ছিনতাই-কিলিং!

রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশে ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিপন্থি। এ ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করে হলেও এই ধরনের অপকর্মকে প্রতিহত করার বিকল্প থাকতে পারে না। কেননা, তা না হলে সর্বস্তরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা অত্যন্ত আতঙ্কজনক- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা যদি বর্তমান সময়ের দিকে দৃষ্টি দেই তবে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কেননা, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যায় একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছেই। আর নিত্যনতুন উপায়ে অপরাধ প্রবণতা দিনকে দিন যেন বেড়েই চলেছে। ফলে তা যেমন জনজীবনের স্বাভাবিক গতিধারার জন্য হয়ে উঠছে বিপজ্জনক- তেমনিভাবে ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট পরিস্থিতি রোধ করাও জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে, ছিনতাই ও হত্যার উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। তথ্য মতে, দিন গড়িয়ে অন্ধকার নামলেই শুরু হতো, আর শেষ হতো পরের দিনের আলো ফুটে ওঠা পর্যন্ত। রাত আটটা থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সিএনজি যাত্রীদের ছিনতাই ও হত্যার এমন কিলিং মিশন নিয়ে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় নামতেন সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল ও তার সহযোগীরা। এক রাতে সর্বোচ্চ ছয়টি ছিনতাই এবং একাধিক ব্যক্তিকে হত্যার রেকর্ড আছে এই চক্রের! আমরা বলতে চাই, এমন চিত্র পরিলক্ষিত হলে তা কতটা ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা আমলে নেওয়া সমীচীন। সঙ্গত কারণেই সার্বিক সৃষ্ট পরিস্থিতিকে সামনে রেখে এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। উলেস্নখ্য, সিএনজি অটোরিকশা যাত্রীদের টার্গেট করে গড়ে ওঠা এমন চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ। চক্রের মূলহোতা নুরুল ইসলামসহ বাকিরা হলেন- তার দুই সহযোগী আবদুলস্নাহ বাবু ও জালাল। সোমবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার। জানা গেছে, টঙ্গী থেকে নুরুলকে এবং তার দেওয়া তথ্যে গাজীপুরের তুরাগ এলাকা থেকে অপর দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। এমন বিষয়ও সামনে এসেছে যে, নুরুল ইসলাম মূলত সিএনজি অটোরিকশা চালক। সিএনজি চালনোর আড়ালে তার মূল পেশা ছিনতাই। নুরুল ইসলামসহ আরো আটজন মিলে তারা গড়ে তুলেছে সিএনজি কেন্দ্রিক দু'টি ভয়ঙ্কর ছিনতাই ও কিলিং গ্রম্নপ। রাত আটটার পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত আশুলিয়া, আবদুলস্নাহপুর, উত্তরা, গুলশান, ভাটারা, খিলক্ষেত, বাড্ডা, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, রামপুরা, ৩০০ ফিট, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড এলাকা চলতে থাকে তাদের অপকর্ম। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, সে ৫-৬ মাস ধরে প্রায় ৬০০ ছিনতাই করেছে। তার সহযোগী ৫-৬ জন আছে যারা প্রায় ৩-৪ বছর ধরে ছিনতাই করছে। অনেকেই ২০০০-২৫০০ ছিনতাই করেছে! আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক এই ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে এই ধরনের চক্র আরো আছে কী না, তা সামনে রেখে অভিযান চালাতে হবে। এভাবে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, মানুষ জিম্মি হবে, হত্যার শিকার হবে এমনটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সিএনজি অটোরিকশা যাত্রীদের টার্গেট করে গড়ে ওঠা এই চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে- ফলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সামগ্রিকভাবে যেভাবে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে সেই বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এই ধরনের অপকর্ম রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাক এমনটি কাম্য।