১০ টাকা কেজির চাল সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধে ঘরবন্দি শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় খোলা বাজারে (ওএমএস) ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। তথ্য মতে জানা গেছে, রোববার থেকে ঢাকার মিরপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিয়ালবাড়ীর রূপনগর ঝিলপাড় বস্তি এবং মহাখালীর সাততলা বস্তি এলাকায় এই বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হবে। উলেস্নখ্য, শনিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে এই চাল কেনা যাবে। একজন ভোক্তা সপ্তাহে একবার পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এছাড়া রোববার থেকে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরুর পর তা উপজেলাপর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হবে বলেও জানা গেছে। . বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। সারা বিশ্বই কার্যত থমকে গেছে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ পেরিয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ হাজার। এমতাবস্থায় বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, মারা গেছে ৯ জন। আর করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা। এ অবস্থায় ঘরবন্দি শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টরা এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন এমনটি কাম্য। কেননা যখন শ্রমজীবী মানুষ ঘরবন্দি- আর এর ফলে কতটা বিপর্যস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ বাইরে যেতে না পারলে কতটা দুর্ভোগ নেমে আসতে পারে তা অবর্ণনীয়। ফলে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। উলেস্নখ্য, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রির কার্যক্রম ঢাকা জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় বা খাদ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা রেশনিং ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া এটাও বলা দরকার, শনিবার থেকে ৯৬টি কেন্দ্রে ওএমএসে ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি শুরু হয়েছে। সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আটা বিক্রি কার্যক্রম চলবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ঢাকা মহানগরে ৭৩টি বস্তি আছে। এসব বস্তিতে ৩৯ হাজার ১৮০টি পরিবারে প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস। ফলে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না- বর্তমান পরিস্থিতিতে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির এই উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা কতটা তা বর্তমান পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিচ্ছে। সারা বিশ্ব দিশাহারা হয়ে পড়েছে। আর এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প থাকতে পারে না। আমলে নেওয়া দরকার, বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ এবং করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা অত্যন্ত জরুরি। আর এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণসাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, যেকোনো ধরনের অনিয়ম বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধে ঘরবন্দি শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।