ডেঙ্গুর ঝুঁকি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এর আগে ডেঙ্গুসংক্রান্ত পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের হয়ে দেখা দিয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি ডেঙ্গুসংক্রান্ত এক ধরনের আতঙ্কও ছড়িয়েছে। যদিও চিকিৎসকরা বারবার বলেছিলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, বরং সতর্কতা এবং সচেতনতা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে অন্তত ১০ শতাংশ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ফলে এই বিষয়টি আমলে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, গত ডিসেম্বরে পরিচালিত বর্ষাপরবর্তী জরিপে উঠে আসা প্রতিবেদনের এই চিত্র রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক কর্মশালায় তুলে ধরা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১২ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০ শতাংশ ওয়ার্ডে এডিসের লার্ভার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। তথ্য মতে, মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রম্নটো ইনডেক্স বা সূচকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি একশ' প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। আমরা বলতে চাই, যখন কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন যে, আগের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে তখন বিষয়টি ইতিবাচক। তবে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে অন্তত ১০ শতাংশ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে ঝুঁকিমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। আমরা মনে করি, এটাও আমলে নেওয়া দরকার যে, ঢাকা জুরাইন এলাকায় নির্মিত ফ্লাইওভারের নিচে জমে থাকা পানি হয়ে উঠছে মশার আবাস। মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনন উৎসে নজর দেওয়ার পরামর্শের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। মশার যদি উৎস ধ্বংস না করা হয়, তাহলে শুধু লার্ভিসাইডিং করে মশা কমানো যাবে না। নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে- এমন বিষয়ও যখন সামনে আসছে তখন আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সচেতনতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। আমরা মনে করি, ডেঙ্গুসংক্রান্ত ঝুঁকির বিষয় যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে ডেঙ্গুসংক্রান্ত বিগত দিনের পরিস্থিতিও ভুলে যাওয়া যাবে না। সেই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। মশা নিধন কার্যক্রম বৃদ্ধি, সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাসহ পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে- আগামীতে যেন ডেঙ্গুর বিস্তার না হয় সে জন্য এখন থেকেই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা অপরিহার্য বিষয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যখন এমনটিও জানা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন নির্মাণ এলাকায় মশার উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি পাওয়া গেছে- ফলে এ দিকটি সামনে রেখে অধিকতর নজর দিতে হবে। এ ছাড়া এটাও মনে রাখা দরকার, সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা এবং সার্বিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। মশার বিস্তার রোধে পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে। এ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের পরিবর্তে মানুষ যেন সচেতন হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এডিস মশা বৃদ্ধির স্থান ধ্বংস করতে জনসাধারণের সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি সংশ্লিষ্টদেরও সামগ্রিক পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।