খুনের পর ঘাতকের আত্মহত্যা

যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিপন্থি। সঙ্গত কারণেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হলেও এ ধরনের অপকর্মকে প্রতিহত করার বিকল্প নেই। তা না হলে এর প্রভাব অত্যন্ত আতঙ্কজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করবে, যা কাম্য হতে পারে না। বর্তমান সময়ের দিকে দৃষ্টি দিলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কেননা পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যাচ্ছে একের পর এক খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, ছিনতাইসহ নিত্য-নতুন উপায়ে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পালস্নাথল চা বাগানে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর ঘাতক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী জলি ও শাশুড়ি লক্ষ্ণীকে কুপিয়ে হত্যা করেন নির্মল কর্মকার। ঠেকাতে গেলে প্রতিবেশী বসন্ত বক্তা ও তার মেয়ে শিউলি বক্তাকেও হত্যা করেন তিনি। বসন্ত বক্তার স্ত্রী কানন বক্তাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ভয়ানক ও মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিষয়টিও ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, যখন এভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে এবং খুন করে ঘাতকের আত্মহত্যার মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল তখন সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শুধু এবারের ঘটনাই নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়েই খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফিল্মি স্টাইলেও খুনের ঘটনা ঘটেছে। দিনে দুপুরে কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। এ ছাড়া পরিবারিক কলহ, অনৈতিক সম্পর্ক, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়েই। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে এই ভীতিপ্রদ বাস্তবতা আমলে নিতে হবে এবং হত্যাকান্ডের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। মনে রাখা দরকার- একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো আমলে নিলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকেই সামনে আনে, ফলে এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, জানা গেছে, বাগানের অস্থায়ী শ্রমিক নির্মলের সঙ্গে তার স্ত্রী জলির অনেকক্ষণ ঝগড়া হয়। এর জের ধরে ভোরে জলিকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করেন নির্মল। ঠেকাতে গেলে প্রথমে শাশুড়িকে এবং পরে দুই প্রতিবেশীকে কুপিয়ে জখম করেন তিনি। ঘটনাস্থলে চারজনের মৃতু্য হয়। আমরা বলতে চাই, এর আগেও নানা ধরনের হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনাগুলো আমলে নিলে এমন ভয়াবহতা সামনে আসে, তা যেন আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। অথচ এ সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মানুষের বসবাসের স্বাভাবিকতার জন্যই হুমকিস্বরূপ, যার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে, কেন মানুষের মধ্যে হিংস্র প্রবণতা তৈরি হচ্ছে এ বিষয়গুলোকে সামনে রেখে কারণ অনুসন্ধান করা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এবারের ঘটনা ছাড়াও প্রতিনিয়ত যে সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে সেগুলো আমলে নিতে হবে এবং মনে রাখা দরকার, একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনায় জনজীবনের স্বাভাবিকতা হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ। এমন ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখুক এমনটি কাম্য।