শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

নতুনধারা
  ০৫ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম ও জনচলাচলের ওপর সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন দেশের শ্রমজীবী মানুষ। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনে তাদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। সরকার নিম্নআয়ের কর্মহীন মানুষকে বাঁচাতে আন্তরিক ও মনোযোগী। সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে যাদের জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের কাছে যাতে সঠিকভাবে পৌঁছে তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকেই। অতীতে আমরা লক্ষ্য করেছি ত্রাণ নিয়ে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কিছুতেই ওই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না।

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারিতে দেশে প্রায় অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দৈনিক উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি ধনী ও বিত্তবানদেরও দাঁড়াতে হবে। এ কথা সত্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশ প্রায় অচল হয়ে যাওয়ার কারণে দরিদ্র ও সীমিত আয়ের মানুষের এখন করুণদশা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাসও এসেছে। করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রতিঘাত মোকাবিলায় সরকারের বিশেষ প্রণোদনা ব্যবস্থা ও দরিদ্র মানুষের সাহায্যের ব্যাপারে সরকার বেশ আন্তরিত। সংকট সমাধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি মসুর ডাল ও একটি সাবান দেওয়া হচ্ছে। দেশের স্বল্পআয়ের মানুষের কোনো সঞ্চয় নেই। এখন কাজ বন্ধ, কীভাবে সংসার চালাবে তাদের এই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া এ রকম দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়া এখন সবার কর্তব্য হওয়া উচিত। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না- মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ঘরে খাবার না থাকায় ত্রাণের আশায় রাস্তায় বের হয়েছেন বসুন্ধরা শপিংমলের পেছনে থাকা বৃদ্ধা মমতা। তিনি বলেন, 'বাইরে বাইর অইচি পেটের দায়ে। খাবার-দাবার (সরকারের ত্রাণ) বেকেই (সবাই) বলে পায়, আমরা তো পাই না।' করোনায় রাস্তাঘাট, কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। অভিযোগ রয়েছে, সরকার ত্রাণ দিলেও অনেকেই তা পাচ্ছেন না। ত্রাণ না পেয়ে অনেকেই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। অনেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাতও পাতছেন।

আমরা মনে করি, সরকার যদি দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের খাবার বিতরণ নিশ্চিত করতে পারে- তা হলে গরিব মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা না থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারেও সরকারের করণীয় রয়েছে। দেশের কর্মহীন হতদরিদ্ররা যদি খাদ্য না পায় তা হলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেবে-এ কথা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্মরণে রাখতে হবে।

এও মনে রাখতে হবে, একদিকে মানুষ বেঁচে থাকার জন্য করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, অন্যদিকে তারা যদি খাবার না পায় তা হলে এর চেয়ে দুঃখ ও হতাশাজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। সুতরাং সরকারের কার্যকর ও স্বচ্ছ উদ্যোগই কেবল পারে বিত্তহীন শ্রমজীবী মানুষকে এই দুর্যোগে পরিত্রাণ দিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95255 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1