বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

'ডেঙ্গুবিহীন' দিন

মশক নিধনে তৎপর হোন
নতুনধারা
  ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ডেঙ্গু-সংক্রান্ত পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের হয়ে দেখা দিয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি ডেঙ্গু-সংক্রান্ত এক ধরনের আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও চিকিৎসকরা বারবার বলেছিলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, বরং সতর্কতা এবং সচেতনতা প্রয়োজন। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রায় নয় মাস পর এই প্রথম কোনো দিনে দেশে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হননি। যা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। যদিও এ কথাও বলা দরকার, এর মধ্যদিয়ে এটাও স্পষ্ট হচ্ছে, নয় মাস ধরে কেউ না কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, ফলে সার্বিক বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নেওয়া সমীচীন।

তথ্য মতে, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এই ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে আসেননি। জানা গেছে, গত ২৬ এপ্রিল থেকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছেন। প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর ২০১৯ সালে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতু্য ও আক্রান্তের সংখ্যা- সবদিক দিয়ে রেকর্ড হয়েছে। গেল বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এমনকি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালগুলোকে। বহু মানুষ সরকারি হাসপাতালগুলোর মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিলেও সারা দিন অপেক্ষার পরও বেসরকারি হাসপাতালে ঠাঁই পাননি অনেক মানুষ এমনটিও জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, সেই পরিস্থিতিতে সমালোচনার মুখে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস ইজিপ্টি মশা নিধনে নানা উদ্যোগ নেয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তবে এর মধ্যে ঢাকার বাইরের জেলায়ও ডেঙ্গু দেখা দেয়, যার জন্য এইডিসগণেরই আরেক ধরনের মশাকে দায়ী করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যর সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়েছে, যদিও দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আরও অনেক মানুষের মৃতু্যর খবর এসেছে।

আমরা মনে করি, এখন যখন ইতিবাচক বিষয় সামনে আসছে, এটাকে আমলে নিয়ে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত বিগত দিনে পরিস্থিতি ভুলে যাওয়া যাবে না। সেই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। মশা নিধন কার্যক্রম বৃদ্ধি, সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাসহ পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে- শীত মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যায় ফলে আগামীতে যেন ডেঙ্গুর বিস্তার না হয় সে জন্য এখন থেকেই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য মতে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫২ জন ডেঙ্গুর রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ২৬ জন এবং অন্যান্য বিভাগে তিনজন ডেঙ্গুর রোগী ভর্তি আছেন। ফলে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত সামগ্রিক চিত্র আমলে নিয়ে সেই মোতাবেক কাজ করা জরুরি।

সর্বোপরি বলতে চাই, প্রায় নয় মাস পর এই প্রথম কোনো দিনে দেশে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হননি- এই বিষয়টি সুখকর। এর পাশাপাশি আমরা মনে করি, ডেঙ্গু-সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণেরও কোনো বিকল্প নেই। মশার বিস্তার রোধে পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে। এ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের পরিবর্তে মানুষ যেন সচেতন হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, এডিস মশা বৃদ্ধির স্থান ধ্বংস করতে জনসাধারণের সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি সংশ্লিষ্টদেরও সামগ্রিক পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84761 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1