যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

সড়কে মৃতু্যর বিভীষিকা

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সড়ক দুর্ঘটনা দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। যে কোনো ধরনের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা কাজে আসছে না। সড়কে মৃতু্যর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সপরিবারে নিহত হচ্ছেন অনেকেই। বরযাত্রীসহ বাস দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে মানুষ। স্বজন হারিয়ে মানুষের শোক ও হাহাকারে বাতাস ভারী হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন মানুষ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১২ ঘণ্টায় দেশের ৬ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সাভার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী ও কুমিলস্না জেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উলেস্নখ্য, চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি মাসে পাঁচশ চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচশ ৩৪ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ওই মাসে প্রায় এক হাজার একশ ৬৯ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫৬ দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। নৌপথে নয়টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত ও ৫৬ জন আহত এবং ৬৪ জন নিখোঁজ হয়েছে। এর আগে জানুয়ারি মাসে ৫৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৭ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১৪১ জন। একই মাসে রেলপথে ৪৩টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৫৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জন। এই পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রম্নটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার, মাদক সেবন অবস্থায় যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধির কারণে সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে মূল সড়কের ওপর দিয়ে পথচারীদের যাওয়া-আসাকে। ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের কারণে দিনে দিনে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এ ছাড়া বাসগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা আনতে নগরীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করলে, দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন তারা। \হমনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।