দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক

আবারও শিশু অপহরণ

প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিশুরা নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার শিকার হচ্ছে। ঝুঁকিপূণর্ কাজে যেমন শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে, তেমনি অবলীলায় শিশুদের অপহরণের ঘটনাও ঘটছে। এ ছাড়া নিযার্তন, ধষর্ণ, সহিংসতা ও হত্যার শিকার হচ্ছে শিশুরা যা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। এবার যখন শিক্ষক ছাত্রকে অপহরণ করে টাকা দাবি করার বিষয়টি সামনে এলো, তখন তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলেই আমরা মনে করি। সঙ্গত কারণেই এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সামির নামের একটি শিশু অপহরণের অভিযোগে শিক্ষক মাইনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৩ এর একটি দল। শুক্রবার বিকালে ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে মাইনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, সামিরকে প্রাইভেট পড়াতেন মাইনুল। তাদের পরিবারের সঙ্গে ভাব হয়ে যায় মাইনুলের। পড়ানোর সুবাদে শিশু সামিরও মাইনুলকে পছন্দ করত। পরে চাকরি নিয়ে মাইনুল নোয়াখালীতে চলে গেলেও ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। র‌্যাব-৩ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার বলেছেন, সামিরকে অপহরণের পরিকল্পনা করে ঈদের পরদিন ঢাকায় আসেন মাইনুল। বিকালে খেলার সময় সামিরকে ফুসলিয়ে খেলা থেকে সরিয়ে আনেন। এরপর ঢাকার একটি বাসায় রেখে মাইনুল সামিরের বাবা মাইক্রোবাসচালক কাওসারের মাইক্রোবাসে একটি চিরকুট ফেলে যান। চিরকুটে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে কাওসার র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মাইনুল ফোন করে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন আর টাকা দিতে রাজি হলে মাইনুল বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আসতে বলেন কাওসারকে। সেখানে মাইনুলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। আমরা বলতে চাই, একজন প্রাইভেট শিক্ষক যখন ছাত্রকে অপহরণ করে টাকা দাবি করছে, তখন এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এর আগেও নানা সময়ে শিশুরা অপহরণের শিকার হয়েছে, এমনকি অপহরণ করার পর হত্যা করা হয়েছে শিশুকে। কোনো কোনো পরিবার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। ফলে সমাজে যখন একের পর এক অপহরণসহ নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে, তখন পরিস্থিতি আমলে নেয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, এ ধরনের ঘটনা রোধ না হলে তা শুধু বতর্মান নয় বরং আগামী দিনের জন্যও হয়ে উঠবে অত্যন্ত ভয়ানক যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যখন একটি শিশুকে অপহরণ করা কিংবা অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করার ঘটনা ঘটে, বা বড়দের বিরোধের জের ধরে শিশুকে বলি হতে হয়, নিরপরাধ শিশুকে নানাভাবে নিযাির্তত হতে হয়, তখন এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা কতটা তা অনুধাবন করতে হবে। আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎÑ ফলে শিশুদের জীবনে এমন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি যেন নেমে না আসে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনে সবোর্চ্চ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সবোর্পরি বলতে চাই, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে অপহরণের ঘটনা ঘটছে। যদি একটি স্বাধীন সাবের্ভৗম রাষ্ট্রে কাউকে অপহরণ করে টাকা দাবি করা হয়, কোনো কোনো ঘটনায় অপহরণের পর হত্যা করা হয় তবে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, এই ধরনের ঘটনাগুলো একের পর এক কেন ঘটছে সেটি খতিয়ে দেখা। মানুষের মধ্যে লোভ-লালসা, ক্রোধ, নিষ্ঠুরতা এসব বৃদ্ধির কারণগুলো শণাক্ত করাও জরুরি। একইসঙ্গে কোনোভাবেই যেন অপরাধীরা ছাড় না পায় সেটিও আমলে নিতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।