ওষুধ রপ্তানিতে সাফল্য

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

এ অর্জন ধরে রাখতে হবে
বাংলাদেশ বিশ্বমানের ওষুধ উৎপাদন করছে। ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ওষুধ রপ্তানি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ফলে পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ রপ্তানি কারক দেশে পরিণত হয়েছে এ দেশ। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৪০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। দেশের ৯৮ শতাংশ ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে এসব দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ওষুধ শিল্পের স্থানীয় বাজারের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার। দেশে এখন ২৫৭টি নিবন্ধিত ওষুধ কোম্পানি আছে। এর মধ্যে ১৫০টি সক্রিয়ভাবে তাদের কাজ করে যাচ্ছে। এটা দেশের জন্য ইতিবাচক দিক। এই ইতিবাচক সংবাদের মধ্যে দুঃখজনক সংবাদ হচ্ছে, ঢাকা শহরের প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে- যা রোগীর জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে বাজারে ২৩ ধরনের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা দ্বারা এটাই প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, বাজার তদারকির কেউ নেই। আমরা মনে করি, নিয়মিত বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকলে ওষুধের দাম আরো বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ওষুধ কেনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, শিগগিরই দেশের ওষুধ রপ্তানি আয় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১২তম এশিয়া ফার্মা এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প দিনদিন উন্নতি করছে। সরকার ঘোষণা করেছে, এ শিল্প অগ্রাধিকার শিল্প। এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, দেশে বেসরকারিভাবে পরিচালিত ২৬৯টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি প্রায় ২৪ হাজার আইটেমের মেডিসিন উৎপাদন করে থাকে। এর বাইরে সরকারিভাবে উৎপাদিত হয় ১১৭ ধরনের ওষুধ রয়েছে যার দাম নির্ধারণ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। উৎপাদনভিত্তিক ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি বাড়ায় এ খাতের যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এই খাতের উন্নতি বেশ দৃশ্যমান। তবে এভাবে অযৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এভাবে লাগামহীনভাবে যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে তা হলে সাধারণ রোগী, যারা স্বল্প আয়ের এবং বয়সে প্রবীণ অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে। এটা ভেবে দেখা দরকার। যেভাবেই হোক এই শিল্পের মান ধরে রাখতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো তৎপর ও মনোযোগী হতে হবে। পাশাপাশি নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। কারণ এই ধরনের ওষুধ রোগীর জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া বাজারে কয়েক দফা ওষুধের দাম বাড়ানো হলো সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। ফার্মেসিভেদেও দামের পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ বা তিনগুণও রাখা হয়- যা রীতিমতো অন্যায়। আমরা মনে করি, বাজার তদারকির বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে হবে। না হলে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বাড়তেই থাকবে- যা নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়বে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ওষুধের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা দেশের জন্য সুখবর। যে করেই হোক এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।