করোনাভাইরাস

সতর্ক ও সচেতন হোন

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ কোনো না কোনোভাবে বিধিনিষেধের বেড়াজালে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন- এমনটি জানা গেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এরই মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ পেরিয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ হাজার। এমনকি চারদিকে আতঙ্ক ছড়ানো এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, একটি সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টাই শুধু পারে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের প্রকোপ থামাতে। আমরা বলতে চাই, এখন পুরো পৃথিবী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এ থেকে মুক্ত নয়। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিকভাবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ এখন সচেতন না হলে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কার বিষয়টি আলোচনায় আসছে। বিভিন্নভাবে মানুষ করোনাভাইরাসের কারণে জারি করা বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছেন। কোথাও কোথাও অফিস করতে হচ্ছে বাড়ি থেকে। কোথাও আবার কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে যানবাহনে, রাশ পড়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনব্যবস্থায়। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না বলেই আমরা মনে করি। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, সারা বিশ্বেই করোনাভাইরাস নিয়ে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা আমলে নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে মনে রাখা দরকার, সর্বাত্মক প্রচেষ্টার বিষয়টি অপরিহার্য। এ কথাও বলা দরকার যে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, করোনা মহামারি প্রকট আকার ধারণ করছে। তবে সংস্থার প্রধান এমনটিও বলেছেন, এখনো করোনাভাইরাসের গতিরোধ সম্ভব। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, কীভাবে সম্ভব সেটিকে যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি করণীয় নির্ধারণপূর্বক তার বাস্তবায়নে সামগ্রিক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। উলেস্নখ্য, চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রাদুর্ভাব হয় করোনাভাইরাসের। আর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষকে ঘরে থাকতে বলা বা সামাজিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় আসছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত জানা গেছে, বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এখন যুক্তরাষ্ট্রে। শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয় দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৫০০ মানুষের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত মানুষের হিসাবে চীন ও ইতালিকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনে আক্রান্ত মানুষের মোট সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার ৭২৮। ইতালিতে ৮০ হাজার ৫৮৯। সংখ্যা বেশি হলেও এই দুই দেশের চেয়ে এই ভাইরাসে মৃতু্যর হার যুক্তরাষ্ট্রে কম। চীনে করোনাভাইরাসে মারা গেছে ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইতালিতে মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। ইতালির পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ, প্রতিদিনই সেখানে অসংখ্য মানুষের মৃতু্য হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, একদিকে বিশ্বের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি অন্যদিকে বাংলাদেশেও প্রতিদিন করোনাভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মারা গেছে ৫ জন। সারাবিশ্বই আতঙ্ক আর বিপর্যস্ত পরিস্থিতির ভেতর পড়েছে। সঙ্গত কারণেই এমতাবস্থায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে, সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, এই ভয়াবহ অবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে সব ধরনের বিভেদ ভুলে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ থামাতে সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা জারি থাকুক। একই সঙ্গে এটাও আমলে নেওয়া দরকার, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হতে যাচ্ছে, তা এক দশক আগের মন্দার চেয়েও ভয়াবহ হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। ফলে এই বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিতে হবে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের। মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করণীয় নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এই সংকট মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।