বিদায়ী বছরে ধর্ষণ বেড়েছে

যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যদি ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকে, তবে এর ভয়াবহতা কী রূপ- তা আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। যখন একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, তখন সার্বিকভাবে এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগী হওয়া অপরিহার্য। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে যে, ২০১৯ সালে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আগের বছরের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর এই তথ্য উঠে এসেছ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বার্ষিক প্রতিবেদনে। আমরা বলতে চাই, যখন ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ও ভয়ানক ঘটনা রোধ হওয়ার পরিবর্তে ২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে দ্বিগুণ হয়েছে- তখন তা কতটা আশঙ্কাজনক এবং উৎকণ্ঠার আমলে নেওয়া জরুরি। উলেস্নখ্য, মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিস্থিতি-২০১৯: আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ' শিরোনামে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য তুলে ধরেন আসক কর্মকর্তারা। আসকের একজন জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেছেন, সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৪১৩ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন। ২০১৮ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ৭৩২ নারী এবং ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮১৮। এ ছাড়া আরো এ বছর নারীদের উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে এমন তথ্যও উঠে এসেছে। ২০১৯ সালে ২৫৮ জন নারী যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ৪৪ পুরুষ। উত্ত্যক্তের কারণে ১৮ জন নারী আত্মহত্যা করেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে চার নারীসহ ১৭ জন খুন হয়েছেন। এ ছাড়া ২০১৯ সালে শিশু নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে বলেও তথ্য উঠে এসেছে। আমরা বলতে চাই, এসব তথ্য পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এ কথা মনে রাখা দরকার, ধর্ষণের মতো ঘটনা- ঘৃণ্য মানসিকতা এবং নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পরিস্থিতিকেই স্পষ্ট করে। আর এসব ঘটনার ভয়াবহতা কতটা তাও বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই এরকম ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। ধর্ষণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার চিত্র সামনে আসে। এমনকি এই ঘৃণ্য মানসিকতার নৃশংস থাবা থেকে শিশুরাও মুক্ত নয়। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার বিকল্প নেই। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রতিনিয়ত যেভাবে ধর্ষণের খবর সামনে আসে এবং এর ফলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা কতটা অধঃপতন এবং নৈতিক স্খলনের বিষয়কে স্পষ্ট করে- সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে তা অনুধাবন করে এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, একজন নারীর যাত্রাপথ যদি ঝুঁকির মুখে পড়ে, যদি ধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা রোধ না হয়, একজন শিশুর যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়- তবে এর চেয়ে ভয়ানক বাস্তবতা আর কী হতে পারে! ফলে ধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।