অতিরিক্ত পণ্য কিনে মজুত

বাজার অস্থিরতা রোধ করতে হবে

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে নানা ধরনের আশঙ্কা, অস্থিরতা বাড়ছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতেও বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এমন আশঙ্কাও আলোচনায় আসছে যে, করোনাভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পণ্য মজুত করলে স্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতি বিঘ্নিত হতে পারে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনাভাইরাসের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি- আর এমনটি জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্যের মজুত যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। এ জন্যই অন্য বছরের তুলনায় এবার ২৫-৩০ শতাংশ পণ্য বেশি রয়েছে। ফলে আতঙ্কিত না হয়ে ক্রেতা হিসেবে স্বাভাবিক ক্রয় করলে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হবে না বলে জানা গেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই এটা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং সচেতনতার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। উলেস্নখ্য, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় জনগণ আতঙ্কিত হয়ে গেছেন। তারা হঠাৎ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পণ্য কিনছেন। তাই গত দুই দিনে খুচরা বাজারে দামে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে পাইকারি বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। এ ছাড়া আমরা বলতে চাই, যে কোনো পণ্যে মজুত-সরবরাহ কম নেই- এমন বিষয়কে সামনে রেখে প্রত্যেকের সচেতন হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। কেননা, অতিরিক্ত পণ্য কিনলে তাতে করে বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে, আর এমনটি হলে তার প্রভাব ইতিবাচক হবে না। এ ছাড়া অহেতুক অস্থিরতা তৈরি না করার বিষয়টিও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন। জানা গেছে, এবার অন্য বছরের চেয়ে আমদানি ২৫-৩০ শতাংশ বেশি হয়েছে। ফলে আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে সামাল দিতে সংশ্লিষ্টদের যেমন কার্যকর উদ্যোগ জারি রাখতে হবে, তেমনি সবার সচেতনতার বিষয়টিও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। লক্ষণীয় যে, এমন বিষয়ও জানা গেছে, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে টিসিবি চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ কম দামে বিক্রি শুরু করেছে। আসন্ন রমজানেও অন্য বছরের তুলনায় ৭-১০ গুণ পণ্য নিয়ে মাঠে থাকবে টিসিবি। এ ছাড়া চলতি বছরে দেশে ৩ কোটি ৮৭ লাখ মেট্রিক টন চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানির পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে সয়াবিনের বাজারদর ৮৮-৯২ টাকা প্রতি লিটার- যা বিগত এক মাসের তুলনায় কিছুটা বেশি। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ায় কিছু দিনের মধ্যে দেশীয় বাজার দর কমে আসবে এমন আশাবাদও উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকতে হবে- যেন বাজারে কোনো ধরনের অস্থিরতা তৈরি না হয়, গুজবের কারণে যেন মানুষের জীবন বিপর্যস্ত না হয়। যেহেতু মজুত পর্যাপ্ত বলে জানা যাচ্ছে, ফলে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করে বাজারে অস্তিরতা তৈরি করলে তার ফল সবার ওপরই পড়বে। সঙ্গত কারণেই আত্মসচেতনতার বিষয়টি জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেও মানুষকে খেসারত দিতে হয় এবং সাধারণ ক্রেতাকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও এসেছে বিভিন্ন সময়ে। আর যখন করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বেই বিপর্যস্ত পরিস্থিতি ছড়িয়ে পড়ছে- এমতাবস্থায় যদি দেশের বাজারে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করে মজুত করার প্রবণতা তৈরি হয় তবে বিষয়টি সুখকর হবে না। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।