মুজিববর্ষে প্রত্যাশা: স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক

বঙ্গবন্ধু আছেন এবং থাকবেন বাঙালির মনন, চেতনা, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় হয়ে। বাস্তবে ফুল ফুটুক, সৌরভ ছড়াক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে। জয় হোক মানবতার, জয় হোক সভ্যতার।

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০

আমিনুল হক চুন্নু
প্রতিটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে থাকে অনেক আত্মত্যাগের ইতিহাস। স্বাধীনতার জন্য রক্ত, জীবন, সম্ভ্রম দিতে হয়। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করতে হয়। ১৯৪৭ সাল ১৪ আগস্ট, ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশ বিদায় নিয়ে চলে গেল। ভারত শেষ পর্যন্ত দুটি দেশ হলো। ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান পূর্ব-পশ্চিম নামে দুইডানা নিয়ে উড়লেও তাতে নির্মল প্রাণজুড়ানো বায়ুর চেয়ে আগুনের হলকা ছিল বেশি। কার্যত পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত হয়। ব্রিটিশ বেনিয়ারা বাণিজ্যের নামে ভারতবর্ষে তাদের শাসন কায়েম করে ২০০ বছর ভারতের সম্পদ, সুখ, স্বাধীনতা সবই লুটে নেয়। বিশ্বের অন্য অনেক দেশের মতো ভারত তাদের বিশাল এক উপনিবেশে পরিণত হয়। ২০০ বছর লড়াই-সংগ্রামসহ জীবনদান, নিপীড়ন-নির্যাতন সয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে পূর্ব পাকিস্তানও ঠিক তেমনি পরিণতির মুখোমুখি দাঁড়ায় পাকিস্তানের অংশ হয়ে। সেই ১৯৪৭ সালের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ এক মুহূর্তের জন্যও স্বাধীনতার স্বাদ নিতে পারেনি। পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনা, অবজ্ঞা-অবহেলা-অসম্মানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই বাঙালিদের আন্দোলন সংগ্রামে নামতে হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সংগ্রাম আর জীবন দান করতে করতে অবশেষে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ করে ৩০ লাখ বাঙালি জীবন দিয়ে দুই লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তেমন আগুন ঝরানো ছিল না। তবে এটা ঠিক, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার মধুমতী নদীর পাড়ে টুঙ্গিপাড়ায় একটি আগুনের ফুলকির জন্ম হয়েছিল। সেই আগুনের ফুলকি বাঙালির প্রাণে ছোঁয়া লাগিয়েছিল ১৯৭১-এর মার্চে। সে কারণেই ১৯৭১ আমাদের আগুন ঝরানো মাস। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবন ও কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব সঠিক গুণাবলি বঙ্গবন্ধুর জীবনকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী পাঠ করলে জানা যায়, তিনি জন্মই নিয়েছিলেন জীবনটা মানুষের তরে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। সারাটা জীবন পথ হাঁটলেন সাধারণ মানুষের চলার পথ মসৃণ করতে। কী পরম মমতায় মানুষকে বুকে টেনে নিতেন- তা ভাষায় প্রকাশ করা দুঃসাধ্য। ভদ্রলোকদের দিকে তিনি আঙুল তুলে বলতেন- কার টাকায় ডাক্তার সাব! কার টাকায় ইঞ্জিনিয়ার সাব! কার টাকায় রাজনীতিবিদ সাব! কার টাকায় চেয়ারম্যান ও এমপি সাব! কার টাকায় সব সাব! ওদের সম্মান করে কথা বলবেন। যারা রোদে-বৃষ্টিতে ভিজে মাঠে ফসল ফলায়, যারা কারখানায় ঘাম ঝরিয়ে উৎপাদন করে, কামার-কুমোর, কুলি-মজুর-ধুলো মাটির মানুষের প্রতি কী গভীর শ্রদ্ধা! কী আন্তরিক সম্মান প্রদর্শন। সাদা কলার ওয়ালাদের, ওদের প্রতি সম্মান জানাতে কী কঠোর নির্দেশনা। জাতির জনকের ভাবনার জগৎটাই ছিল সেই সব মানুষকে নিয়ে, যারা দেশকে স্বাধীন করার মূলশক্তি- মুক্তিযোদ্ধা। যারা দেশ বিনির্মাণের প্রধান। শ্রমিক, যারা শ্রমের নায্যমূল্য থেকে শুধু বঞ্চিত হয় না, মালিকদেরও নানামুখী নিপীড়ন-নির্যাতনেরও শিকার হয়। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপনে বাধ্য হয়। প্রতিকার পায় না। এই মানুষদের ভাবনাই ছিল জাতির জনকের অন্তরের মূল ভাবনা। এইসব হতভাগা মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক নিরাপদ ভরসা ও আশ্রয়স্থল। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও বঙ্গোপসাগরের কূলে বসবাসকারী এই জনপদের ইতিহাসে সর্বোত্তম আসনে অধিষ্ঠান তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তিনি একটি পিছিয়ে পড়া জাতিকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করেছেন। দিয়েছেন স্বাধীনতা। বিশ্ব ইতিহাসে যার দৃষ্টান্ত বিরল। তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ লুৎফুর রহমান ও সায়েরা খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ পৃথিবীতে এসে অল্প দিনেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরে তিনিই বাংলার আকাশের আরেক ধূমকেতু। প্রতি বছর ১৭ মার্চ আসে একজন রাজনৈতিক কবির পঙ্‌ক্তিমালাকে গভীর শেষ প্রেমের বিশ্বাসে কণ্ঠে নিতে, বাঙালির অসমাপ্ত সাংস্কৃতিক মুক্তি সংগ্রামের অভিযাত্রাকে এগিয়ে দিতে। কিন্তু ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সারা পৃথিবী স্মরণ করবে শেখ মুজিবকে তার শততম জন্মদিনে। শেখ মুজিব শুধু বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা নন, তিনি বিশ্বের কাছে একটি অনুপ্রেরণার নাম। ১৯৩৯ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময়ই শেখ মুজিব ছাত্রদের সংগঠিত করে স্কুলের ছাদ সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন- স্কুল পরিদর্শনরত তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক এবং সোহরাওয়ার্দীর কাছে। নেতৃত্বের এই হাতে খড়ি এবং দাবি আদায়ের অদম্য স্পৃহাই পরবর্তীতে তাকে বসিয়েছে বিশ্বনেতার আসনে। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ানো হয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। পরিষদের পক্ষে ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে সভায় স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হয়। সেই সভায় বঙ্গবন্ধু মুজিব প্রধান অতিথি হয়ে আসেন। তিনি জনগণকে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেন। অবশেষে আসে সেই ৭ মার্চ। ওই দিনের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৮ মিনিট ১১ সেকেন্ডের বক্তব্যে পাকিস্তানের ইতিহাস বর্ণনা করেন এবং কীভাবে শোষণ ও অন্যায় আমাদের প্রতি করেছে, সব কিছু ব্যাখ্যা করেন। পরোক্ষভাবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির ডাক দেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কাছে তিনি যাতে 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' নেতায় পরিণত না হন সেজন্য ৪ দফা দাবিও পাকিস্তানি শাসকদের কাছে তুলে ধরেন। শেষ পর্যন্ত সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয় খান, চতুর ভুট্টোও ঢাকায় আসেন। কিন্তু আলোচনা ব্যর্থ হয়। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত জনগণের উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগেই পরিস্থিতি আঁচ করে তিনি চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে 'স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র' পাঠিয়ে দেন ওয়্যারলেস মারফত। ১৯৭১-এর ৭ মার্চের ভাষণে যা বলেছিলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ বলেছিলেন- পৃথিবীতে মানুষ যতদিন পরাধীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে, ৭ মার্চের ভাষণ প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। মানুষের সংগ্রাম শেষ হয়নি, শোষণের বিরুদ্ধে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় প্রাণ যতদিন চলমান থাকবে, ৭ মার্চের ভাষণ ততদিন দেদীপ্যমান থাকবে উজ্জ্বল সূর্যের মতো। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ আমাদের জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। সবার দৃষ্টি তেজগাঁও বিমানবন্দরের দিকে। তাকে নিয়ে ব্রিটিশ বিমানটি এখানেই এসে নামবে। নয় মাস ষোল দিন আগে এই বিমানবন্দর দিয়েই তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পাকিস্তানে। আজ এখানেই বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পা রাখবেন স্বাধীন দেশের মুক্ত নাগরিক হিসেবে। নিজের দেশ, নিজের প্রতিষ্ঠা করা স্বাধীন দেশে বিজয়ীর বেশে তার এই ফিরে আসাকে ঘিরে দুদিন ধরেই উদ্বেলিত ছিল আপামর মানুষ। ৮ জানুয়ারিতেই খবর এসেছিল তার মুক্তির। পাকিস্তান থেকে তখন বাংলাদেশে আসার সরাসরি কোনো যোগাযোগ ছিল না। ভারতের সঙ্গেও ছিল তাদের বিচ্ছিন্নতা। তাই বঙ্গবন্ধু বেছে নিয়েছিলেন লন্ডন হয়ে ঢাকায় আসার পথ। লন্ডন হয়ে আসতে দুদিন সময় লেগে গিয়েছিল। সেখানে তাকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয় এবং তাকে দেওয়া হয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির মর্যাদা। সরকারি সফর নয়, তবুও মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হওয়া একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ভাবমূর্তি ব্রিটিশদের কাছে ভিন্ন মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিল। তাই সে মর্যাদা তারা বঙ্গবন্ধুকে দিতে কার্পণ্য করেনি। তিনি বক্তব্য দিয়েছেন এক সাংবাদিক সম্মেলনে, সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মিলিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথের সঙ্গে। ১০ জানুয়ারি প্রতু্যষে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্সের একটি বিশেষ বিমানে রওনা হয়েছেন ঢাকার উদ্দেশে। পথে যাত্রা বিরতি করেছেন। নয়া দিলিস্নতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ডি ডি গিগি এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে তাকে অর্ভ্যথনা জানিয়েছেন। ওইদিন দুপুর ২টায় দিলিস্ন থেকে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমান বাংলার মাটি স্পর্শ করলে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত। বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম.এ.জি. ওসমানীকে জড়িয়ে ধরে অশ্রম্নসিক্ত নয়নে আবেগময় চেহারায় জাতির প্রতি, জনগণের প্রতি অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছিলেন। বিকেল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে ভাষণ দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু আবেগ আপস্নুত হয়ে বলেছিলেন, 'নেতা হিসেবে নয়, ভাই হিসেবে আমি আমার দেশবাসীকে বলছি- আমাদের সাধারণ মানুষ যদি আশ্রয় না পায়, খাবার না পায়, যুবকরা যদি চাকরি বা কাজ না পায় তাহলে আমাদের এ স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে, পূর্ণ হবে না।' আমাদের এখন তাই অনেক কাজ করতে হবে। বক্তৃতা দানকালে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ বারবার বাকরুদ্ধ হয়ে আসছিল। রুমাল দিয়ে তিনি চোখ মুছে নিচ্ছিলেন। জাতির জনক রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১৭ মিনিট জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন, যা ছিল জাতির জন্য দিক-নির্দেশনা। ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ার জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে সংগ্রামের কথা বঙ্গবন্ধু উচ্চস্বরে উচ্চারণ করে বলেন, বিশ্ব আজ দু'ভাগে বিভক্ত। একটি হলো শাসক গোষ্ঠী, অন্যটি হলো শোষিত গোষ্ঠী। আমি শোষিতদের পক্ষে। এটা শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে নয়। এটা সারা বিশ্বকে নিয়ে। সম্মেলন শেষ হওয়ার পর কায়রোর আল আহরাম পত্রিকা সম্পাদকীয় কলামে যা লেখা হলো, বাংলায় তার অর্থ হলো- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটি মাত্র গুলি না ছুড়ে সারা বিশ্ব মুসলিমদের মন জয় করে নিলেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন আজ সারা বিশ্বে। তাই তিনি বিশ্ববন্ধু কেন নন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে যে বাংলাদেশের অভু্যদ্বয় ঘটেছিল ১৯৭১ সালে তার তিন বছর পরে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য দেশের মর্যাদা পায়। এর আট দিন পর ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু। অধিবেশনে সভাপতির আসনে ছিলেন আলজেরিয়ার মুক্তি সংগ্রামের নেতা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীমুক্তিযোদ্ধা আবদেল আজিজ বুতেফ্রিকা। বাঙালির মহানায়ক আরোহণ করেন বক্তৃতামঞ্চে। প্রথম এশীয় নেতা। মুহুর্মুহু করতালি। বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা শুরু করেন মাতৃভাষা বাংলায়। যে ভাষার জন্য ঢাকার রাজপথে বাঙালি বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। সেই ভাষায় প্রথম ভাষণ জাতিসংঘে। বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে আবার ঠাঁই করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু আজ আর শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি বিশ্বের নেতা, বিশ্ববন্ধু। বঙ্গবন্ধু মৃতু্যঞ্জয়ী। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কাঠামোর সকল স্তরে, জাতীয় পতাকায়, জাতীয় সংগীতে, শস্যখেতে দোল খাওয়া ফসলে, নদীর কলতানে, পাখির কুজনে তিনি আছেন এবং থাকবেন। বঙ্গবন্ধু আছেন এবং থাকবেন বাঙালির মনন, চেতনা, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় হয়ে। বাস্তবে ফুল ফুটুক, সৌরভ ছড়াক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে। জয় হোক মানবতার, জয় হোক সভ্যতার। \হসফল হোক মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপন। অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাক আমাদের মাতৃভূমি। ২০২০ সালটি একান্তভাবেই মুজিববর্ষ। উপমহাদেশে অশোকবর্ষের পর আর কোনো বর্ষ নেই। যুক্ত হলো মুজিববর্ষ। আমাদের গর্বের ও গৌরবের সীমা নেই। আমিনুল হক চুন্নু: প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, নুরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সিলেট