাদারদের নিয়মনীতি মানাতে বাধ্য করা। সবোর্পরি বলতে চাই, প্রতি বছর কোরবানির ঈদে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও তা রোধে সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। যত্রতত্র পশুর হাট বসিয়ে জনগণের ভোগান্তিসহ পরিবেশ নষ্ট করা হবে, তা কিছুতেই প্রত্যাশিত হতে পারে না। আমরা মনে করি, সাবির্ক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টদেরই এ ব্যাপারে কাযর্কর উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, প্রতি বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কারা কাম্য হতে পারে না।