কার্যকর পদক্ষেপ নিন

সড়কে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সরকারের নানা উদ্যোগ তৎপরতায়ও কমানো যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিনই বাড়ছে সড়কে মৃতের মিছিল। সড়ক দুর্ঘটনা দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। সড়কে মৃতু্যর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সপরিবারে নিহত হচ্ছেন অনেকেই। ফলে মানুষের শোক ও হাহাকার বাড়ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশে ১০ দিনের জন্য পরিবহণ বন্ধের আগের দিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭ জন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। শেরপুরে ৫ জন কিশোরগঞ্জে ৩ জন, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ২ জন, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ২ জন, গোপালগঞ্জে ২ জন,কুুষ্টিয়ায় ২ জন এবং বান্দরবানে বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। এ কথা সত্য, পরিবহণ চালকদের অন্যায্য দাবির মুখে নতুন সড়ক পরিবহন আইন শিথিল করার ফলে চালকদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের ব্যাপারে তাদের ছাড় দেওয়ায় আগে সড়কে যত মামলা হতো, যত টাকা জরিমানা হয়েছে, নতুন আইন প্রয়োগ করার পরে মামলা ও জরিমানা কমে গেছে। এর ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে। উলেস্নখ্য, চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি মাসে ৫০০ চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ওই মাসে প্রায় ১ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫৬ দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে নয়টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত ও ৫৬ জন আহত এবং ৬৪ জন নিখোঁজ হয়েছে। এর আগে জানুয়ারি মাসে ৫৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৭ জন নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১৪১ জন। একই মাসে রেলপথে ৪৩টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৫৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জন। এই পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রম্নটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার, মাদক সেবন অবস্থায় যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধির কারণে সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের কারণে দিনে দিনে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এ ছাড়া বাসগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা। মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।