কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকুক

বিচ্ছিন্ন হচ্ছে জনপদ

প্রকাশ | ২৬ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা। মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশের সব জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার ট্রেন, বিমান ও নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, করোনা প্রতিরোধে এই বিচ্ছিন্নতা জরুরি এবং যথাযথ সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। তথ্য মতে, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে অভ্যন্তরীণ সব রুটে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। যদিও পণ্য পরিবহণের জন্য মালবাহী ট্রেনগুলো চলাচল করবে। বলা দরকার, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দূরত্ব বজায় রাখা, নিয়মনীতি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদিও এমন বিষয় সামনে এসেছে- সোমবার ছুটি ঘোষণার পর রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন ও বাস স্টেশনে মানুষের ভিড়ের ছবিও ছড়িয়ে পড়ে। অথচ মঙ্গলবারও নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহণ ব্যবহারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআরের পরিচালক। আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক বলেছেন, এমন অবস্থায় ঝুঁকি তো কিছুটা থাকেই। তার মতে, সংক্রমণের হার কম থাকলে ঝুঁকিও তেমন একটা থাকে না। তবে সংক্রমণের হারটা বেশি থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া ভ্রমণ করলে সংক্রামক রোগের ঝুঁকি এমনিতেই বাড়ে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর মূলত এই কারণেই আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, মানুষ যে গ্রামে ফিরছে এতে করে মিক্সিং হওয়ার একটা শঙ্কা আছে। অর্থাৎ গ্রাম থেকে সংক্রমণ শহরে আসতে পারে আবার শহর থেকেও গ্রামেও যেতে পারে- এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা জরুরি। . প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সারা বিশ্বেই করোনাভাইরাস নিয়ে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। একইসঙ্গে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজেন কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, এটাও বলা দরকার, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, করোনা মহামারি প্রকট আকার ধারণ করছে। তবে এটাও মনে রাখা সঙ্গত- সংস্থার প্রধান এটাও বলেছেন, এখনো করোনাভাইরাসের গতিরোধ সম্ভব। ফলে কীভাবে সম্ভব সেটিকে যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি করণীয় নির্ধারণপূর্বক তার বাস্তবায়নে সামগ্রিক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। উলেস্নখ্য, চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রাদুর্ভাব হয় করোনাভাইরাসের। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। এমন বিষয় বারবার সামনে আসছে যে, মানুষকে ঘরে থাকতে বলা বা সামাজিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলো এ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ নিঃসন্দেহে। ডবিস্নউএইচও প্রধান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকু্যইপমেন্ট (পিপিই) না থাকার কারণেই এমনটা ঘটেছে। ফলে আমরা মনে করি, সবার সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনিভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীও নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সর্বোপরি বলতে চাই, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করা এবং সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে কঠোর হওয়া জরুরি। মনে রাখা দরকার, সারা বিশ্ব করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা অপরিহার্য।