মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
নতুনধারা
  ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ১০ দিনের অঘোষিত 'লকডাউন' জারি করেছে সরকার। এর ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র দিনমজুররা। কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের। নভেল করোনাভাইরাসের মহামারিতে দেশে প্রায় অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দৈনিক উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে ধনী ও বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রাজধানীর ধানমন্ডিতে শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এ কথা সত্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশ প্রায় অচল হয়ে যাওয়ার কারণে দরিদ্র ও সীমিত আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাসও এসেছে। করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রতিঘাত মোকাবিলায় সরকারের বিশেষ প্রণোদনা ব্যবস্থা ও দরিদ্র মানুষের সাহায্যের ব্যাপারে সরকার মনোযোগী ও তৎপর।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান ছাড়া মূলত অন্য কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা নেই। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহণও। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয় ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মজীবী মানুষ। তিন দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা। ঘরবন্দি হয়ে পড়ে খাদ্যসংকটে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সরকার নিম্ন আয়ের ও দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্য সহায়তা দিতে শুরু করেছে।

এটা সত্য, স্বল্প আয়ের মানুষের কোনো সঞ্চয় নেই। এখন কাজ বন্ধ, কীভাবে সংসার চালাবে তারা- এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া এ রকম দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা থেকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব সহায়তা দিয়ে আসবেন। উপজেলায় চাল বরাদ্দের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) টাকা দেওয়া হচ্ছে। তারা চাল ছাড়া অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ছোট ছোট প্যাকেট করে দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব সহায়তা দিয়ে আসবেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিরাপদে থাকতে দেশের অধিকাংশ মানুষই বাসায় অবস্থান করছেন। নাটোর থেকে ঢাকায় রিকশা চালাতে আসা মিন্টুও গত দুদিন বাসাতেই ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার থেকে তার ঘরে চাল-ডাল সব শেষ হয়ে গেছে। কোনো টাকাও নেই তার কাছে। তাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও রিকশা নিয়ে ভাড়া মারতে বেরিয়েছেন মিন্টু। মিন্টুর মতো এমন অনেকেই আছেন যারা পেটের তাগিদে রাস্তায় বের হয়েছেন।

আমরা মনে করি সরকার যদি দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দেশের হতদরিদ্রদের খাবার বিতরণ নিশ্চিত করতে পারে তা হলে গরিব মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা থাকতে হবে। দেশের কর্মহীন হতদরিদ্ররা যদি খাদ্য না পায় তা হলে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেবে এ কথা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্মরণে রাখতে হবে।

এও মনে রাখতে হবে একদিকে মানুষ বেঁচে থাকার জন্য করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, অন্যদিকে তারা যদি খাবার না পায় তা হলে এর চেয়ে দুঃখ ও হতাশাজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। সুতরাং সরকারের কার্যকর উদ্যোগই বিত্তহীন শ্রমজীবী মানুষকে পরিত্রাণ দিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94430 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1