স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকাবাসী

দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকার পাশাপাশি ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবল থেকে মুক্তি পাচ্ছে না ঢাকাবাসী। বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় খারাপ অবস্থানে এসেছে রাজধানী ঢাকা। শুক্রবার সকালে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ২২০, যার অর্থ হচ্ছে এ শহরের বাতাসের মান 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' এবং এ অবস্থায় সবাই মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। ভিয়েতনামের হ্যানয় ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে ২২৬ ও ২১৫ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় প্রথম ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে এ শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। উলেস্নখ্য, নির্মল বায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় বিশ্ব ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প ছিল সেটি পরিবেশ অধিদফতর কীভাবে ব্যয় করেছে, পরিবেশ উন্নয়নে কী ধরনের ভূমিকা রেখেছে, এতে জনগণ কী ধরনের সুফল পাচ্ছে অর্থাৎ পুরো প্রকল্পের টাকা কীভাবে ব্যয় হয়েছে তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিতে অধিদফতরের মহাপরিচালককে তলব করেছিলেন আদালত। আমরা মনে করি এটি একটি যথাযথ পদক্ষেপ। বায়ু দূষণ এখন রীতিমতো নাগরিক বিড়ম্বনা ও আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বায়ু দূষণ মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। বায়ু দূষণ এর ফলে একদিকে পরিবেশ যেমন বিনষ্ট হয় তেমনি প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুকিও বেড়ে যায়। বায়ু দূষণ থেকে রক্ষার জন্য অনেকেই মাক্স্র ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এটাই একমাত্র সমাধান নয়। মূলত বায়ু দূষণ রোধ করতে হবে। বায়ু দূষণ এর ফলে মানব দেহে জন্ম নেয় অনিরাময় যোগ্য নানা রোগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদুষণের ফলে মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃদরোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিস বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া বাযুদূষণ মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ক্ষতিসাধনসহ শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশ ব্যাহত করে। মনে রাখতে হবে, যানবাহনের কালো ধোয়া, মিলকারখানা ইটভাটার কালো ধোয়া বায়ু দূষণ এর প্রধান নিয়ামক। কীভাবে এসব বন্ধ করা যায় এবং মানুষ মুক্ত বায়ু সেবন করতে পারে সেদিকে বিশেষ নজন দিতে হবে। অনেক সময় ধুলো নোংরা আবর্জনাও বায়ু দূষণ এর জন্য দায়ী। পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি এদিকে বিশেষ মনোযোগী না হয় তা হলে জনগণের স্বাস্থ্যঝুকি বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। যারা বায়ু দূষণের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা জনস্বাস্থ্যঝুকি আরো বেড়ে যাবে। আমরা মনে করি যে সব কারণে অতিরিক্ত বায়ু দূষণ হচ্ছে সে সব কারণগুলো চিহ্নিত করে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একুশ শতকে বায়ু দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট এক হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া যায় তা হলে ভবিষ্যতের জন্য বড় ধরনের বিপদ হিসেবে দেখা দেবে। সুতরাং ঢাকাবাসীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন এবং এর কোনো বিকল্প নেই।