শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সোনার চালান আটক চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য রোধ হোক

নতুনধারা
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

কিছুতেই যেন চোরাচালান রোধ হচ্ছে না। আবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা চালানের বিষয়টি সামনে এলো। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বোর্ড-ইন ব্রিজ থেকে নামলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কক্ষের দূরত্ব মাত্র ২০০ গজ। সোনার চালান নিয়ে এটুকু দূরত্ব পার হলেই মিলবে ২০ হাজার টাকা! উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তা-ই করতে যাচ্ছিলেন জনাথন মুক্তি বারিকদার আর সঙ্গে ছিল চার কেজি সোনা। কিন্তু নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে এ চালান গছানোর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তথ্য মতে, জনাথন মুক্তি বারিকদার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তার কাছ থেকে পাওয়া সোনার বাজারমূল্য ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আমলে নেওয়া দরকার, গ্রেপ্তারের পর জনাথন মুক্তি বারিকদার নিজেকে সোনার চালানটির বাহক হিসেবে দাবি করেন। চালানটি উড়োজাহাজ থেকে বের করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিলে তিনি ২০ হাজার টাকা পেতেন।

আমরা বলতে চাই, এমন পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের তা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এমন খবরও সামনে এসেছে, যাদের চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে সোনা চোরাচালান চক্রের সঙ্গে। এর আগে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। আমরা মনে করি, সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে।

এপিবিএন সূত্রে জানা যায়, দুবাই থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় আসে এমিরেটসের ফ্লাইট। ইকে ৫৮২ নম্বর এই ফ্লাইটে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে যান জনাথন মুক্তি বারিকদার। বিমানবন্দরের ৭ নম্বর বোর্ড-ইন ব্রিজে এমিরেটসের এই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রী নামানোর জন্য ডকিং করার পর জনাথন ভেতরে ঢোকেন। ঘণ্টাখানেক পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে নেমে আসেন তিনি। এ সময় উড়োজাহাজটি নিরাপত্তায় থাকা এপিবিএনের সদস্যরা জনাথনকে তলস্নাশি করতে চান। কিন্তু তিনি এপিবিএনের সদস্যদের সঙ্গে বাগ্‌?বিতন্ডা শুরু করেন। পরে জনাথনকে বিমানবন্দর এপিবিএন কার্যালয়ে এনে তলস্নাশি করা হয়। তলস্নাশিতে তার পরনে দুই জুতার শুকতলায় ১৬টি করে মোট ৩২টি সোনার বার পাওয়া যায়!

বলা দরকার, বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চোরাচালানকারীরা তৎপর তা বিভিন্ন সময়ের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়। এর আগেও হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। প্যান্টের ভেতর, কম্বলের ভেতর কিংবা বিমানের টয়লেটে, এমনকি যাত্রীর জুতায়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে সর্বত্রই পাওয়া গেছে সোনার বার নানা সময়েই। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েও উদ্ধার করছে সোনার বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে সোনার চোরাচালান। আমরা মনে করি, এই ধরনের ঘটনা রোধে কঠোর হতে হবে। কেননা, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা বিপজ্জনক।

সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া সমীচীন যে, যারা সোনার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তারা রাতারাতি ধনী হতে চায় এবং তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন। কেননা, এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। দেশ থেকে চোরাচালান একেবারেই বন্ধ হোক এমনটি কাম্য। আর সে জন্য সক্রিয় হতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88609 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1