পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র

পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে তা দেশের সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে- তদুপরি বিভিন্ন সময়েই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি উঠে এসেছে, যা পরিতাপের জন্ম দেয়। তথ্যমতে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে গত সোমবার দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র বিতরণে ভুলের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উদ্যোগী হওয়ার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বলতে চাই, এই ঘটনা যেমন আমলে নিতে হবে তেমিনভাবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সামগ্রিক বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত করতে হবে। জানা গেছে, মূলত নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের পুরনো সিলেবাসে প্রণয়ন করা প্রশ্নপত্র দেওয়ায় এ বিপত্তি ঘটে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য- কোথাও ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার পর আবার ডেকে এনে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কোথাও কোথাও ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ বেড়ে গেছে বলেও জানা গেছে। আমরা মনে করি, এমন ঘটনা ঘটল কেন তা খতিয়ে দেখে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। তথ্য মতে, যশোরের চৌগাছায় ২০১৮ সালের প্রশ্নে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ায় চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসচিবসহ কেন্দ্র কমিটির পাঁচ শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বাংলা প্রথমপত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা দুবার দিয়েছে ১৮ শিক্ষার্থী। প্রথমবার দেওয়া প্রশ্ন ছিল পুরনো সিলেবাসের। এরপর তারা বাড়ি চলে যায়। বিষয়টি পরে শিক্ষকদের নজরে এলে আবার বাড়ি থেকে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ডেকে এনে ২০২০ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। বরিশালেরও একটি কেন্দ্রে ২০ জনের পরীক্ষা নেওয়া হয় পুরনো শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে এমনটিও আলোচনায় এসেছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার একটি কেন্দ্রেও ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কক্ষ পরিদর্শকদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার ঘটনা ঘটছে তখন বিষয়টি কোনোভাবেই সুখকর নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া জরুরি, এভাবে যদি পরীক্ষায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে তবে তা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে এবং উদ্বেগ তৈরি হবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। প্রসঙ্গত আমরা এটাও বলতে চাই, শিক্ষা ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অনিয়ম, গাফিলতি বা নেতিবাচক ঘটনা যেন না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। মনে রাখা দরকার, শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে দেশের অগ্রগতি সম্পৃক্ত। ফলে শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এবারের ঘটনাটি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগ নিন এবং এবং কোনোক্রমেই যেন এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেটি নিশ্চিত করুন। ভুলে যাওয়া যাবে না যে, এর আগে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাও বারবার সামনে এসেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোচিংনির্ভর হয়ে পড়ছে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে এই বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা এবং শিক্ষার সামগ্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক পদক্ষেপ জারি রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।