আবারও শিশু ধর্ষণ

অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে কোনো রকম প্রতিকারহীনভাবে। বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের অপরাধ বাড়ার মূল কারণ। শিশু ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয় স্পষ্ট দিক হলো স্থানীয় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত ব্যর্থতা। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে খেলা থেকে তুলে নিয়ে সাতবছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছে তার পরিবার। শিশুটির মা-বাবার অভিযোগ, তারা ওই এলাকার একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন। সকালে শিশুটির বাবা বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন। আর মা রান্না ঘরে কাজ করছিলেন। এ সময় শিশুটি দু'তলাতেই খেলাধুলা করছিল। কিন্তু একপর্যায়ে দ্বিতীয় তলায় তাদের পাশের বাসায় গেলে ওইখানের এক কিশোর তাকে ফাঁকা বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। আমরা কোনোভাবেই সমাজে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি না। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। আমরা এই ধরনের উদ্বেগজনক ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষান্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে; অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়, আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় নির্যাত ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। পাশাপাশি শিশুশ্রম বন্ধের কথা বলা হলেও এ ব্যাপারে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না- যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। যেভাবেই হোক শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে শিশুশ্রম। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই ধরনের বর্বরোচিত নিষ্ঠুর ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্য প্রবণতা রোধ করতে না পারলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে অন্যদিকে শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনবে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন। এটা ভাবতে বিস্ময় জাগে, কোনোভাবেই আমাদের সমাজ যেন আলোর দিকে অগ্রসর হতে পারছে না, কেবল অন্ধকারে খাবি খাচ্ছে। অবক্ষয় যেমন আমাদের সমাজকে দিন দিন গ্রাস করছে। সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কারণেই মূলত এমনটি হচ্ছে। রাষ্ট্রের মধ্যে শৃঙ্খলা না থাকলে সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। যারা সমাজকে, রাষ্ট্রকে পদে পদে কলুষিত করছে, সমাজকে ভারসাম্যহীন ও দূষিত করে তুলছে, সমাজের মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, বিপন্ন করছে শিশুদের জীবন- তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক সুস্থতা আনয়নের পাশাপাশি নতুন সমাজ নির্মাণের জন্য এ ধরনের অপরাধ ও অবক্ষয়কে প্রতিরোধ করতে হবে যে কোনো মূল্যে। এ জন্য ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন এর কোনো বিকল্প নেই।