মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন উন্নয়নের সুফল পৌঁছে যাক সর্বত্র

নতুনধারা
  ১৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০

দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত দেশের প্রথম এই এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এর সুফল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আধুনিক মহাসড়কের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রেখে এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে ক্রসিং এড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করতে ৪৪টি কালভার্ট, ১৯টি আন্ডারপাস, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু, পাঁচটি ফ্লাইওভার, দুটি ইন্টারচেইন, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ান হাইওয়ে করিডোরের অন্তর্ভুক্ত ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী-মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশে এই এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত হবে পদ্মা সেতুর মধ্যদিয়ে। দেশের অর্থে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে, সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকলে বাংলাদেশে যেমন বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব, তেমনিভাবে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের মধ্যদিয়েও বাংলাদেশ তার সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। যা সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।

গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ হলে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা আসা-যাওয়ায় এক ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। অন্যদিকে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মনে করেন, এই সড়ক ইউরোপের অনেক সড়ককে হার মানাবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড। তথ্য মতে, ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার, আর পদ্মা সেতুর অন্য পাড়ে পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা-পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দাদের ঢাকা যাতায়াতের পথও সুগম হলো।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ছয় জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষ সরাসরি এই এক্সপ্রেসওয়েতে উপকৃত হবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য। আর একপ্রেসওয়ে উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েও সরে যাওয়ার পর পদ্মার মতো খরস্রোতা নদীতে সেতু নির্মাণের এতবড় ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজের টাকায় বড় অবকাঠামো গড়ার আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুধু সড়কপথ নয়- নৌপথ, রেল এবং সেই সঙ্গে আকাশপথ সব দিকেই আমাদের লক্ষ্য আছে। আমরা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করে দিচ্ছি, যা মানুষকে আরও উন্নয়নের সুযোগ দেবে; জীবনমান উন্নত করার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের দিকে তাকালে এটাই স্পষ্ট হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সেসব সিদ্ধান্তের সফল বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে দেশ এগিয়ে চলেছে।

স্মর্তব্য যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে হলে, স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে যোগাযোগের পথটাও সুগম হওয়া বাঞ্ছনীয়। আবার এটাও অস্বীকার করা যাবে না- নদী, খাল, বিল দিয়ে ঘেরা নদীমাতৃক বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ, উন্নয়ন করা বা যোগাযোগব্যবস্থা চালু করা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। তবে সরকার যে ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন করে চলেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আর সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন করে চলেছে তাও আত্মসম্মানের। আত্মবিশ্বাস থেকেই এটি অর্জন করা গেছে বলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উলেস্নখ করেছেন।

আমরা মনে করি, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে, উন্নত করে, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশের পথে হাঁটছে। প্রত্যাশা থাকবে দেশের এই অগ্রগতি অব্যাহত থাক। পাশাপাশি উন্নয়নের এই সুফল পৌঁছে দিতে হবে দেশের সর্বত্র। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক এটাই আমাদের চাওয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<92389 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1