ধর্ষক মজনু গ্রেপ্তার

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ও ভয়াবহ ঘটনা রোধ হচ্ছে না- যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব। তথ্য মতে, বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শেওড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। উলেস্নখ্য, গ্রেপ্তার হওয়া মজনুর কাছ থেকে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোন ও ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, মজনু ১০ বছর আগে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে ভবঘুরে জীবনযাপন করত। সে মাদকাসক্ত ও 'সিরিয়াল ধর্ষক'। এর আগে ও প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুকদেরও ধর্ষণ করেছে সে এমনটিও জানা গেছে। প্রসঙ্গত, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিম ধর্ষককে শনাক্ত করেছেন। বলা দরকার, ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নানা কর্মসূচিও পালিত হয়। যেখানে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাসহ চার দফা দাবিতে চার ছাত্র সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশন করেছে। এ ক্ষেত্রে তখন জানা গিয়েছিল কুর্মিটোলায় সড়কের পাশে ফুটপাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাও করেছেন। যখন ধর্ষক গ্রেপ্তার হয়েছে এমনটি জানা যাচ্ছে, তখন এটি ইতিবাচক। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, দিনে দিনে বাড়ছে যৌন হয়রানি ধর্ষণ নির্যাতনের ঘটনা। এর ফলে দেশের সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এমন বিষয় সামনে আসে যে, সমাজ এগিয়েছে। সভ্যতা এগিয়েছে। নারীরা এখন স্বাধীন। কিন্তু বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন প্রশ্ন এড়ানো যায় না, প্রকৃত অর্থে নারীরা কি স্বাধীন? আমলে নেওয়া দরকার, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সমাজের সব শ্রেণির নারীই নির্যাতন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। নির্যাতন করছে কলেজ শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ডাক্তার, কর্মচারী, পুলিশ, আত্মীয়, চাচা-মামা-খালু, দুলাভাই, আমলা, ধনীর দুলাল। কেউ বাদ যাচ্ছে না। ধর্ষিত হচ্ছে ছাত্রী, যুবতী, আয়া, বুয়া, গৃহবধূ। রাস্তা-ঘাটে, রেস্তোরাঁয়, চলন্ত বাসে, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে, গৃহে ঘটছে পৈশাচিক ঘটনা। কোথাও আজ নারীরা নিরাপদ নয়। নারীরা কেবল যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না, এমনকি ধর্ষণের পর খুনও হচ্ছে। শিশুরা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না এমন ঘৃণ্য থাবার। এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মানুষ কতটা বর্বর হলে এমন ঘৃণ্য ও ভয়ানক কর্মকান্ড ঘটায় তা ভাবনার অবকাশ রাখে। ফলে যে কোনো মূল্যে সামাজিক অবক্ষয়ের এই চূড়ান্ত পরিস্থিতি রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, একের পর এক ধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এমন ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। মনে রাখতে হবে, নৈতিক অবক্ষয় রোধ না হলে মানুষের বসবাসের স্বাভাবিকতাই হুমকির মুখে পড়বে। এবারের ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে; ফলে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কেন এই ধরনের ঘটনা একে পর এক ঘটছে এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ও ভয়াবহ ঘটনা রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাক এমনটি কাম্য।