প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হোক

আরও ১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষা একটি জাতির জন্য মেরুদন্ডস্বরূপ। অর্থাৎ সুশিক্ষা নিশ্চিত না করে কিংবা শিক্ষার বিস্তার না ঘটলে সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। সঙ্গত কারণেই শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে যেকোনো ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নেও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়বিহীন ১ হাজার গ্রামে আরও ১ হাজার প্রাথমিক স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এ লক্ষ্যে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিটিও করা হয়েছে। জানা গেছে, কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে তার এলাকার কোন কোন গ্রামে প্রাথমিক স্কুল নেই তার তালিকা দিতে বলা হয়েছে। তারপর এ সংক্রান্ত ডিটেইল প্রকল্প পরিকল্পনা (ডিপিপি) তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। আর প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (পিইডিপি-৪) আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা মনে করি, এই প্রকল্প গ্রহণ করার পর তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হলে তা ইতিবাচক হবে। কেননা, এটা মনে রাখা জরুরি যে, শিক্ষার ভিত্তি গড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। আর তা নিশ্চিত করতে হলে সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই সব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার প্রশ্নে বিদ্যালয় সংকট থাকলে তা পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। তথ্য মতে এমনটিও জানা গেছে যে, দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার গ্রামকে বাছাই করতে ইউএনওর নেতৃত্বে একটি করে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়া পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে এবং পরবর্তী সময়ে আরও বিদ্যালয়বিহীন গ্রাম থাকলে সেখানেও বিদ্যালয় করা হবে। আমরা মনে করি, এই প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হলে তা অত্যন্ত ইতিবাচক হবে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের প্রায় ২১০০ গ্রামে কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। পাহাড়, হাওড়, চর ও উপকূলীয় এলাকায় এর সংখ্যা বেশি। চার থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো স্কুল নেই। ফলে এসব দুর্গম এলাকার শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে। এভাবে যদি শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয় তবে বিষয়টি সুখকর হতে পারে না। আর জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে প্রাথমিক স্কুল নির্মাণের নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয় এবং এ লক্ষ্যে ২০১০ সালের জুন মাসে 'বিদ্যালয়বিহীন ১৫০০ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন' নামে একটি প্রকল্পও গ্রহণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যেখানে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৯০৫ কোটি ৭৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ডিপিইর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় সব স্কুল নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে নির্মিত স্কুলে প্রেষণে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অনেক স্কুল চালু করা হয়েছে। এর সুফলও পাচ্ছে এলাকার শিক্ষার্থীরা। আমরা বলতে চাই, এখন যখন সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়বিহীন ১ হাজার গ্রামে আরও ১ হাজার প্রাথমিক স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়- এমন বিষয় সামনে আসছে তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। ফলে এই প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নই কাম্য। দেশের সব শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করতে এবং সামগ্রিক অর্থে শিক্ষার উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।