শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর পদক্ষেপ নিন

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির ১ বছর

নতুনধারা
  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

২০১৯ সালের ২০ ফেব্রম্নয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ভয়াল পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল। চকবাজার পরিণত হয়েছিল এক মৃতু্যপুরীতে, কেড়ে নিয়েছিল ৭১টি প্রাণ। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সেই মর্মান্তিক ঘটনার এক বছর হয়ে গেল। অনেকের মনেই হয়তো দুঃসহ সেই স্মৃতি এখন ধূসর। কিন্তু এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যারা স্বজন হারিয়েছেন তারা আজও কাঁদছেন। প্রিয় মানুষের এমনভাবে চিরতরে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কঠিন।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চকবাজার মৃতু্যপুরীতে পরিণত হওয়ার পর সরকারের উচ্চপর্যায়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- অল্প সময়ের মধ্যেই পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ও দাহ্য রাসায়নিকের দোকান, কারখানা ও গুদাম সরিয়ে নেওয়া হবে। ঘোষণার পর যারপরনাই তৎপরতাও শুরু হয়েছিল। এরপর দিন যত গেছে সেই তৎপরতা ততই কমেছে এবং কমতে কমতে এক সময় থেমে গেছে। কিছুই সরেনি, কিছুই নড়েনি- এমনটি উঠে এসেছে খবরে। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি আমলে নেওয়া জরুরি এবং এই তৎপরতা কেন থেমে গেল সেটিকে সামনে রেখে উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। এটাও বলা দরকার যে, শুধু চুড়িহাট্টাই নয়, ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীতে অগ্নিকান্ডে ১২৪ জনের মর্মান্তিক মৃতু্যর পরও এমনটাই ঘটেছিল। ফলে প্রাণের পর প্রাণ ঝরে, কিন্তু পুরান ঢাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল সরে না- এই পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের তা আমলে নেওয়া অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়।

আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি যে, গত ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রম্নয়ারি চুরিহাট্টা অগ্নিকান্ডের পর রাসায়নিকবিরোধী যে অভিযান শুরু হয়, তা যেমন থেমে যায় এক পক্ষকালের মধ্যেই এবং ২০১৯ সালের ৪ মার্চের পর হয়নি এ সংক্রান্ত আর কোনো অভিযান। অথচ গত ১১ ডিসেম্বরও কেরানীগঞ্জের প্রাইম পেট অ্যান্ড পস্নাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় অগ্নিকান্ডে ২২ জন নিহত হন। সঙ্গত কারণেই এমন ঘটনার ভয়াবহতা আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। জানা গেছে, গত কয়েক বছরে কেমিক্যালের কারণে যত অগ্নিকান্ড ঘটেছে, সব কটিই পুরান ঢাকায়। তথ্য মতে, লালবাগ, চকবাজার, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, বংশাল, কোতোয়ালি, শ্যামপুর ও কদমতলী এই আট থানায় বর্তমানে কেমিক্যালের প্রায় ২৫ হাজার অস্থায়ী দোকান, কারখানা ও গুদাম রয়েছে।

আমরা বলতে চাই, একের পর এক যদি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মানুষ চলে যায় না ফেরার দেশে তবে তা কতটা উৎকণ্ঠার বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা আমলে নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সামগ্রিকভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো আমলে নিতে হবে। কেমিক্যাল গোডাউনের অগ্নিকান্ড থেকে শুরু করে আধুনিক বহুতল ভবন, শপিংমল, কারখানা, বস্তিসহ বিভিন্নভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। আমলে নেওয়া দরকার যে, বিশ্লেষকরা বারবারই বলে আসছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে আমরা মনে করি, পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ও দাহ্য রাসায়নিকের দোকান, কারখানা ও গুদাম সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ানক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89367 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1