মেট্রোরেল প্রকল্প

যথা সময়ে বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীতে যদি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠে, তবে তা সামিগ্রকভাবেই দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে এমনটি বলা অযৌক্তিক নয়। সঙ্গত কারণেই রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। এ ছাড়া যানজট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মও আলোচিত। দুর্ভোগ যেন ঢাকা মহানগরীর মানুষের নিত্যসঙ্গী। ফলে ঢাকা মহানগরীর জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে- এমন বিষয় যখন আলোচনায় এসেছিল তখন তা ছিল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বিষয়। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, এখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের মতো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরেকটি ইতিবাচক বিষয় হলো মেট্রোরেল- এখন যা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মেট্রোরেলের সাড়ে আট কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ২০২১ সালের বিজয়ের মাসে তরুণদের এই 'ড্রিম প্রজেক্ট'-এর প্রথম ধাপ সমাপ্ত হবে এমনটি আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, খুব শিগগিরই মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন ওয়ানের কাজও শুরু হবে। এখানে দুটো পাতাল রেলের সিস্টেম আছে। একটির দৈর্ঘ্য ১৬, আরেকটির সাড়ে ১৩ কিলোমিটার। ২০৩০ সালে ৬টি মেট্রোরেলের কাজ শেষে পৌনে দুইশ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য হবে বলেও জানা গেছে। ফলে এটি বলা যায় যে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পর কাজ শেষ হলে ঢাকার চিত্র বদলে যাবে বলে যে বিষয় সামনে আসছে তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তথ্য মতে, এরই মধ্যেই দিয়াবাড়ী এলাকায় লাইন বসানোর আগে স্ক্রু লাগানো শেষ হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরা অংশে ট্রেন চলার সময় ট্র্যাকে ঘর্ষণের শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাবারের প্যাড লাগানোর কাজও শেষ হয়েছে। এমনটিও জানা গেছে, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন ৬-এর নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষের ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সরকার বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনার বিষয়টিও জানা গেছে। আমরা বলতে চাই, এটা মনে রাখা দরকার, বর্তমানে রাজধানীতে যানজট এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, যেখানে মানুষ গন্তব্যে পৌঁছাবে কখন তা অনুমান করাও কঠিন। যানজটের কারণে রাজধানীবাসীর যে বিপুল কর্মঘণ্টা ও অর্থ অপচয় হয়, তাও নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। সঙ্গত কারণেই এ কথা বলা যায়, মেট্রোরেল চালু হলে অন্যান্য গণপরিবহণে যাত্রীর চাপ কমবে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, এর আগে এমনটিও জানা গিয়েছিল, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩৭ মিনিট- যা বর্তমানে রাজধানীবাসীর কাছে স্বপ্নের মতোই। ফলে এই বিষয়গুলো আমলে নিলে এটাই স্পষ্ট হয়, রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ যেন নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এর আগে বিভিন্ন সময়েই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়া, ব্যয় বৃদ্ধি, অব্যবস্থাপনাসহ নানা ধরনের বিষয় নিয়েও অভিযোগ এসেছে। সঙ্গত কারণেই এই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হোক এমনটি আমদের প্রত্যাশা।