চাহিদা কম, কমেনি দাম

নিয়মিত বাজার তদারকি করতে হবে

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ কমেছে। সরবরাহের পাশাপাশি কমেছে চাহিদাও। ফলে দামও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে। তবে সরবরাহের সঙ্গে চাহিদা কমলেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল, রসুন, আদা ও অন্যান্য মসলা। সবজির সরবরাহ কমার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা আতঙ্কের কারণে অনেক পরিবহণ চালক সবজি নিয়ে ঢাকায় আসতে চাচ্ছেন না। আবার কোথাও কোথাও পণ্য পরিবহণে বাধা দেয়া হচ্ছে। যে কারণে সরবরাহ কমেছে। চালের দামের বিষয়ে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কমিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বাজারে চালের সরবরাহ কমে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়ে গেছে দামও। কুষ্টিয়া ও নওগাঁয়ের কিছু ব্যবসায়ী এই দাম বাড়ানোর পেছনে রয়েছেন। আলুর দামও আগের পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে লেবুর দাম সবচেয়ে বেশি। বড় সাইজের এক হালি লেবুর দাম ৮০ টাকা। ছোট সাইজের লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, তাতে রস কম। তবে কমেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা। এটা সত্য সরকার ১০ দিন ছুটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে চলে গেছে। ঢাকা বলতে গেলে একেবারেই ফাঁকা। এমন অবস্থায় ক্রেতা ও চাহিদা কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হচ্ছে চালের দাম কমবে না কেন। এর মধ্যে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি চালের দাম ৭ থেকে ৮ টাকা বাড়িয়েছে। চাহিদা কম থাকায় দাম কমার কথা। ভাবতে বিস্ময় লাগে যে, এ দেশের অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। এর দ্বারা প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তারা কতটা অমানবিক। পবিত্র রমজানের সময়েও আমরা একই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে থাকি। এই সময় ব্যবসায়ীদের উচিত প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিত্তহীন শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। সেটা না করে তারা উল্টো কাজ করছেন- যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায়, সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই হতাশাজনক চিত্র। পাশের দেশ ভারতে তো এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে না। সেখানকার বাজারে শৃঙ্খলা রয়েছে। ইচ্ছে করলেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে পারবে না। আমাদের দেশেই কেবল ঘটছে অদ্ভুত ও ব্যতিক্রম সব ঘটনা। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে এটা কাম্য নয়। আমরা এও মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। কেবল করোনার সময় কিংবা রমজানে নয়, সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।