নিহত ১৩ সড়ক দুর্ঘটনা কি অপ্রতিরোধ্য?

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সড়কে প্রাণ ঝরছেই। ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের এবং ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, শুক্রবার রাতে এবং শনিবারও স্কুল শিক্ষিকাসহ আরও ১৩ জন নিহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, নাটোর, রাজশাহী ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। লেগুনা-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষ, মোটরসাইকেল থেকে পড়া, ট্রাক ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলির সংঘর্ষ, ট্রাক চাপাসহ বিভিন্নভাবে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, যখন সড়ক পথে দুর্ঘটনার এমন চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে- তখন এই পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিনিয়ত সড়কে কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে এবং ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। মৃতু্যর এই বিভীষিকা এমন, যেন সড়ক পথ একটা মৃতু্যর ফাঁদ! সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নেওয়া এবং সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বেপরোয়া গতির কাছে হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবন, গণপরিবহণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং রেষারেষির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে সড়ককে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করার বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত এটাও আমলে নেওয়া দরকার যে, এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এমন তথ্যও উঠে এসেছিল, সারা দেশে গত বছর ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ৮৫৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০। জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছিল বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, জানা গিয়েছিল ২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল আগের বছর ২০১৮ সালের প্রায় সমান। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আমলে নিতে হবে এবং যত দ্রম্নত সম্ভব এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, মানুষের যাতায়াত যদি নির্বিঘ্ন না হয়, যদি ঘর থেকে বের হয়ে ফিরে আসার নিশ্চয়তা ঝুঁকির মুখে পড়ে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে তবে তার ভয়াবহতা এড়ানোর সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে আর ঝরে যাবে একেকটা তরতাজা প্রাণ, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটাও আমলে নেওয়া দরকার, বিভিন্ন সময়েই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশও সামনে এসেছে নানা সময়ে। বারবার আলোচনায় এসেছে সড়ক পথের ভয়াবহতা। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হচ্ছে না এবং দুর্ঘটনায় বাড়ছে লাশের মিছিল। যা অত্যন্ত পরিতাপের জন্ম দেয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হচ্ছে ক্রমাগত। অথচ সড়ক যদি নিরাপদ না হয় তবে যোগাযোগ সহজ হলেও তার সুফল অনিশ্চিতই থেকে যাবে যা কাম্য নয়। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সড়ক পথের নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি প্রত্যাশিত।