যথাযথ পদক্ষেপ নিন

আটকে গেছে শিক্ষকদের বেতন

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। বলার অপেক্ষা রাখে না, এরই মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ পেরিয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ হাজার। এমতাবস্থায় বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, মারাও গেছে ৬ জন। আর করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা। এমতাবস্থায় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, করোনাভাইরাসের কারণে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আটকে গেছে। মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি সুবিধা ছাড় দেয়া হয়নি। আর স্বাভাবিকভাবেই বেতন-ভাতা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। যদিও সব প্রক্রিয়া শেষে বেতনের অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠানো হবে বলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা বলতে চাই, যত দ্রম্নত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার শিক্ষকদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। কেননা এ সময় বেতন-ভাতা না পেলে নানা ধরনের দুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়াটা অমূলক নয়। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণই বাঞ্ছনীয়। উলেস্নখ্য, সংশ্লিষ্টরা এমনটিও জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিজ বাসায় অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ে বেতন পেলেও এখনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সরকারি বেতনের অংশ (এমপিও) ছাড়করণ হয়নি। এ অর্থ ব্যাংকে জমা দেওয়া হলেও তা শিক্ষক-কর্মচারীদের হাতে পৌঁছাতে আরও অর্ধমাস সময় লেগে যাবে এমনটিও জানা গেছে। আর এ কারণে ক্ষুব্ধ সারা দেশের প্রায় সাড়ে চার লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে। আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দ্রম্নত বেতন-ভাতা দেওয়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর দিনরাত বাসায় অসহনীয় সময় পার করতে হচ্ছে তাদের। কেননা বেতন না পেয়ে শিক্ষকরা বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না। সরকার ব্যাংকের লোনের কিস্তি আদায় বন্ধ করার ঘোষণা দিলেও ব্যাংকগুলো নানা অজুহাত দেখাচ্ছে এমনটিও সামনে এসেছে। ফলে এই বিষয়টিও আমলে নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া শিক্ষকরা প্রায় ১৫ দিন ঘরে বসা। ঘরের বাজার শেষ। পকেট খালি, চারদিকে অন্ধকার হয়ে এলেও নিজের অভাব ও অভিযোগের কথা কাউকে বলতেও পারছেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি। আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রম্নত উদ্যোগী হতে হবে। বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি আমরা এ কথা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বই একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নানা ধরনের সংকটও সৃষ্টি হচ্ছে। আর বলার অপেক্ষা রাখে না, এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকরা সঠিক সময়ে বেতন না পেলে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে, তারা আরও বেশি বিপাকে পড়তে পারে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রম্নত সম্ভব বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।