কুরিয়ারে মাদক ও অস্ত্র যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে যে, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। এ ছাড়া নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ছে মাদক। বলার অপেক্ষা রাখে না, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বাড়লে তা সন্দেহাতীতভাবেই ভয়ানক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। শুধু শহর নয়- গ্রামপর্যায়ে ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য ছড়িয়ে পড়েছে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। মনে রাখা দরকার, মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে নানা ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং এর নেতিবাচক দিকগুলো এড়ানোর সুযোগ নেই। মাদকের জন্য সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসা, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধের ঘটনাও ঘটছে। সঙ্গত কারণেই এই সামগ্রিক পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কাজনক তা বলাই বাহুল্য। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকার একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ মাদক ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ডিবি থেকে সদ্য বদলিকৃত এসআই আবদুল জলিল মাতবরকে। বুধবার রাতের এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তাকে রিমান্ড চেয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, খবরের মাধ্যমে এমনটিও জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত জলিলের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ ডিবিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় নানা ধরনের অভিযোগ ওঠায় দুই সপ্তাহ আগে তাকে গোপালগঞ্জে বদলি করা হয়। সেখানে যোগদানের পর তিনি ছুটিতে ছিলেন। আমরা মনে করি, একের পর এক যখন মাদকের ভয়াবহতা এবং অবৈধ অস্ত্রের বিষয়টি সামনে আসছে তখন বিষয়টি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। এবার যখন একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ মাদক ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ডিবি থেকে সদ্য বদলিকৃত একজন এসআইকে- তখন বিষয়টি কতটা উদ্বেগের তা বিবেচ্য। প্রসঙ্গত বলা দরকার, এর আগেও এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সঙ্গে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। মিরপুর জোনের ডিসি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে কুরিয়ার সার্ভিস থেকে দারুস-সালাম থানায় ফোন করে একটি পার্সেল থেকে মদের বোতল ভেঙে অ্যালকোহল ছড়াচ্ছে বলে জানানো হয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পার্সেলটি চেক করে অস্ত্র ও গুলি, গাজা-ইয়াবার সন্ধান পায়। আমরা মনে করি, এই ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর শাস্তি নিশ্চিত হোক একই সঙ্গে মাদকের বিস্তার রোধে সার্বিক পদক্ষেপ জারি থাকুক। প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্টদের বিচেনায় নিতে হবে, মাদকের বিস্তার হওয়ার অর্থই হলো পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ানক হয়ে ওঠা যা এড়ানো যাবে না। দেশের তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে নানান শ্রেণি পেশার মানুষ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে- এই বিষয়গুলোকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, মাদক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হলে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবাই, যা কাম্য হতে পারে না। সর্বোপরি বলতে চাই, মাদকের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। কেউ যেন মাদক পাচার করতে না পারে, বিস্তার ঘটাতে না পারে সেই দিকটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নষ্ট হয়ে যায় ভবিষ্যৎ, খুন থেকে শুরু করে নানারকম অপরাধপ্রবণতা তৈরি হয়- এই বিষয়গুলো এড়ানো যাবে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর উদ্যোগ নেবে এমনটি প্রত্যাশিত।