মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয় যুবা ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন

নতুনধারা
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

উনিশের যুবাদের হাত ধরে বিশ্বজয় করল বাংলাদেশ। এই প্রথম কোনো বিশ্ব শিরোপা অর্জনের স্বাদ পেলাম আমরা। স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে ভারতকে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে হারিয়ে জুনিয়র টাইগাররা দেশের জন্য এই গৌরব অর্জন করেন। রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে রচিত হলো বাংলাদেশের ইতিহাস। বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে দেখল আকবর আলীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ টাইগারদের ক্রিকেটশৈলী। যে কোনো পর্যায়ের ক্রীড়া আসরের বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রথম এই সেরা সাফল্যে দেশবাসী উলস্নসিত। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়কে 'মুজিববর্ষের সেরা উপহার' বলে মন্তব্য করেছেন। দেশে ফিরলে যুব ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। বলার অপেক্ষা রাখে না, ক্রিকেটে আমাদের অর্জন যে কম নয়, বিশ্বকাপ শিরোপা অর্জন তারই বড় দৃষ্টান্ত। বিজয়ী দলসহ ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আমরা আন্তরিক অভিবাদন জানাই।

বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এই খেলায় টস জিতে ভারতকে ফিল্ডিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। আর শুরুতেই পেসারদের তোপে নির্ধারিত ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪২.১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭০ রান তুলে শিরোপা জয় করে বাংলাদেশের যুবারা। জয়ের কাছাকাছি গিয়ে হারের স্মৃতিও কম নেই বাংলাদেশের। সিনিয়র ক্রিকেটে একের পর এক ফাইনালে হার দেখেছে বাংলাদেশ। যুব ক্রিকেটেও হয়েছে তীরে এসে তরী ডোবার অভিজ্ঞতা। সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ জয়ের দুয়ারে গিয়ে হেরেছিল ভারতের কাছে। এবার কোনো ভুল করেনি বাংলাদেশ। ঠান্ডা মাথায় দলকে বন্দরে নিয়ে গেছেন আকবর আলী ও তার বাহিনীর সদস্যরা। এই জয়ের মাধ্যমে, এটা বলা যেতে পারে যে, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম ক্রিকেট দুনিয়াকে বার্তা দিয়ে রাখল- আমরা উঠে আসছি।

উলেস্নখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশ-ভারত লড়াই বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙার গল্পে পরিণত হয়েছিল। যুব বিশ্বকাপ ফাইনালে তা ভেঙে যুবারা প্রমাণ করল আমরাও জিততে পারি। ম্যাচে যুবাদের অধিনায়ক আকবর ৭৭ বলে অবিস্মরণীয় ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত এই সংগ্রহও বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নিশ্চিতভাবেই তাকে জায়গা করে দেবে। যারা ফাইনাল ম্যাচটি উপভোগ করেছেন, তারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন মাথা ঠান্ডা রেখে পুরো পরিস্থিতি কীভাবে পার করতে হয় তা অধিনায়ক বেশ রপ্ত করেছেন। স্নায়ুচাপ জয় করেই তিনি ও তার বাহিনী দেশকে এনে দিলেন এই বিরল সম্মান।

এই ম্যাচে অনূর্ধ্ব ১৯ যুবাদের ব্যাটিং পারফরমেন্সও ছিল ভিন্ন রকম। ১৭৮ রানের সহজ লক্ষ্যে নেমে চমৎকার শুরু করেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আর তানজিদ হাসান তামিম। দ্রম্নত রান আনার কোনো চাপ ছিল না তাদের। তবু বলের সঙ্গে পালস্না দিয়েই রান আনতে থাকেন তারা। নবম ওভারে ৫০ রানের জুটির পর ভুল করে বসেন তামিম। লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণুইকে মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়ে সীমানা ছাড়া করতে পারেননি। ২৫ বলে ১৭ রান করে ফিরে যান তিনি। রবির লেগ স্পিন এরপর মুহূর্তেই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তার গুগলি যেন বুঝতেই পারছিলেন না জুনিয়র টাইগাররা। সেমিফাইনালের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় আর তৌহিদকে গুগলিতে কাবু করেন তিনি। ৮ রান করে বোল্ড হন জয়। আর কোনো রান না করেই এলবিডবিস্নউ ফাঁদে পড়েন হৃদয়। রবি বিষ্ণু জুনিয়র টাইগারদের কাছে আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয়ায় ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এ সময় অধিনায়ক আকবরের সঙ্গে মিলে জুটি গড়েন শামীম হোসেন। এভাবে চরম বিপর্যয়ে ভীতি জাগানিয়া পরিস্থিতিতে শান্তভাবে বল মোকাবিলা করেছিলেন আকবর। সংগত কারণেই বিশ্বকাপ জয়ে অধিনায়ক আকবরের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সর্বোপরি বলতে চাই, বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক এগিয়ে এসেছে, এর প্রমাণ আগেও বিভিন্নভাবে সামনে এসেছে। আর এবার বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে তা আবারও সামনে এলো। আমাদের প্রত্যাশা, এভাবেই বাংলাদেশ একদিন সিনিয়র বিশ্বকাপও জয় করবে। আর এর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88038 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1