শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা

নতুন শক্তিতে উজ্জীবিত হোক জাতি
নতুনধারা
  ১২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে শুক্রবার। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে এই ক্ষণগণনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষণগণনা ঘড়ি বসানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদযাপন শুরু হবে ১৭ মার্চ, যা অব্যাহত থাকবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত। উলেস্নখ্য, বছরটি হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বর্ণজয়ন্তী। যুগপৎ চলতে থাকবে এই দুটি অনুষ্ঠান নানা উৎসব-আয়োজনের মধ্যদিয়ে। এই উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দেশ ও জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করা। জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত ও উজ্জীবিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কেননা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন, অদ্বিতীয়।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দি হওয়ার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস বঙ্গবন্ধুকে থাকতে হয় পাকিস্তানের কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে। এ সময় প্রতি মুহূর্তে তাকে গুনতে হয়েছে মৃতু্যর প্রহর। তার সামনেই কবর খোঁড়া হয়েছে তার। তবুও বাংলার এই অবিসংবাদিত নেতা মৃতু্যতে ভয় পাননি। দেশ স্বাধীনের পর আন্তর্জাতিক চাপে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন, দিলিস্ন হয়ে ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তাই বাঙালি জাতির ইতিহাসে এ দিনটি একটি চির স্মরণীয় দিন। 'বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে তোমার স্বাধীন সোনার বাংলায়'- বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি বেতার থেকে বেজে উঠেছিল এই গান। সেই স্বর্ণোজ্জ্বল দিন থেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হলো। বাঙালি জাতির জন্য এটি অত্যন্ত গৌরব ও আনন্দের।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালনে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করেনি। সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। সেদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সবার স্বপ্ন ছিল একসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুই ছিলেন জাতির ঐক্যের প্রতীক। আর স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে বদলে গিয়েছিল সবকিছু। মানুষ সব হতাশা ও দুর্ভোগ ভুলে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করেছিল। বস্তুত খুব অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের কল্যাণার্থে নানা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। শিক্ষা, কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রকৃত ভিত্তি রচিত হয়েছিল সে সময়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আগমন বাঙালি জাতির জন্য একটি বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। তাই এ দিনটি যেমন আমাদের দেশ গড়ার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা জাগানিয়া, তেমনইভাবে এই দিন থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনাও বাঙালি জাতিকে নতুন শক্তিতে উজ্জীবিত করবে বলেই আমরা মনে করি। কেননা, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।

গণমাধ্যমের তথ্য মতে, শুক্রবার জাতির জনকের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনাপ্রবাহের প্রতীকী মঞ্চায়নের মধ্যদিয়ে এই জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার সূচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে আলোকবর্তিকা হয়ে সেদিন দেশে ফিরেছিলেন, তারই প্রতীকী উপস্থাপনা ছিল এ আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা, তাদের পরিবারের সদস্য, সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য, দুই হাজারের বেশি আমন্ত্রিত অতিথি এবং দশ হাজারের বেশি নিবন্ধিত দর্শকের উপস্থিতিতে সেই মুহূর্তটিকে স্মরণ করা হয়েছে, যেদিন পূর্ণতা পেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনন্দ। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশে ফিরে আসায় সদ্য স্বাধীন দেশের মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠারও অবসান ঘটেছিল। ফলে আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন ও রাজনীতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের মোকাবিলায় আমাদের নতুনভাবে উজ্জীবিত হতে হবে। জঙ্গি ও দুর্নীতিমুক্ত-অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে দেশবাসীকে।

সর্বোপরি বলতে চাই, টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে হবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জয়যাত্রা। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রম্নদের নির্মূল করা ছাড়া এ দেশে সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবে না- এই সত্যটিও বিস্মৃত হলে চলবে না। দুর্নীতি, জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা অত্যন্ত জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83925 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1