ইতিহাসের একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, যারা নির্যাতিত-নিপীড়িত গণমানুষের সার্থক প্রতিনিধি হিসাবে স্বাধীন জাতি, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতির জনকের অভিধায় অভিসিক্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশের জীবনে নেমে এসেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, ঘোর অমানিশা। ভারতের গান্ধী থেকে বঙ্গবন্ধু, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণ থেকে আমেরিকার আব্রাহাম লিংকন, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মুক্তির প্রতীক মার্টিন লুথার কিং প্রমুখ।
বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বছর হলো- ২০২০ সাল। বাঙালি জাতির কাছে বর্তমান বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ বছরই ১৭ মার্চ পালিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার, স্বাধীনতার মহানায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। বর্তমান বছর মুজিববর্ষ হিসেবে পালন করবে বাঙালি জাতি। জাতি স্মরণ করবে মুজিবের সংগ্রামী জীবন ত্যাগ, তিতিক্ষা, নীতি, আদর্শ। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর কীর্তি স্মরণ করা বর্ষ 'মুজিববর্ষ'। স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবিস্মরণীয় অবদান জাতির কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, বর্তমান রাষ্ট্রপতি নরেন্দ্র মোদি. জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান রাষ্ট্রপতিসহ ১৮ জন বিশিষ্ঠ ব্যক্তি মুজিববর্ষের আয়োজনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে বহুলোকের প্রাণহানির কারণে মুজিববর্ষের মূল আয়োজনে বহু মানুষের সমাবেশ ঘটবে এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনার কারণে প্যারেড গ্রাউন্ডে মূল আয়োজন স্থগিত করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্য আতিথিরাও আসেননি। মূল আয়োজন পরে অনুষ্টিত হবে। তবে সংক্ষিপ্ত আকারে মুজিববর্ষ পালিত হয়। এ দেশের ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তার গৌরবময় ভূমিকা বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। সাধারণ মানুষের স্বপ্ন স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে কীভাবে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন। কেউ কি কোনো দিন ভেবেছিল শেখ পরিবারে জন্ম নেয়া খোকা নামে এ ছেলেটি বাঙালি জাতির লড়াই সংগ্রাম, স্বাধীনতায় নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর ত্রাণকর্তা, মুক্তির দিশারী হবেন? গভীর দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দক্ষতা, প্রজ্ঞা সীমাহীন আত্মত্যাগ, সর্বোপরি জনগণের প্রতি তার অতুলনীয় মমত্ববোধ ভালোবাসার কারণে ক্রমান্বয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তার সংগ্রামময় বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন তাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বাংলার জনমানুষের মহান নেতার আসনে। বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনে তার সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা, জেল, জুলুম, নির্যাতন কারাবন্দি ইতিহাসে তাকে জাতির পিতার অভিধায় অভিসিক্ত করেছে। আজ সারা বিশ্বে তার বড় পরিচয় বাঙালি জাতির পিতা। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পেয়েছে একটি পতাকা, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, মানচিত্র, সংবিধান এবং স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে একটি ঘুমন্ত জাতিকে জাগাতে পেরেছেন। তার অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার দ্বারা একটি প্রচন্ড গণআন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন। তার রাজনৈতিক দক্ষতা, প্রজ্ঞা, মেধা, প্রধানমন্ত্রী তার সমন্বয় ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা একটি সমৃদ্ধশালী আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীন দেশ পেতাম না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা নিজেকে পরিচয় দিতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তার সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। শিখিয়েছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন এক অসাধারণ সাহসী যোদ্ধা নেতা। এই রকম নেতা যুগে যুগে জন্মায় না। তার সঙ্গে কেবল তুলনা চলে মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন, ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মতো বিশ্ববরেণ্য স্বাধীনতা স্থপতি ও নেতাদের। তিনি আমাদের একটি পতাকা, মানচিত্র, স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। সারা বিশ্বে স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি পরিচয় অর্জন করেছেন। বাঙালি জাতি তার কাছে ঋণী।
বাঙালির হাজার বছরের দুঃখ-বেদনা অত্যাচার, নির্যাতন, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ঐতিহ্যকে বঙ্গবন্ধু নিজের চেতনায় আত্মস্থ করেছেন। তার কণ্ঠে বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছে। শুধু বাংলাদেশই নয়- বিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত, শান্তিকামী মানুষের সার্থক প্রতিনিধি ছিলেন বঙ্গবন্ধু। শেখ মুজিব বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রধান প্রবক্তা ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। বঙ্গবন্ধুর বড় কৃতিত্ব একটি ভাষাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন 'জাতীয় শিশু দিবস' হিসাবেও পালিত হয়। ২০২০ সালে ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী যথাযথভাবে শুধু বাংলাদেশই উদযাপন হয়নি উদযাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে পালন করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী
শেখ মুজিব বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রধান প্রবক্তা ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। বঙ্গবন্ধুর বড় কৃতিত্ব একটি ভাষাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। আজ সারা বিশ্বে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় জাতির পিতা হিসেবে। শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন ছিল শাসন-শোষণের অবসান ঘটিয়ে বাঙালির জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করেন। তার রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তার হাত ধরে তিনি রাজনীতিতে এসে বাঙালি জাতির জন্য একটি ভাষাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে তিনি বিশ্বে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। সে ৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১'র মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি ছিলেন বাঙালির মধ্যমণি। বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক অনেক রাজনীতিবিদ ছিলেন কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাদুকর। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। স্বাধীনতার বাঁশি বাজিয়েছেন আর সমগ্র জনগোষ্ঠী মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকে অনুসরণ করেছে। রক্ত দিয়েছে, তার কথায় উঠেছে, বসেছে, হেসেছে, কেঁদেছে। তাকে বাদ দিয়ে বিগত ২৩ বছরে পাকিস্তানের শাসন, শোষণের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস রচিত হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যেন একই সূত্রে গাঁথা। তার প্রচন্ড সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। তাই তিনি শুধু একজন মানুষ হিসেবেই নয়- রাজনৈতিক দর্শনের প্রশ্নেও গোটা জাতিকে এমনভাবে এক কাতারে নিয়ে এসেছেন যা ইতিহাসে খুবই বিরল ঘটনা। তার মৃতু্যর পর রাজনৈতিক দর্শন সাময়িকভাবে বিক্ষিপ্ত হলেও সে দর্শন, আদর্শ আজও অধিকাংশ বাঙালিকে দারুণভাবে আলোড়িত করে।
মুজিবের আপসহীন নেতৃত্ব রাজনৈদিক দূরদর্শিতা, আদর্শ ও মহিমা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিসিক্ত হয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির অভিধায়। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে তিনি পুনর্গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন মূলত তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, কঠোর পরিশ্রম ও দেশের প্রতি অকৃতিম ভালোবাসার কারণে। সাফল্য, ব্যর্থতা নিয়েই মানবজীবন। শেখ মুজিব তার ঊর্ধ্বে নন। তার জীবনে সাফল্যের যেমন সুউচ্চ পাহাড় সৃষ্টি হয়েছিল তেমনি ব্যর্থতার পরিমাণও নগণ্য নয়। তবে সবচেয়ে বড় কথা তিনি একটি ঘুমন্ত জাতিকে জাগ্রত করতে পেরেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন অধিকার আদায়ের ভাষা। তার দৃঢ় রাজনৈতিক ভূমিকা দেশকে স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ সোপানটিতে পৌঁছে দেয়। তাই একথা আমাদের স্বীকার করতে হবে, কিছু ব্যর্থতা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদানের কাছে ম্স্নান। এমন মহান ব্যক্তি যুগাবতার অনেক জাতির ভাগ্যে জোটেনি। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধান প্রণয়ন, মানচিত্র, ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার, দেশ পুনর্গঠনের সফলতার ইতিহাসে তিনি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার সাহসী দেশপ্রেম, আপসহীন নেতৃত্ব পরবর্তী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে। একটি সাধারণ পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা আপসহীন চরিত্র কীভাবে জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে নেতৃত্ব দিয়ে অসাধারণ চরিত্রে পরিণত হয় তা নতুন প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয় ও বিস্ময়করও বটে। তার মতো একজন সংগ্রামী নেতাকে আমরা পেয়েছিলাম বলেই স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে বঙ্গবন্ধুকে তাদের নিজস্ব বলয়ে রাখতে চান তা মোটেও ঠিক নয়। আমাদের মনে রাখা উচিত মুজিব কোনো দলের নেতা বা সম্পদ নয়। তিনি জাতীয় নেতা, জাতীয় সম্পদ। তাই সব ব্যক্তি ও সংগঠনের উচিত হবে এ মাপকাঠিতে তাকে মূল্যায়ন করা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটা দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর সোনার বাংলা। এ লক্ষ্যে তিনি এগিয়েছিলেন কিন্তু ঘাতকরা তাকে আর এগোতে দেয়নি। তার আদর্শ বাস্তবায়ন ও তার প্রতি যথার্থ ভালোবাসাই সোনার বাংলায় পরিণত হবে এ দেশ।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে একদল বিপদগামী সেনা কর্মকর্তা। এ জঘন্য হত্যাকান্ড তৈরি করে রাজনৈতিক শূন্যতাও ব্যাহত হয় গণতান্ত্রিক উন্নয়নের ধারা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং কিংবদন্তী বিপস্নবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, 'আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি, ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের মতো।' যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনকেরি বলেন. 'সহিংস ও কাপুরুষোচিতভাবে বাংলাদেশের জনগণের মাঝ থেকে এমন প্রতিভাবান ও সাহসী নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া কী যে মর্মান্তিক ঘটনা।' বঙ্গবন্ধুর জন্ম-মৃতু্য (১৯২০-১৯৭৫) হিসাব করলে মাত্র ৫৫ বছর তিনি বেঁচে ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন একটি সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘকাল ধরে শোষিত বাংলাকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পেয়েছে একটি পতাকা, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, মানচিত্র, সংবিধান ও স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমরা সে রাষ্ট্রের গর্বিত সন্তান। এসবের জন্য বাঙালি জাতি তার কাছে ঋণী। এ ঋণ কোনোদিন বাঙালি পরিশোধ করতে পারবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির ভালোবাসা ঠিকই শোধ করে গেছেন বুকের রক্ত দিয়ে।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন কীর্তিমান পুরুষ। যুগে যুগে মহাপুরুষদের কীর্তি মুছে ফেলা যায় না। তারা আপন মহিমায় চিরভাস্বর। যুক্তরাষ্ট্রের জজ ওয়াশিংটন, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণ, তেমনি বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদান যশখ্যাতি, কীর্তি বাঙালির মন থেকে কোনোদিন মুছে ফেলা যাবে না।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনগণের অপার ভালোবাসা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অসাম্প্র্রদায়িক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি সর্বোপরি জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সাহসী পদক্ষেপে দেশ জঙ্গিবাদের অশুভ তৎপরতা থেকে রক্ষা পাবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তার সুমহান আদর্শ ও মহিমান্বিত স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদেহি আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
মোহাম্মদ নজাবত আলী: শিক্ষক ও কলাম লেখক