দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

চাল পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হঠাৎ করেই আবার বেড়েছে চালের দাম। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভোক্তাদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়ে গেছে খুচরা পর্যায়ে। আবার পাইকারি বাজারে বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। অথচ গুদামে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। একইসঙ্গে বাজারগুলোতে চালের সরবরাহও ভালো। কেবল কী চালের দাম! এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে পেঁয়াজের দামে স্বস্তি এসেছিল। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪০ টাকায়। অথচ গতকাল থেকে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে চাল ও পেঁয়াজের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে এটা বলাই বাহুল্য। ব্যবসায়ীদের মানসিকতা এমন যে, তারা পেঁয়াজের দাম আবারও ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় উন্নীত করতে চায়। অথচ চালের মতোই বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট নেই। পেঁয়াজের এখন ভরা মৌসুম। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। একইভাবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের। বিশ্বব্যাপী মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করেছে করোনাভাইরাস। অন্তত ১৮৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতু্যও। আক্রান্তও দ্রম্নতগতিতে বাড়ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশেও ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্ত হয়েছে এ পর্যন্ত ২৪ জনের। এর মধ্যে দুজনের মৃতু্য হয়েছে। বিশ্বব্যাপী মৃতু্য হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মানুষের। সারা বিশ্বে আড়াই লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতি যখন এমন বাংলাদেশের পরিস্থিতিও ঝুঁকিপূর্ণ। এর অর্থ এই নয় যে, এমন নাজুক পরিস্থিতিকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেবে এবং জনগণকে জিম্মি করবে। এটা গর্হিত অপরাধ। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে কোনো ধরনের খাদ্য সংকট নেই। তা হলে বাড়ছে কেন? সঠিক সরকারি নজরদারির অভাবেই বাজারে চাল পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে আরও সক্রিয় করতে হবে। আমরা মনে করি, হঠাৎ চাল পেঁয়াজের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি, তাদের হীন লোভী মানসিকতা। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। যেমন তারা ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছিল পেঁয়াজের দাম, তখন প্রতি কেজির দাম উঠেছিল ২৫০ টাকা। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্পআয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। তাদের পরিবারে অধিকসংখ্যক পোষ্য থাকায়, চালের পরিমাণও বেশি লাগে। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ঠিকমতো কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা না হলে যেকোনো সময় দাম বেড়ে যেতে পারে। অতীতের বাজারকেন্দ্রিক সংস্কৃতি আমাদের তা-ই স্মরণ করিয়ে দেয়। কার্যকর ও পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে অন্যান্য নিত্যপণ্যসহ চাল, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে।