প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে ধস

যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশকে অগ্রগতির ধারায় এগিয়ে নিতে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ ভূমিকা পালন করে। সঙ্গত কারণেই রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো আমলে নেয়া এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধির বিষয়টিকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, যদি কোনো পণ্যের রপ্তানিতে ধস নামে তবে তার কারণ নিণর্য় সাপেক্ষে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, আন্তজাির্তক বাজারে কঁাচামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গত অথবর্ছরে প্লস্টিক পণ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। এর আগের বছরের চেয়ে ২০১৭-১৮ অথর্বছরে ১৬ শতাংশ কম রপ্তানি আয় এসেছে এ খাত থেকে। রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কঁাচামাল ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে এই পতনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, যখন কঁাচামাল ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিতে বড় ধরনের পতনের ঘটনা ঘটেছে এমন বিষয় জানা যাচ্ছে, তখন সংশ্লিষ্টদের এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সৃষ্ট পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নিধার্রণ এবং সেই মোতাবেক সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলেই আমরা মনে করি। এ ছাড়া আমলে নেয়া দরকার, রপ্তানি আয় কমার বিষয়ে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ২০১৬-১৭ অথর্বছরে ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। আর এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪৮ মিলিয়ন ডলার বা ৩৩.৪৬ শতাংশ। কিন্তু ২০১৭-১৮ অথর্বছরে রপ্তানি এর আগের বছরের চাইতে কম হয়েছে। আর এর অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি বলছেন যে, ‘চায়না বাংলাদেশ থেকে প্লাস্টিকের পেট স্ক্র্যাপ আমদানি করে। তবে গত অথর্বছরে তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি বন্ধ করে দেয়। কারণ চায়না আরও উন্নত মানের প্লাস্টিক বজের্্যর দিকে ঝঁুকছে। কিন্তু আমাদের অনেক উৎপাদকের সেই সেই ধরনের প্রযুক্তি নেই।’ আমরা এই বিষয়টিকে সামনে রেখে বলতে চাই, প্লাস্টিক রপ্তানির সাবির্ক বিষয়গুলো যেমন খতিয়ে দেখতে হবে, তেমনি প্রযুক্তির বিষয়টিকেও আমলে নিতে হবে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এমনটি কাম্য। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অথর্বছরে এ খাতে রপ্তানি আয় এসেছে ৭৭৫ কোটি ৫৩ লাখ (৯৮.৪৮ মিলিয়ন ডলার)। এর আগের অথর্বছরে এসেছিল ৯২০ কোটি ৯৮ লাখ ১২ হাজার ৪৯৮ টাকা (১১৬.৯৫ মিলিয়ন ডলার)। অথার্ৎ দেখা যাচ্ছে যে, এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪৫ কোটি ৪৫ লাখ ১২ হাজার ৪৯৯ টাকা (১৮.৪৭ মিলিয়ন ডলার)। এ ছাড়া প্লস্টিক বজর্্য রপ্তানি করে ১০৬ কোটি ৫৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা (১৩.৫৩ মিলিয়ন ডলার) আয় এসেছে। যা গত বছরের চাইতে ৪৪ শতাংশ কম। আমরা বলতে চাই, যখন সংশ্লিষ্টরা এমনটিও বলছেন, প্লস্টিক পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রধান কঁাচামাল পেট্রোকেমিক্যাল থেকে তৈরি পলিওয়েলিনফিনস। অন্যদিকে প্লস্টিকের বজর্্য থেকে এক ধরনের রেজিন তৈরি করা হয়, যা পরবতীের্ত অন্য পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে পলিওয়েলিনফিনস তৈরি হয় না। এ জন্য এ খাতের কঁাচামাল পুরোটাই আমদানিনিভর্র। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে উদ্যোগী হতে হবে সংশ্লিষ্টদেরকেই। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, প্লাস্টিক পণ্যর রপ্তানিতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে। যে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হলে তা সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের দিকেও নজর দিতে হবে। দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।