শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
হ্যালো লিডার হ্যালো মিনিস্টার

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলা কথা নয় কাজ এবং বুদ্ধিদীপ্ত কঠোরতা দরকার

বাংলাদেশের সব স্তরের জনগণের মধ্যে আইন বা নিয়মানুবর্তিতা না মানার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। রাষ্ট্রের 'বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো' পদ্ধতির কারণে সমাজে নানা সঙ্কট থেকেই যাচ্ছে। এর পাশাপাশি সবকিছুকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করার মতো অপসংস্কৃতির কারণে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এ বিষয়টিকে জোরালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা না করে বিরোধী দলগুলোর উচিত হবে সরকারকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করা। আর সরকারের উচিত হবে সবাইকে আইন ও নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা। এসব আইন ও নির্দেশনার প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়ানো দরকার।
সোহেল হায়দার চৌধুরী
  ২৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০

বিশ্বে নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতু্যর হার। বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই এখন করোনাভাইরাসে ভীত নয়। মানুষ এই আতঙ্কে অস্থির দিনযাপন করছে। বিশ্বের মানুষ করোনা থেকে মুক্ত থাকতে সব ধরনের সতর্কতা ও নির্দেশনা মেনে চললেও বাংলাদেশে এর ব্যত্যয় ঘটছে। ফলে সঙ্কটের পরিমাণও বাড়ছে। এ ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ধীর উদ্যোগ, পূর্ব প্রস্তুতি না থাকা অন্যতম একটি কারণ। এর পাশাপাশি বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টিনে বাধ্য করতে না পারা, চিকিৎসকদের একাংশের করোনা ভীতি, করোনা সম্পর্কে চিকিৎসক সমাজের পূর্বজ্ঞানের অভাব, সরকারি নির্দেশনা ও পরিকল্পনার ধীরগতি পরিস্থিতি নাজুক করছে। শেষ পর্যন্ত এ ভাইরাসে বাংলাদেশের কি পরিস্থিতি হয় তা আমরা কেউই ধারণা করতে পারছি না।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, বাংলাদেশে করোনা মহামারি লাখো মানুষের প্রাণহানির কারণ হতে পারে। যদি সেটা সত্যি হয়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য চরম দুর্দিন অপেক্ষা করছে। এর আগে গত ৪ ফেব্রম্নয়ারি এই কলামেই আমি করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের কাছে কিছু নিবেদন করেছিলাম। সেই কলামটির হেডিং ছিল 'পূর্ব প্রস্তুতি, সচেতনতা ও গবেষণাই পারে সঙ্কটমুক্ত করতে'। অন্যান্য অনেক লেখকই তখন এ বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি নিবেদন জানিয়েছিলেন। আমার বিশ্বাস সে সময় থেকে বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নেয়া হলে আজ বাংলাদেশের পরিস্থিতি এত নাজুক হতো না। তৈরি হতো না চরম আস্থার সঙ্কট। কিন্তু এর কোনোটিই লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে সঙ্কট ঘণীভূত হয়েছে।

আজকে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে আছে, সেটা আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন নতুন নতুনভাবে। বাড়ছে মৃতু্য এবং আক্রান্তের পরিমাণও। এ অবস্থায় দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আরও সক্রিয়-সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারকে হতে হবে আরও কঠোর। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারী কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া যাবে না। এমনিতেই বাংলাদেশ সব কিছু দেরিতে শুরু করার অপসংস্কৃতি একটি বড় সঙ্কটের বিষয়। এই দেরির কারণে দেশে কিছুদিন আগে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। করোনাভাইরাস নিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। বিশ্বব্যাপী যখন এ ভাইরাস আতঙ্ক তুঙ্গে তখনও আমরা শক্তিশালী প্রস্তুতি নিতে পারিনি। এ আতঙ্কের সূত্র ধরে বাংলাদেশে যে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা থেকে জনগণকে মুক্ত রাখার কার্যকর বৈজ্ঞানিক কোনো জোরালো পদক্ষেপ এখনো আমাদের আশ্বস্ত করতে পারছে না।

ফেব্রম্নয়ারিতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া না গেলেও এখন ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন যেমন রোগী শনাক্ত হয়েছে, আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যবরণ করেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন আক্রান্তের খবর জানা যাচ্ছে। সভা-সমাবেশ ও জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। একাধিক এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে মানুষের চলাচল জোরালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। কি পরিমাণ মানুষ করোনাভাইরাস বহন করছে সেটাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি নিশ্চিত হওয়া খুব জরুরি। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিকেল কিটসহ অন্যান্য জিনিসপত্র অধিকহারে সংগ্রহে রাখতে হবে। সরকারকেও কঠোরতার সঙ্গে বুদ্ধিদীপ্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার নতুন পরিকল্পনা ঠিক করতে হবে। প্রয়োজন হলে পুরো দেশ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে প্রতিটি এলাকা সিল করে দিতে হবে।

বাংলাদেশ এখন যে সময় পার করছে করোনাভাইরাস নিয়ে তা থেকে মুক্ত হতে কথার বদলে কাজে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। করোনা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বিচ্ছিন্ন কথাবার্তা বলাটা জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। এর বদলে সরকারের তরফ থেকে একজন মুখপাত্র ঠিক করা যেতে পারে। শুধু তিনিই করোনা প্রসঙ্গে বলবেন। যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে রাজনীতি প্রায় স্থগিত, তাই রাজনীতি নিয়ে কথা বলার প্রয়োজনীয়তাও আপাতত নেই। আর করোনা নিয়ে সবার কথা না বলাই শ্রেয়। একই সঙ্গে গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণ ধারণা করছে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির বিস্তার ও সংক্রমণের সঠিক চিত্র সংশ্লিষ্টরা প্রকাশ করছেন না। এই ধারণার জবাব দিয়ে জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে। গুজব বন্ধে প্রয়োজন হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছুদিনের জন্য নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।

যতটা জানা যায়, বাংলাদেশে প্রায় সব হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত। এটি সরকারের একটি ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু হাসপাতালগুলোতে দায়িত্ব পালনরতদের দায়িত্বশীল হতে হবে পূর্ণাঙ্গভাবে। অভিযোগ রয়েছে করোনা সম্পর্কিত হটলাইনগুলো নিয়ে। এসব হটলাইনে সঠিক পরামর্শ বা সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে বিস্তর কথা শোনা যায়। এর অবসান হওয়া জরুরি। দেশের সব সরকারি, বেসরকারি, প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হটলাইন চালু করা দরকার। সে সব হটলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য একাধিক ব্যক্তিকে সার্বক্ষণিকভাবে নিযুক্ত রাখতে হবে। শিফটিং ডিউটির মাধ্যমে দিন-রাত কাজ করতে হবে হটলাইন সেবা নিয়ে। হটলাইনগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য মনিটরিং কমিটিকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

করোনাভাইরাসের এই আতঙ্কের মধ্যেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজার অস্থিতিশীল করে তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ গৃহস্থালি পণ্যের দাম বাড়িয়ে তারা মানুষের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। আতঙ্কে দিশহিারা মানুষ বাড়তি দামে পণ্য বা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাধ্য হচ্ছে। সুবিধাবাদী মানবতাবিরোধী এই চক্রকে দেশবিরোধী ঘোষণা করে শুধু জরিমানা নয়, শাস্তি হিসেবে প্রতীকীভাবে হলেও কারাদন্ড দেয়া প্রয়োজন। যারা জীবাণুনাশক দ্রব্যাদি ও মাস্কের দাম বাড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করে দ্রম্নত সাজা দেয়াও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নতুবা সরকার একদিকে জনগণের জন্য নানা পদক্ষেপ নেবে, অন্যদিকে এই 'কুলাঙ্গারদের' কারণে তা বিনষ্ট হবে। এই মানবতাবিরোধী শক্তিকে দেশের শত্রম্ন হিসেবে চিহ্নিত করে জনগণের কাছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা আজ সময়ের দাবি। এ ধরনের মানবতাবিরোধী কয়েকজনকে শাস্তি দিলে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে সেটা হলফ করে বলা যায়।

এই মুহূর্তে করোনা সঙ্কটের তীব্রতায় নানা সঙ্কট তৈরি হতে পারে। সরকার ও সংশ্লিষ্টদের করোনা নিয়ে অতি সতর্কতার কারণে যাতে অন্য কোনো সঙ্কট দানা বাঁধতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এই সতর্কতার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা অন্যতম একটি কাজ। প্যারাসিটামল গ্রম্নপের ওষুধ, প্রেশারের ওষুধসমূহসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধসমূহের দাম যাতে বাড়তে না পারে সে বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। মাস্ক-স্যানিটাইজারসহ জীবাণুনাশক দ্রব্যাদির বাজার স্থিতিশীল রাখতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে যে কোনো মূল্যে। রাজধানীর সড়ক ও নালাগুলো নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বিভিন্ন এলাকায় মশার প্রকোপ বাড়ছে। মশা যাতে নতুন সঙ্কট তৈরি করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজের উসিলায় আপাতত খোঁড়াখুঁড়ি না করে তা বন্ধ রাখা উচিত করোনা সঙ্কটের অবসান না হওয়া পর্যন্ত। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলর বা নেতাদের সহায়তায় যে বাজার বসে সেগুলো বন্ধ করা দরকার। যদি একান্ত প্রয়োজন হয়, তবে বাজারের সময় শেষে নিয়মিত বিস্নচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক দিয়ে স্থানটি পরিষ্কার করতে হবে। দেশের বা রাজধানীর কাঁচাবাজার, মাছ ও মাংসের বাজার নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।

করোনা আতঙ্কের মধ্যেও শ্রমজীবী মানুষ তার চাকরি বা কাজের জন্য নিবেদিত রয়েছেন। যেহেতু কে করোনাভাইরাসের জীবাণু বহন করছে বা কে করছে না সেটি আমরা জানি না, সেহেতু প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সরকারি মনিটরিং থাকা দরকার। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি আইন ও নিয়ম মানতে বাধ্য করার মতো কিছু দৃষ্টান্ত এখনই রাখতে হবে। শোনা যাচ্ছে, যে কোনো সময় লকডাউন করা হতে পারে পুরো দেশ। তা যদি হয়, তাহলে শ্রমজীবী মানুষের নিত্য সমস্যা নিরসনে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে সততা, একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে। যে সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বকেয়া বেতন রয়েছে, সে সব প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করতে হবে বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য। লকডাউন করা হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্ততপক্ষে তিন মাসের অগ্রিম বেতন কর্মীদের দেওয়া প্রয়োজন। এই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকেই দিতে হবে।

বাংলাদেশের সব স্তরের জনগণের মধ্যে আইন বা নিয়মানুবর্তিতা না মানার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। রাষ্ট্রের 'বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো' পদ্ধতির কারণে সমাজে নানা সঙ্কট থেকেই যাচ্ছে। এর পাশাপাশি সবকিছুকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করার মতো অপসংস্কৃতির কারণে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এ বিষয়টিকে জোরালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা না করে বিরোধী দলগুলোর উচিত হবে সরকারকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করা। আর সরকারের উচিত হবে সবাইকে আইন ও নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা। এসব আইন ও নির্দেশনার প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়ানো দরকার।

প্রতিটি এলাকায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে ব্যানার টানানো যেতে পারে। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো যেতে পারে। কোনো এলাকায় কেউ করোনায় আক্রান্ত হলো কিনা বা নতুন কোনো ব্যক্তি আসছে কিনা সে বিষয়ে এলাকাবাসীকেই খোঁজ রাখতে হবে। করোনা মোকাবিলায় এই মুহূর্তে জনগণের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক তথ্য জানা, গুজবে কান না দেওয়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেয়া এবং সংঘবদ্ধতা পরিহার করা। আর রাষ্ট্রের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন করোনাভাইরাস মোকাবিলার চিকিৎসাব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো এবং কঠোরতা আরোপ।

সোহেল হায়দার চৌধুরী: বিশেষ সংবাদদাতা, দৈনিক যায়যায়দিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<93851 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1