শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাবি কোন পথে?

এবারই শুধু নয়- নুর ও তার সমর্থকদের ওপর এ পর্যন্ত নয়বার সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না। বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। যদিও সাধারণ ছাত্র সমাজ, শিক্ষকমন্ডলী এবং অভিভাবক সমাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন, সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। প্রশ্ন জাগে মনে, এখনো কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে অভিহিত করা যাবে?
রণেশ মৈত্র
  ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িনি। আমার পাঠ্যজীবন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজেই শেষ হয় বিগত শতকের পঞ্চাশের দশকে। এডওয়ার্ড কলেজ বিপুল ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ হিসেবে স্বীকৃত ছিল অতীতে অবিভক্ত বঙ্গদেশে।

ওই এডওয়ার্ড কলেজে পড়াকালেই কত যে শুনতাম, মূলত কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবগাঁথা, তার সুনাম ও ঐতিহ্যের কথা। তাই খুব ইচ্ছে হতো এডওয়ার্ড কলেজ থেকে বিএ পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে অনার্সও পড়ব- পারলে মাস্টার্স। উলেস্নখ্য, তখন এডওয়ার্ড কলেজে কি বিজ্ঞান, কি সাহিত্য কলা, কি বাণিজ- কোনো বিভাগেই অনার্স পড়ার সুযোগ ছিল না।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দূরে থাক, বাড়ির কাছের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগও পাইনি। সে ব্যাপারে চেষ্টাও করিনি। কারণটা সহজ-সরল। অর্থাৎ আর্থিক। বাবাকে হারাই ১৯৫৪ সালে ইন্টারমিডিয়েট পড়াকালে। টিউশনি করে পড়ালেখা চালাতাম। স্কুল বা কলেজে অবশ্য টিউশন ফি দিতে হতো না। তারাই নিতেন না। তাই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার বাসনা পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।

তবে হঁ্যা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বা তার ক্যাম্পাস পর্যন্ত ঢুকতে না পারলেও রাজশাহী যেতে হয়েছে বা যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি বহুবার। গন্তব্যস্থল ছিল রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার। সেখানে বিনা বিচারে আটক থাকতে হতো বছরের পর বছর। অপরাধ ছিল পূর্ব পাকিস্তান (আজকের বাংলাদেশ) ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম নেতা হিসেবে ভাষা আন্দোলনের অভিজ্ঞতায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে পাবনায় অন্যতম নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করা।

যখন ছাড়া পেতাম রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সরাসরি চলে যেতাম রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, বহু গৌরবান্বিত ইতিহাসের ধারক ভুবন মোহন পার্কের বিপরীত দিকে একটি দোতলা দালানের উপরতলায় অবস্থিত ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে। সেখানে দলীয় সংবর্ধনা শেষে ভুবনমোহন পার্কে গণসংবর্ধনা। অতঃপর পাবনা প্রত্যাবর্তন ট্রেনযোগে।

ট্রেনযোগে বা বাসে চড়ে বন্দি বা মুক্ত মানুষ হিসেবে যতবারই রাজশাহী গিয়েছি-ততবারই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার হলগুলো, শহিদ মিনার বিশাল ক্যাম্পাসের অংশ বিশেষের প্রতি আপন মনেই চোখ দুটি নিবন্ধ হতো। মতিহারের সেই অঙ্গনও ছিল নানা দিক থেকে গৌরবমন্ডিত। আরও ভালো লাগতো এ কারণে সে কালের উত্তরবঙ্গের ছাত্ররা অর্থাৎ আমরাই আন্দোলন করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি চাই, 'উচ্চ শিক্ষার সুযোগ চাই' ইত্যাদি দাবিতে ছিল ওই আন্দোলনটি। তাই লোভ হলেও সুযোগ ঘটতো না রাজশহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার।

এভাবে শুধুই অনুভব করতাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়? সে তো অনেক দূরে অবস্থিত। তখন যমুনা সেতু হয়নি। তাই পাবনা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগতো প্রায় ২৪ ঘণ্টা। যেতাম বাসে প্রথম ঈশ্বরদী পাবনা থেকে বেলা ১১টার দিকে রওনা হয়ে। অতঃপর রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে ঈশ্বরদী জংশন থেকে ঢাকার দিকে যাত্রা। সিরাজগঞ্জ ঘাট স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন থেকে নেমে ও পরে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত যেতে হতো যমুনা নদী দিয়ে বিশাল স্টিমারে চড়ে। জগন্নাথগঞ্জ ঘাট স্টেশনে ঢাকাগামী ট্রেন অপেক্ষা করত। সেই ট্রেনে চড়ে সারা রাত জেগে বেলা ৮টা নয়টার দিকে ঢাকায় তখনকার ফুলবাড়িয়া স্টেশনে এসে ট্রেন থেকে নামতে হতো। এভাবে ২৪ ঘণ্টা না হলেও ২০-২১ ঘণ্টা অবশ্যই লেগে যেত। ধকল কম সহ্য করতে হতো না।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতাম। ভর্তি হতে না পারলেও শুধু যেতাম তাই নয়- তার ক্যাম্পাসে যেতেই হতো বাড়ির আনন্দ, উৎসাহ ও গর্বের সঙ্গেই। গর্ব এ কারণে যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি হিসেবে, তার আগে অন্যতম সদস্য হিসেবে ছাত্র সমাজের দাবি-দাওয়া এবং জাতীয় সমস্যাগুলো নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার নীতিগত ও কৌশল গত কর্মসূচি নির্ধারণ করার উৎসাহে কখনো ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কখনো বা মধুর রেস্তোরাঁয় বৈঠক করতে। থাকতে হতো সহকর্মীদের সঙ্গে সাধারণত ফজলুল হক মুসলিম হলে সহকর্মীদের রুমে। একবার দুবার না-যেতে হয়েছে অনেকবার সম্মানে-গর্বটা এখানেই।

আর তো ছিল সেকেন্ড হোম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার- যে কোনো সারা প্রদেশের প্রবাদপ্রতিম ত্যাগীও নিষ্ঠাবান বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রবীণ বামপন্থি নেতাদের বছরের পর বছর বিনা বিচারে আটকে রাখা হতো। তাদের সান্নিধ্যও ছিল শিক্ষণীয়।

যা হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনের লম্বা প্রেক্ষাপট বলতে হলো। সেদিনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন হতো পড়াশোনা- তেমনই হতো ছাত্র সমাজের নানাবিধ ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের কর্মসূচি নিয়ে। আন্দোলন করেছি পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি এবং সিয়াটো ও সেন্টো চুক্তি বাতিল, পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রভৃতি বিদেশ নীতি ও বিদেশ সংশ্লিষ্ট কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবি নিয়ে।

তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ যারা ১৯৪৮ ও ১৯৫২-তে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন করেন বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি আদায় করছেন- তাদের অনেকের সাহসী পদচারণা ও কারও কারও আত্মদানের ফলে জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি দুর্লভ মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।

তখন যাদের ডাইস চ্যান্সেলর হিসেবে, যাদের শিক্ষাক-শিক্ষয়িত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো তাদেরর শিক্ষাদান এবং বিষয়গুলোর ওপর দখল ছিল আশ্চর্য ধরনের। ছাত্রবান্ধব ছিলেন স্বদেশ প্রেমিকও তাই তখনকার ছাত্র আন্দোলনকারীরা পেতেন শিক্ষকদের নৈতিক এবং অনেক ক্ষেত্রে বৈষয়িক সহযোগিতাও।

আজ যখন তখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) কথা, তখন এক গৌরবোজ্জ্বল অতীতের কথাই স্মরণে আসে। ডাকসুতে নির্বাচিত হতেন কখনো জনপ্রিয় ছাত্রনেতারা-কখনো বা জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতারা। ডাকসুর নেতারা ছাত্র আন্দোলনে বিশেষ মর্যাদার অবস্থান পেয়ে যেতেন। আর দলমত নির্বিশেষে সকলের অকুণ্ঠ সমর্থন পেতেন অবিতর্কিত এক মর্যাদাকর এক বিশেষ অবস্থান।

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ভোটে নির্বাচিত হলেও সারা দেশের অপরাপর সংসদ ও জেলাগুলোর এবং কেন্দ্রীয় নানা ছাত্র সংগঠনের নেতারা সমবায় টিম গঠন করে সারা দেশ সফর করে বেড়িয়েছেন ডাকসু নেতারা। এভাবে ডাকসুর ভিপিজিএসেরা হয়ে দাঁড়াতেন দেশের তরুণ নেতৃত্বেরই শুধু নন-ভবিষ্যতের জাতীয় নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।

সেই ডাকসুর নির্বাচন স্থগিত করে রাখা হয়েছিল প্রায় দুটি যুগ। এই দুই যুগ ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের কারণ হিসেবে মোটামুটি ধারণা দেওয়া হতো সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ার আর কোনো বিকল্প নেই ডাকসু নির্বাচন স্থগিত রাখা ছাড়া। দেশের প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো ভিন্নমত প্রকাশ করতেন। তাদের বক্তব্য ছিল সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়তে হলে তার বিরুদ্ধে সংগঠিত ছাত্রসমাজকে নিয়ে লড়তে হবে। আর সেই লড়াই এ নেতৃত্ব দিতে পারেন শুধু তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই। আর এই প্রক্রিয়া পরিচালনার মূল শক্তি আদর্শনিষ্ঠা ছাত্র সংগঠন যা আমরা পঞ্চাশ-ষাটের দশকে দেখেছি।

প্রকৃষ্ট উদাহরণ ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে আছে। আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসেই। তখন গভর্নর মোনায়েম খানের যুগ। ছাত্রসমাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে নানা ইসু্যতে মুসলিম লীগবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলে তারা গদির নিরাপত্তা অনিশ্চিত করে তুলছিল দেশে আতঙ্কিত মোনায়েম খান অর্থের বিনিময়ে গড়ে তুললেন ছাত্র ফেডারেশন নামক এক সন্ত্রাসী চক্র অস্ত্র সজ্জিত। এই সংগঠনের ওপর দায়িত্ব বর্তেছিল ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্রলীগ পরিচালিত আন্দোলনগুলো শান্তভাবে প্রতিরোধ করার বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ভীতির রাজত্ব গড়ে তোলা।

আসলেই ছাত্র ফেডারেশন যৌক্তিক বহু আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করছিল প্রগতিকামী ছাত্র নেতাদের জীবনের নিরাপত্তা অনিশ্চিত করে তুলছিল। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়েও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিমনা শিক্ষকদের উপরও হামলা চলছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র সংগঠন, সাধারণ ছাত্রসমাজ ও শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে ছাত্র ফেডারেশন নামক গুন্ডাবাহিনীকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আবাসিক ছাত্রগুলো হল থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।

এই ইতিহাস প্রমাণ করে যে আদর্শনিষ্ট ছাত্র সংগঠন, ডাকসু এবং হলগুলোতে নির্বাচিত সংসদের প্রয়োজন। বর্তমানে কি সরকারে, কি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে সাবেক ছাত্র নেতারাই রয়েছেন এবং দেশ বা রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ভূমিকা রাখছেন।

কিন্তু এমন অভিজ্ঞতার পরেও দীর্ঘকাল ধরে শিক্ষাঙ্গনগুলো ছাত্র সংগঠনগুলোর অস্তিত্ব নিরুৎসাহিত করা হচ্ছিল ডাকসু নির্বাচন ও স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরিণতিতে কি বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে, কি রাজনৈতিক এক অস্বাভাবিক অগণতান্ত্রিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে এবং ঘটেছে সন্ত্রাসবাদের উত্থান।

এমনই এক মুহূর্তে একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে ভাষণ দিতে গিয়ে ডাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। অতঃপর ডাকসুসহ আগের মতো সব শিক্ষাঙ্গনে ও ছাত্রাবাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ক্রমান্বয়ে জোরদার হতে থাকে। একপর্য্যায়ে এসে ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিতও হলো। নির্বাচনে ছাত্রলীগ নিজস্ব ব্যানারে, ছাত্র ইউনিয়ন এবং অন্য বামছাত্র সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এবং সাধারণ ছাত্রসমাজ নামে নূরের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনী ফলাফলে জিএসসহ সব আসনে ছাত্রলীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও ভিপির মতো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদটি বিরাট সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জিতে নিয়েছেন সাধারণ ছাত্রসমাজের নূরু যিনি কি রাজনৈতিক কি ছাত্র সংগঠনে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি নাম। তার আদর্শিক চিন্তাধারা সম্পর্কেও কেউ অবহিত ছিলেন না আজও নন।

দেখা গেল, অতীতের আদর্শিক সংগঠন ছাত্রলীগ জিএসসহ সব আসনে জেতার পরও ভিপি নূরকে সহ্য করতে রাজি নয়। পদে পদে বাধা দেওয়া থেকে শুরু করে এমনকি সন্ত্রাসী হামলা পর্যন্ত করতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত।

কিন্তু আমরা সবাই জানি, ছাত্রলীগের প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং। তিনি বারবার শুদ্ধি অভিযান চালালেও এবং কোন কোন পদ থেকে ছাত্রলীগের কোন কোন কেন্দ্রীয় নেতাকে তার পদ থেকে অপসারণ করালেও ডাকসুতে নির্বাচিত ছাত্রলীগ নেতারা সন্ত্রাসপন্থি পদক্ষেপ নিতে আদৌ নিবৃত্ত হচ্ছে না।

সম্প্রতি নুরু ও তার সঙ্গী সমর্থক সহকর্মীদের ওপর যে ভয়াবহ সন্ত্রাসী তান্ডব ঘটালো ছাত্রলীগ ও 'মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ' নামে বেনামি ছাত্রলীগরা তাতে নূরুসহ কারও কারও জীবন এখনো পুরোপূরি আশংকামুক্ত নয়। অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আজ প্রায় এক সপ্তাহ হলো। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানামাত্র আদেশ দিলেন নূরুর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেন। কিন্তু মূল সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ং ভাইস চ্যান্সেলরকে নিয়ে।

এবারই শুধু নয়- নুর ও তার সমর্থকদের ওপর এ পর্যন্ত নয়বার সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না। বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। যদিও সাধারণ ছাত্র সমাজ, শিক্ষকমন্ডলী এবং অভিভাবক সমাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন, সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। প্রশ্ন জাগে মনে, এখনো কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে অভিহিত করা যাবে?

রণেশ মৈত্র: সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83483 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1