সীমান্ত হত্যা বন্ধে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। প্রসঙ্গত, আমরা বলতে চাই, বহু দেনদরবার, আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা এবং প্রতিশ্রম্নতি সত্ত্বেও যখন সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না, তখন এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে যে, গত দেড় মাসে সীমান্তে ১১ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আর এই তথ্য জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালক (পরিকল্পনা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ আশিকুর রহমান। বুধবার সকালে বিজিবি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা ১১ জন। এ ছাড়া এ ধরনের মৃতু্য যাতে না হয় সে জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার তা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, সীমান্তে হত্যার বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে, তবু যখন এমন ঘটনা রোধ হচ্ছে না তখন বিষয়টি দুঃখজনক। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সীমান্তে চোরাচালান নৈমিত্তিক ঘটনা এবং এর সঙ্গে উভয় দেশের নাগরিকই জড়িত এমন বিষয় জানা গেলেও, বাংলাদেশের নাগরিকরা বারবার হত্যাকান্ডের শিকার হয়- যা অত্যন্ত পরিতাপের। আমরা বলতে চাই, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় এবং ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র কিন্তু এরপরও সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। যা আমলে নিয়ে এর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এটাও আমলে নেয়া সমীচীন যে, বিভিন্ন সময়েই সীমান্ত বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এমনকি বিএসএফের নির্যাতনেও মারা গেছেন। সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্তের কাছে কবিরুল ইসলাম নামের একজনকে পায়ুপথ ও মুখে পেট্রল ঢেলে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করতে হবে এবং একের পর এক যখন সীমান্তে হত্যাকান্ড ঘটছে, তখন সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যত দ্রম্নত সম্ভব এর সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের নাগরিকরা বিভিন্ন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যাতায়াত করেন। এরমধ্যে জরুরি চিকিৎসাসেবা, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাওয়া এবং পণ্য ক্রয়ের মতো বিষয় আছে। আর শুধু সীমান্ত অতিক্রম নয়, জিরো লাইনের কাছে ভুলক্রমে চলে যাওয়ার কারণেও বাংলাদেশের নাগরিকরা হত্যার শিকার হয়েছেন। দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হত্যার শিকার হওয়ায় অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। এ ছাড়া আমরা এটাও বলতে চাই, যদি বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু হত্যা কিংবা শারীরিকভাবে আঘাত করা হবে এটা হতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নানা ধরনের উদ্যোগ আলাপ-আলোচনার পরও সীমান্তে হত্যা থামছে না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে- যা নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা মনে করি, কেন সীমান্তে হত্যাকান্ড ঘটছে সেটা যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করার পথ খুঁজতে হবে। প্রয়োজনে আরও বেশি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার হবে। গত দেড় মাসে সীমান্তে ১১ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন- এমন তথ্যকে সামনে রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সীমান্ত হত্যা বন্ধে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সীমান্ত হত্যার সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।