করোনা চিকিৎসা ও ডাক্তার-নার্স সুরক্ষা

যেকোনো মূল্যে ডাক্তারদের হাসপাতালমুখী করতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, অসুস্থ হলে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া, যাতায়াত সুরক্ষা থাকা বাঞ্ছনীয়। যে অবস্থা চলছে তাতে রোগীরা তাদের করোনার বাইরে অন্য রোগের চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে মহা বিপাকে আছেন। এভাবে চললে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে বৈকি!

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

মীর আব্দুল আলীম
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আতঙ্কে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সংকট তৈরি হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার সংকট। চেম্বার করছেন না অনেক চিকিৎসক। দেশজুড়ে এমন স্বাস্থ্য সংকটে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। করোনাভাইরাসে নয়; অন্য রোগেই এখন দেশের মানুষ চিকিৎসার অভাবে মরতে বসেছে। এটা ভাবতেই যেন গা শিউরে ওঠে। কেন এমন হলো? চিকিৎসকের অভাব আর চিকিৎসার অভাব এটা তো ভাবনারই বিষয়। রোগ সারাতে ডাক্তার দরকার। দরকার ডাক্তার-নার্সদের স্বাস্থ্য সুরক্ষারও। বাংলাদেশে ডাক্তার-নার্সদের সুরক্ষাব্যবস্থার বড় অভাব রয়েছে। করোনা আতঙ্কে সরঞ্জামের অভাবে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে ডাক্তাররা রোগী দেখা কমিয়ে দিয়েছেন। অনেক হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার নেই বললেই চলে। রাজধানী ঢাকার নামি-দামি হাসপাতালেও ডাক্তার সংকট চলছে। তাতে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা অনিশ্চিত এটা কি ভাবা যায়। স্বাস্থ্যসেবায় যা চলছে এভাবে কি চলে? করোনাভাইরাস, এ রোগ দুনিয়াজুড়ে। রোগের জন্য; রোগীর জন্য চাই ডাক্তার। ডাক্তার না থাকলে রোগীরা তো বড় অসহায়। কারা চিকিৎসা দেবেন রোগীদের? ডাক্তার সংকট কেন হলো? করোনা আতঙ্কের মধ্যে শুরুতেই ডাক্তারদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া হয়নি। এটা কিন্তু বড় সত্য। রোগীর অনুপাতে ডাক্তারদের মধ্যে আক্রান্তের পরিমাণ বেশি হওয়ায় চিকিৎসকদের মধ্যে আফঙ্ক তৈরি হয়েছে। হওয়ারই কথা। রোগ সারাতে গিয়ে ডাক্তাররা রোগী হয়ে গেলে কি চলবে? ডাক্তারদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকবেই। পরিমাণে তা বেশি হলে আতঙ্কেরই কথা। প্রশাসনের হাতে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকিউপমেন্ট (পিপিই) চলে এসেছে আগে। এমন অভিযোগ শুরু থেকে চিকিৎসকরা করে আসছেন। এটা নিয়ে যথেষ্ট ভুল বোঝাবুঝিও হয়েছে। প্রশাসন, ব্যাংকার, ব্যবসায়ীরা পিপিই পরে ফটো সেশন করেছেন। যে ডাক্তাররা রোগীদের চিকিৎসা দেবেন তারা তখন পিপি পাননি। ভুল বোঝাবুঝি তো হবেই তাতে। যে ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা দেবেন তাদেরই পিপিইর অভাব। কষ্টেরই কথা। পিপিই প্রশাসনের লোকদেরও প্রয়োজন। তারাও মাঠজুড়ে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। তবে ডাক্তারদের পিপিই আগে দরকার ছিল। বাংলাদেশে এমনটা হতেই পারে। যার যেটা দরকার তা দেয়া হচ্ছে না। তাই কজন ডাক্তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ডাক্তার সমাজে। এটা অনেক বড় ক্ষতির কারণ হলো আমাদের জন্য। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে ডাক্তাররা কাজ করবেন তারা সরঞ্জামের অভাবে আক্রান্ত হলে প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। কথা আরও আছে। ডাক্তাররা কর্তব্য পালন করতে যাওয়ার পথে রাস্তায় পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে দু-একটি। ডাক্তাররা কর্মস্থলে যেতে-আসতে বাঁধার সম্মুক্ষীণ হলে, অসম্মানিত হলে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করবেন কী করে? আমি নিজেই চিকিৎসক সংকটে পড়েছিলাম। একটি বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে বুঝি এসব নানা কারণে ডাক্তারদের ক্ষোভ আছে অনেক। যদিও এটা তাদের জন্য এখন বড় বেমানান। চিকিৎসা মহান পেশা। রোগীর জন্য ডাক্তার নিবেদিত হবেন এটাই সত্য। ডাক্তাররা বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন চেম্বারও করতে চান না। বিপাকে পড়েছে হাসপাতালগুলো। এভাবে চলে না। দুঃসময়ে ডাক্তারদেরই প্রয়োজন আগে। তাদের সম্মান দেখাতে হবে। পেশার মর্যাদা দিতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তায় পুলিশ বাহিনী কর্তৃক কোনো ডাক্তার লাঞ্ছিত হওয়া মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়। যেকোনো মূল্যে ডাক্তারদের হাসপাতালমুখী করতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, অসুস্থ হলে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া, যাতায়াত সুরক্ষা থাকা বাঞ্ছনীয়। যে অবস্থা চলছে তাতে রোগীরা তাদের করোনার বাইরে অন্য রোগের চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে মহা বিপাকে আছেন। এভাবে চললে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে বৈকি! ঢাকা মেডিকেল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালের অনেক প্রফেসর আর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে আমার। বন্ধুও আছেন বেশ কয়েকজন। প্রায় প্রতিদিনই কারও না কারও সঙ্গে কথা হয় আমার। প্রত্যেকেরই একই কথা রোগীই তাদের প্রাণ। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে তারা সবসময়, সহাবস্থায় প্রস্তুত আছেন। তবে নূ্যনতম স্বাস্থ্য সুরক্ষা চাই তাদের। এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জনৈক প্রফেসর নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেদিন বলছিলেন, গতবছর ডেঙ্গুতে আমাদের অসংখ্য ডাক্তার চিকিৎসা দিতে গিয়ে মারা গেছেন। জীবনের অনেক ঝুঁকি থাকলেও ডাক্তাররা তখন পিছপা হননি। রোগীর জীবনের প্রশ্নে ডাক্তাররা পিছপা হনও না। আমাদের দেশে ডাক্তারদের ভালো কাজের জন্য বাহ্বা কম মেলে। উল্টো মেলে তিরস্কার। আরেকজন বন্ধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তো আক্ষেপ করে বলেই বসেন- 'পিছনের বেঞ্চের ছাত্র পুলিশ, প্রশাসনে এসে আমাদের ধমকায়। রাস্তায় অসম্মান করে'। এসব দূর করতে হবে। ডাক্তাররা জীবনের ঝুঁকি নেবেন, আর তাদের উল্টো প্রয়োজনীয় মর্যাদাটা পর্যন্ত দেয়া হবে না তা কী করে হয়? তাদের স্বাস্থ্যের কথাও ভাবতে হবে আগে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে রাজধানীর মিরপুরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের এক তরুণ চিকিৎসক নিজেই আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর আগে আরও কয়েকজন চিকিৎসক করোনাভাইরাস রোগীর সংস্পর্শে গিয়ে নিজেরা এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। একাধিক নার্সও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশব্যাপী ডাক্তারদের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এমন হলে উৎকণ্ঠার কারণ বটে! এ সমস্যা সহসাই সরকারকে দূর করতে হবে। তা না হলে দেশে চিকিৎসক সংকট এবং চিকিৎসা বিপর্যয় দেখা দেবে। চিকিৎসকদের মনের ভেতর যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তা দূর করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে করোনা রোগী থাকার গুজব ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। করোনা করোনা বলে চিৎকার দিয়ে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যাওয়া, আবার বহির্বিভাগে কাউকে করোনা রোগী বলে প্রচার করে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। নানা কারণে বহু চিকিৎসক এখন নিজে বাঁচার জন্য সাধারণ রোগীর চিকিৎসা করতে ভয় পাচ্ছেন। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় (প্রটেকশন) সরঞ্জামের পর্যাপ্ত সংকট রয়েছে বলেও চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের অভিযোগ আছে আগে থেকেই। চিকিৎসকদের সুরক্ষার অভাবে তারা এখন রোগীদের চিকিৎসা করতে ভয় পাচ্ছেন। অন্যকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজেরা অসুস্থ হয়ে গেলে তো ভয়েরই কথা। জনৈক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বর্তমানে চিকিৎসাব্যবস্থায় চরম সংকটে চলছে। কে কারোনাভাইরাসে আক্রান্ত আর কে আক্রান্ত না তা শনাক্ত করা কঠিন। ফলে চিকিৎসকরা আতঙ্কে আছেন। তারা যে কোনো রোগী দেখলে মনে করেন তার শরীরে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। অন্যদিকে, নিজের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে অনেক চিকিৎসক রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। অনেকেই চেম্বারে যাচ্ছে না। শুধু রাজধানীর হাসপাতাল ও ডাক্তারদের চেম্বারই নয়, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী ও লক্ষ্ণীপুরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলায় এ চিকিৎসা সংকট চলছে। বহু রোগী ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। তারা চিকিৎসকদের চেম্বারে চেম্বারে ঘুরে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এ অবস্থার মধ্যে কষ্টকর হলেও আমার পরিচালনাধীন আল-রাফি হসপিটাল লি. এবং লাইফ এইড হসপিটাল লি.-এ পূর্ণ চিকিৎসা সেবা ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। যা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশংসিতও হয়েছে। ডাক্তারদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এখানে চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। যা সব বেসরকারি হাসপাতালেরই করা কর্তব্য মনে করি। পরিতাপের বিষয় অনেক সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালই চিকিৎসকদের জন্য প্রয়োজনীয় পার্সোনাল প্রটেকশন ইকু্যপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করা হয়নি। করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সময়মতো ডাক্তারদের সুরক্ষার বা ব্যক্তিগত প্রটেকশনের পোশাক পাওয়া যায়নি। এসব কারণে করোনাভাইরাস চিকিৎসা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। সাধারণ জ্বর ও সর্দির এবং গলাব্যথাসহ অন্য রোগের চিকিৎসা পাওয়া যেন সোনার হরিণ হয়ে পড়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর, সর্দি, কাশির চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আবার ভর্তিকৃত রোগী সুস্থ হওয়ার আগেই ছাড়পত্র দেয়ার অভিযোগও আছে। অনেক জায়গায় চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কারোনা আতঙ্কের কারণে বন্ধ করে দেয়ায় রোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। স্কুল-কলেজে যিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন তারাই একদিন ডাক্তার হয়ে আসেন। এ কথা সত্য যে, সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রটিই আজ সমাজে সম্মান পাচ্ছেন কম। যা কিনা এবারও প্রমাণিত হলো। বিবিএস করা একজন চিকিৎসক যে মর্যাদা পান, সেখানে কম মেধাবী সম্পন্ন বিসিএস অন্য প্রশাসনের লোক অনেক বেশি মর্জাদা পান। ঝুঁকি নিয়ে, মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করেও অসম্মানিত হন একজন ডাক্তার। এভাবে চলতে থাকলে ডাক্তাররা আর ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। চিকিৎসাসেবায় ঝুঁকি নিতে হয়। ঝুঁকি না নিলে মুমূর্ষু রোগীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়। চিকিৎসকদের যথাযথ মর্যাদা না দেয়া, কথায় কথায় ডাক্তারদের গায়ে হাত তুললে, মামলা-হামলা করলে, ভুল চিকিৎসার অপবাদ দিলে ডাক্তাররা আগ্রহ তো হারিয়েই ফেলবেন। এটা রোগী কিংবা রোগীর পরিবারের জন্য দুঃসংবাদ বটে! রাতদিন একজন ডাক্তারকে পরিশ্রম করতে হয়। রোগীর ডাক পড়লেই তার ঘুম হারাম। আর তাকে যদি কথায় কথায় অসম্মান আর অপবাদ কাঁধে নিয়ে চলতে হয় তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ায়? ভালো কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে তো মানুষ। পিস্নজ অভিযোগ করতে হলে ভেবে তবেই করবেন। সঠিকটা করবেন। একথা কিন্তু সত্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছাড়া আমাদের ডাক্তাররা যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন তা কম নয়। হাল সময়ে করোনাভাইরাস নিয়ে ডাক্তারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং তা থেকে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা রীতিমতো দম বন্ধ হয়ে আসার মতো। করোনা রোগীর বাইরে অন্য রোগের চিকিৎসাও পাচ্ছে না মানুষ। বহু শিশু, গর্ভবতী মা বিপাকে পড়েছেন। আতঙ্কে আছেন চিকিৎসা না পেয়ে। এটা চিকিৎসকরা কোনোভাবেই করতে পারেন না। মানুষের জীবনের ব্যাপার। এখানে কোনো ছাড় নেই। যখন লিখছি (এইমাত্র রাত ১.২১ মি. ২৯ মার্চ ২০২০) বাংলাদেশ প্রতিদিনের জনৈক সাংবাদিক তার মা অনেক অসুস্থ। তাকে কোথায় নেবেন তা আমার কাছে জানতে চাইলেন। আমি বড় অসহায় হয়ে পড়লাম। আমার হাসপাতালে চিকিৎসা হবে না ভেবে। ঢাকাতেও চিকিৎসা কম মিলছে হাসপাতালগুলোতে। ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের সমস্যা আছে তার মায়ের আগে থেকেই জানতাম। কিছুদিন আগে প্রেসমেকারও বসাতে হয়েছিল। উত্তর দিতে ভাবনায় পড়ে গেলাম। শেষে বললাম বারডেমে নিয়ে যান। সেখানে পরিচিত এক চিকিৎসক আছেন এই জোরেই তাকে এ পরামর্শ দিলাম। এখন ঢাকা শহরেও অন্য রোগের চিকিৎসা মিলছে কম। সবখানে করোনাভাইরাসের ভয়। জ্বর, ঠান্ডা হলে তো কথাই নেই। এ পরিস্থিতিতে প্রথমে রোগীর ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীকে নির্দিষ্ট স্থানে পাঠাতে হবে। আর চিকিৎসক পিপিই পোশাক পরে রোগীর চিকিৎসা দেবেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে টেলি মেডিসিনের সাধারণ রোগের চিকিৎসা করা যেতে পারে। যা আমাদের দেশে চর্চা খুব কম। সরাসরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের পিপিই পরে নেয়া বাধ্যতামূলক। পিপিই প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, যেখানে দরকার সেখানে পিপিই ব্যবহার করতে হবে। জ্বর, সর্দি ও হাঁচি-কাশির রোগী দেখার সময় অবশ্যই পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন) পোশাক ব্যবহার করতে হবে। এর বিকল্প নেই। পর্যালোচনায় আমরা কী দেখতে পেলাম? (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুয়েপমেন্ট) পিপিই স্বল্পতা, চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার অপর্যাপ্ততা, কর্তব্য পালনকালে মর্যাদার অভাবে চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক এবং অনীহা তৈরি হয়েছে। যার কারণে দেশে চিকিৎসার এ সংকট। এ সংকট সহসাই দূর করা না গেলে দেশে স্বাস্থ্য বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করবে। আর তা সরকার সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি অতিদ্রম্নত ভাবনায় আনবেন বলেই আশা রাখি। রোগীদের সেবার অন্যতম মাধ্যম চিকিৎসক। তাদের সব সমস্যা সমাধান পূর্বক এ অচলাবস্থার সুরাহা না করা গেলে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিশ্চিত হয়ে পড়বে তাতে সন্দেহ নেই। আমরা এর দ্রম্নত সমাধান চাই মীর আব্দুল আলীম: সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক