আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এখন চলছে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। স্বাভাবিক নিয়মে পেঁয়াজের দাম কমার কথা। স্বস্তি আসার কথা বাজারে। অথচ পুরনো চিত্রই চোখে পড়ছে- যা অবাক হওয়ার মতো। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দেশের বাজারে পেঁয়াজ সংকট আর দাম নিয়ে প্রায় পাঁচ মাস আলোচনা-সমালোচনার পর দাম কমতে শুরু হয় পেঁয়াজের। গত এক মাসের মধ্যে কেজিপ্রতি ২৭০ টাকার পেঁয়াজের দাম কমে ১০০ টাকায় চলে আসে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২২০ থেকে কমে চলে আসে ৬০ টাকায়। একইভাবে কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে টিসিবির ট্রাক সেলের পেঁয়াজও চলে আসে ৩৫ টাকায়। এমন পরিস্থিতিতে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। হতাশাজনক ব্যাপার হচ্ছে, নতুন পেঁয়াজের দাম কমতে না কমতেই কী কারণে প্রায় দ্বিগুণ হলো তার অনুসন্ধান করা জরুরি। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ১৮০ টাকা কেজি এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারে নতুন পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কেন দাম আবার বাড়ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। ভরা মৌসুমে যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে মৌসুম শেষে কোন পর্যায়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। আমরা বারবার বলে আসছি এটা দেশের অতি মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। যে কারসাজি এখনো বন্ধ হয়নি। এরা বারবার জনগণকে জিম্মি করে মুনাফা লুটছে। পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে প্রতি কেজির দাম হওয়া উচিত ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এ কথা সত্য, রসনাবিলাসের জন্য পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিসীম। রন্ধনশিল্পে পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিদিনের রান্নায় পেঁয়াজের জোগান জরুরি। ৪০ টাকার পেঁয়াজ কী করে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং এখন আবার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করা আবশ্যক। অনুসন্ধান করা জরুরি পেঁয়াজ আমদানির নামে মুদ্রা পাচারের বিষয়টিও। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পেঁয়াজ চাষের জন্য চাষিদের বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হবে। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়। দেশের জনগণের জিজ্ঞাসা, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের নৈরাজ্য আর কতদিন চলবে। এমন অস্থির পরিস্থিতির দ্রম্নত অবসান জরুরি। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বাজার নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর ও কঠোর উদ্যোগই পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।