জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ সেবা নিন ভালো থাকুন

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
২০১৭ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রাজধানীর আবদুল গনি রোডে পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। নাগরিক সেবা নিশ্চিতের জন্য ৯৯৯-এর সেবাগুলো সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই। আর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে দেশের নানা প্রান্তে সেবা গ্রহণ করছে অসংখ্য মানুষ, যার মাধ্যমে আগের তুলনায় এখন অনেক সহজলভ্য হয়েছে জরুরি সেবাগুলো। শহর থেকে গ্রামে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সব মানুষই জরুরি অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশি সব ধরনের সহায়তা গ্রহণ করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও মালয়েশিয়া, হংকং, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, পোলান্ড, বাহরাইন, কেনিয়া, কাতার, সৌদি আরব, আয়ারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও সুইজারল্যান্ডসহ অনেক দেশেই ৯৯৯ শর্টকোড জরুরি সেবা চালু আছে। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডে ১১১, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ১১২, অস্ট্রেলিয়াতে ০০০, কানাডা ও আমেরিকায় ৯১১ শর্টকোডের মাধ্যমে জরুরি সেবা আছে। বিপদগ্রস্ত মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কোনো মানুষের বিপদ দেখলেও যে কেউ ৯৯৯-এর সেবা নিতে পারবেন। জরুরি সেবা ছাড়াও কোনো অপরাধ সংঘটিত হতে দেখলে, হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, প্রাণনাশের শংকা দেখা দিলে, গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশংকা থাকলে, আগুনের ঘটনাসহ যে কোনো দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকলেই যে কোনো নাগরিক ৯৯৯-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া বিশাল তথ্য ভান্ডার সংবলিত ৯৯৯-এর মোবাইল অ্যাপস রয়েছে। মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ৯৯৯ সার্ভিসের হেল্প ডেস্কে সরাসরি কথা বলা ছাড়া প্রতিনিধির সঙ্গে লাইভ চ্যাট করে সেবা নেয়া যাবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অধিদফতর দ্বারা পরিচালিত কল সেন্টারগুলোতে সরাসরি কল করে সেবা নেয়া যাবে। বাংলাদেশে নানা সমস্যা বিদ্যমান। এখানে অপরাধপ্রবণ মানুষের সংখ্যা অধিক, যারা জায়গা-জমি, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনৈতিক স্বার্থসহ ঠুনকো স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে কোনো প্রকার অপরাধজনক কর্মকান্ড করতে পিছপা হয় না, যার মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। নিছক দুর্ঘটনা কিংবা বিপদের মধ্যে কোনো মানুষের আঘাত ছাড়া অসুস্থতা কিংবা ইচ্ছাকৃত আগুন লাগানো ছাড়া অসাবধানতায় আগুন লাগার ঘটনার বিষয়ে কোনো অভিযোগ না থাকলেও স্বার্থবাদীদের ইচ্ছাকৃত অপরাধজনক কর্মকান্ডের কারণে সারা দেশব্যাপী বহু আইনবিরোধী ও অমানবিক ঘটনা ঘটে। ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত না থাকার অভিযোগের বিপরীতে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে সঠিকভাবে নাগরিক দায়িত্ব পালন না করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কর্মকান্ডের জন্য নাগরিকরাই দায়ী, ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অপরাধজনক কর্মকান্ডের দায়ও ব্যক্তির। এই অবস্থায় জাতীয় জরুরি সেবার জন্য ৯৯৯-এ চলমান কার্যক্রম বেশ প্রশংসনীয়। অনেক সময় সেবা না পাওয়ার অভিযোগ শোনা গেলেও সেবা পেয়েছেন এমন ঘটনা আশাব্যঞ্জক। আবার অনেক সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সেবাদানে আন্তরিক হলেও রাস্তাঘাটের যানজটের কারণে দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে না পারাও সেবাপ্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ। দৈনন্দিন জীবনে সমস্যার শেষ নেই। যে কোনো জরুরি সবার জন্য যেখানে আগে সরাসরি থানায় গমন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে গ্রহণ, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য হাসপাতালে গমন কিংবা কারও কাছে মোবাইল নাম্বার থাকলেও কাজের সময় না পাওয়া এবং সবার কাছে প্রয়োজনীয় মোবাইল নাম্বারগুলো না থাকার কারণে জরুরি সেবা পেতে যে সমস্যা তৈরি হতো, এখন জরুরি সেবা গ্রহণের মাধ্যম ৯৯৯-এর কল্যাণে সে সমস্যাগুলোর দ্রম্নত সমাধান হচ্ছে। কাজেই নাগরিক জীবনে জরুরি প্রয়োজনগুলোর জন্য ৯৯৯-এর সেবা গ্রহণ করুন, নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন। জুবায়ের আহমেদ শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম