বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নানা উদ্যোগ তৎপরতায়ও কমানো যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিনই বাড়ছে সড়কে মৃতের সংখ্যা। সড়ক দুর্ঘটনা দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। সড়কে মৃতু্যর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সপরিবারে নিহত হচ্ছেন অনেকেই। গত শনিবারও মৃতের এ সারিতে যুক্ত হয়েছেন আরও ১২ জন। দেশের সাত জেলার সড়কে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ফকিরহাটে বাস ও ট্রাক সংঘর্ষে পাঁচজন, ময়মনসিংহে দুই ভাই, সাতক্ষীরায় এক নারী, পাবনায় এক শিশুসহ গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জে একজন করে নিহত হয়েছেন। পরিবহণ চালক বিশেষ করে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ চালকদের বেপরোয়া মনোভাব সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে উলেস্নখ করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেছেন, পরিবহণ চালকদের অন্যায্য দাবির মুখে নতুন সড়ক পরিবহণ আইন শিথিল করার ফলে চালকদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের ব্যাপারে তাদের ছাড় দেওয়ায় আগে সড়কে যত মামলা হতো, যত টাকা জরিমানা হয়েছে, নতুন আইন প্রয়োগ করার পরে মামলা ও জরিমানা কমে গেছে। এর ফলে সড়কের শৃঙ্খলাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে। উলেস্নখ্য, চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি মাসে পাঁচশ চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচশ ৩৪ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ওই মাসে প্রায় এক হাজার একশ ৬৯ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৫৬ দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে নয়টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত ও ৫৬ জন আহত এবং ৬৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর আগে জানুয়ারি মাসে ৫৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৭ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১৪১ জন। একই মাসে রেলপথে ৪৩টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৫৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জন। এই পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রম্নটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার, মাদক সেবন অবস্থায় যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধির কারণে সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ঝুঁঁকিপূর্ণ পারাপারের কারণে দিনে দিনে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এ ছাড়া বাসগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা। মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।