আবার সড়ক দুর্ঘটনা

যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এর মধ্যেও থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা এবং মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, নিষেধ উপেক্ষা করে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক বস্তার ওপর যাত্রী তুলে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিল উত্তরবঙ্গের পথে; টাঙ্গাইলে সেই ট্রাক উল্টে বস্তার নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেছে অন্তত পাঁচজনের। তথ্য মতে, এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট রাজীব বর্মণ জানিয়েছেন, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কান্দিলা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে এ দুর্ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হয়েছেন। উলেস্নখ্য, করোনাভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে চলছে ছুটি। সড়ক, নৌ ও আকাশপথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখে সবাইকে যার যার বাসায় থাকতে বলেছে সরকার। সড়কপথে যাত্রীবাহী পরিবহণ বন্ধ থাকলেও জরুরি পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে ট্রাক-পিকআপের মতো বাহনকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে। কিন্তু এসব পণ্যবাহী বাহনে যাত্রী বহনে নিষেধ করা হলেও চালক ও যাত্রীরা তা মানছেন না। বিষয়টি কতটা উদ্বেগের তা আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। যখন এমন বিষয় সামনে আসছে যে, ছুটির শুরু থেকেই দলে দলে লোক ট্রাক ও পিকআপে চড়ে বাড়ির পথে ছুটছেন- তখন সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত বলা দরকার, টাঙ্গাইলের গোড়াই হাইওয়ে থানার এলেঙ্গা ফাঁড়ির পরিদর্শক বলেছেন, সিমেন্টবাহী ওই ট্রাকটি যাচ্ছিল বগুড়ার দিকে। ট্রাকে সিমেন্টের বস্তার ওপর ডজন দুই যাত্রী তুলেছিলেন চালক। সোজা রাস্তা, যানবাহনের চাপ নেই, এরপরও যেভাবে রাস্তার মাঝখানে ট্রাক উল্টে গেছে, এতে মনে হচ্ছে চালক হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, নয়তো গতি ছিল অনেক বেশি, চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। আমরা বলতে চাই, সারাদেশের এই বিচ্ছিন্ন পরিস্থিতির আগেও প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, এখন যেখানে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না, সেখানে ট্রাকে যাত্রী বহন করে এই ধরনের দুর্ঘটনা যদি ঘটতে থাকে তবে তা কতটা ভয়াবহ আমলে নেওয়া জরুরি। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের ত্রম্নটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার, মাদক সেবন অবস্থায় যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধির কারণে সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এখন যখন রাস্তাঘাট ফাঁকা তখন যদি পণ্যবাহী ট্রাক যাত্রী ওঠায় এবং এমনভাবে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে তবে তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ফলে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। আমরা বলতে চাই, নিষেধ উপেক্ষা করে ট্রাকের ওপর যাত্রী তুলে এমন ঘটনা ঘটবে, এটা যেমন কাম্য নয়, তেমনি কোনো ধরনের অনিয়ম যেন না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুক এমনটি কাম্য। কেননা, এভাবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঝরে যাবে একেকটা তরতাজা প্রাণ, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।